পাঁচ বছরের নীচে শিশুদের জন্য ফাইজারের ভ্যাকসিন, আসব আসব করেও আসছে না। না, শুধু আসছে না বললে হবে না আর, কবে আসবে তাও এখন অন্ধকারে। আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্টেশন বা এফডিএ এই অজানা সময়ের জন্য নির্ধারিত পজ-টি টিপে দিয়েছে। ছোট ছোট বাচ্চাদের বাবামায়েরা তো এই খবরে মুষড়ে পড়বেনই।
কী ঘটনা ঘটছে?
ফাইজার-এনবায়োটকের বাচ্চাদের জন্য দু'ডোজের ভ্যাকসিন। অনেকেই মনে করছিলেন ইউএস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্টেশন বা এফডিএ এতে সিলমোহর দিয়ে দেবে। গত ১১ ফেব্রুয়ারি জানিয়ে দিয়েছে, এই সংক্রান্ত বৈঠক স্থগিত। কবে হবে বৈঠকটি তাও বলা হয়নি। এতে অনেকেই অবাক হয়ে গিয়েছেন। এফডিএ জানিয়ে দিয়েছে, ফাইজারের ভ্যাকসিনের তৃতীয় ডোজ নিয়ে তথ্য প্রয়োজন তাদের। তা না পাওয়া পর্যন্ত এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না।
কিন্তু কেন?
ফাইজারের এই ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ, বড়দের তুলনায় এক একটি ডোজ দশ ভাগের এক ভাগ। ট্রায়ালে ফল তার ভাল ছিল না। গত বছর ফাইজার জানিয়েছিল, এই দুটি ডোজ দুই থেকে চার বছরের বাচ্চাদের মধ্যে যথেষ্ট পরিমাণ অ্যান্টিবডি তৈরি করতে পারছে না। যদিও আশ্চর্যজনক ভাবে সেটা হচ্ছে ছ' থেকে ২৩ মাসের বাচ্চাদের মধ্যে। ফলে, দুই থেকে চার বছরের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এখন প্রয়োজন তৃতীয় একটি জোজ। সেই ট্রায়াল তারা চালাচ্ছেও। এফডিএ জানিয়েছে, আগের ট্রায়াল থেকে উঠে আসা যে ডেটা, তা তারা দেখেছে। স্পষ্ট হয়েছে, তৃতীয় ডোজের প্রয়োজন। সেই ডোজের ট্রায়ালের তথ্য চাই। মানে, তাদের কথা থেকে মোটামুটি স্পষ্ট, তৃতীয়টিকে পোক্ত ভাবে না বোঝা পর্যন্ত বর্তমানের দুটিকে তারা গ্রিন সিগনাল দেবে না। তিনটিকে এক সঙ্গে ছাড়পত্র দিতে চাইছে এফডিএ, বলছেন অনেকেই।
আরও পড়ুন ছাড়পত্র পেল ১২ ঊর্ধ্বদের ভ্যাকসিন
বাবা-মায়েরা কী চাইছেন?
দুই ভ্যাকসিনের সিলমোহর সংক্রান্ত বৈঠকটি পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তে অনেকেই বিরক্ত, বিস্মিত। অনেকেই বলছেন, তিন নম্বর জোজটি যখন আসবে আসুক, এখন দুটিই দেওয়া হোক না। জানুয়ারিতে কাইজার ফ্যামিলি ফাউন্ডেশনের সমীক্ষা রিপোর্টও বলেছে বড় অংশের অভিভাবক এটা চাইছেন। ফেব্রুয়ারির একেরারে শুরুতে তাদের রিপোর্টে নজর রাখলে দেখা যাবে, সেই সময় পাঁচ বছরের কম বয়সি বাচ্চাদের বাবামায়েদের দশ জনের মধ্যে তিন জনই চাইছেন, যে ভ্যাকসিন বাজারে আছে, তাই দেওয়া হোক। জুলাইয়ে এই সংখ্যাটা কম ছিল তুলনায়। তখন পাঁচ জনের এক জন অভিভাবক এটা চাইছিলেন। ফলে বোঝা যাচ্ছে, ভ্যাকসিনের জন্য অভিভাবকরা অধৈর্য হয়ে উঠেছেন।
আরও পড়ুন কেন দেশের কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে আশাবাদী কেন্দ্র?
কিছু অভিভাবক বলছেন, এবং অবাকও হচ্ছেন, দুই ডোজের এই ভ্যাকসিন ছয় মাস থেকে দুই বছরের বাচ্চাদের মধ্যে যদি ভাল মাত্রায় অ্যান্টিবডি তৈরি করে থাকে, তা হলে তাদের দেওয়ার জন্য এফডিএ ছাড়পত্র কেন দিচ্ছে না? উত্তর নেই প্রশ্নের। করোনার প্রকোপ কমেছে, এটাই একমাত্র ভরসার।