Advertisment

Explained: কোনও সিনেমা করমুক্ত হলে কী সুবিধা হয়

সিনেমা করমুক্ত হতে গেলে কী যোগ্যতা দরকার?

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Tax free movie

সাধারণের থেকে করমুক্ত সিনেমায় টিকিটের দাম কতটা কম হয়?

'কাশ্মীর ফাইলস'। বিবেকরঞ্জন অগ্নিহোত্রী পরিচালিত এই সিনেমা নিয়ে গোটা দেশে ব্যাপক হইচই। হলে নাকি ভিড় উপচে পড়ছে। প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত প্রশংসায় পঞ্চমুখ। বিজেপিশাসিত হরিয়ানা, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, গোয়া, কর্নাটক, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড সরকার তো এই সিনেমার কর পর্যন্ত মকুব করে দিয়েছে। উপত্যকায় সশস্ত্র জঙ্গিদের উপদ্রব শুরুর পর্যায়ে পণ্ডিতদের কাশ্মীর ত্যাগ নিয়ে এই সিনেমা। ১১ মার্চ সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। বিভিন্ন রাজ্য করমুক্ত করে দেওয়ায় বড় সুবিধা পেয়েছেন এই সিনেমার সম্প্রচার কর্তারা। করমুক্ত হওয়ায় টিকিটের দাম কমেছে। আরও বেশিসংখ্যক মানুষ এই সিনেমা দেখতে পাচ্ছেন।

Advertisment

সিনেমা করমুক্ত হতে গেলে কী যোগ্যতা দরকার?

চলতি মাসের গোড়াতেই সবিতা রাজ হিরেমত প্রযোজিত, নাগরাজ মঞ্জুলে নির্দেশিত, অমিতাভ বচ্চন অভিনীত 'ঝুন্ড' সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। তাঁর এই 'গুরুত্বপূর্ণ' সিনেমা বড় বার্তা দিয়েছে। এমনই দাবি প্রযোজকের। তারপরও তাঁর সিনেমা কেন করমুক্ত হল না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন প্রযোজক। বাস্তবটা হল, সিনেমা করমুক্ত হবে কি না, তার নির্দিষ্ট কোনও মাপকাঠি নেই। কোনও সিনেমার ওপর ভিত্তি করে এই সিদ্ধান্তটা রাজ্য সরকার নেয়। ইস্যুভিত্তিক এবং সরকারি মূল্যায়নের ভিত্তিতেই চূড়ান্ত হয় কর ছাড়ের সিদ্ধান্ত। সাধারণ হিসেবে, সমাজে প্রাসঙ্গিকতা আছে, সমাজকে উদ্বুদ্ধ করে- এসব ক্ষেত্রেই রাজ্য সরকার সংশ্লিষ্ট সিনেমায় কর ছাড় দেয়। যাতে দর্শকসংখ্যা বাড়তে পারে।

সাধারণের থেকে করমুক্ত সিনেমায় টিকিটের দাম কতটা কম হয়?

২০১৭ সালে জিএসটি চালু হয়েছে। তার আগে রাজ্য সরকার সিনেমা থেকে বিনোদন কর নিত। রাজ্যভিত্তিতে করের পরিমাণ ছিল বিভিন্ন। মহারাষ্ট্র এবং উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে এই করের মূল্য ছিল বেশ বেশি। যখন কোনও সিনেমাকে করমুক্ত করা হত, বিনোদন কর নেওয়া হত না। টিকিটের দামও স্বাভাবিক ভাবেই কম হত। জিএসটি জমানায় সিনেমাপ্রতি কর ২৮ শতাংশ। এখানে আবার দুটো স্তর আছে। টিকিটে ১২ শতাংশ জিএসটি লাগু হলে দাম হলে ১০০ টাকার কম। আর, ১৮ শতাংশ লাগু হলে বেশি। টিকিট বিক্রি থেকে হওয়া আয়টা রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে ভাগাভাগি হয়ে যায়।

আরও পড়ুন Explained: কোভিডের হাহাকারে বাড়ছে বেকার, হিসেবের ওঠাপড়া জানেন কি?

বর্তমান সময়ে কোনও রাজ্য নির্দিষ্ট সিনেমাকে করমুক্ত ঘোষণা করলে কেবল রাজ্যের ভাগের জিএসটি মুক্ত হয়। কেন্দ্রের জিএসটি কিন্তু লাগুই থাকে। টিকিটের দামে ৬ না ৯, কত শতাংশ ছাড় দেওয়া হচ্ছে, সেটাও এক্ষেত্রে একটা বড় ব্যাপার। চিত্রনির্মাতারা সবসময়ই চান, তাঁদের সিনেমাকে করমুক্ত করা হোক। যাতে দর্শক বেশি হয়। সম্প্রতি, মহারাষ্ট্রে বিজেপি বিধায়করা 'কাশ্মীর ফাইলস'-কে করমুক্ত করার দাবি রাজ্য মহারাষ্ট্র সরকারের কাছে জানিয়েছিলেন। জবাবে মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার জানান, কেন্দ্র যদি ওই সিনেমাকে করমুক্ত করে, তবে তা গোটা দেশেই লাগু হবে। না-হলে, কেবলমাত্র সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারই করের ভাগ থেকে বঞ্চিত হবে।

দেশে আর কোন সিনেমা করমুক্ত হয়েছে?

এখনও পর্যন্ত সর্বজন প্রশংসিত এবং উল্লেখযোগ্য সিনেমা যেমন ১৯৮২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত 'গান্ধী'কে করমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। ২০০৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত 'তারে জমিন পর' আবার একটি রোগের বিষয়কে তুলে ধরেছে। সেই ছবিও করমুক্ত হয়েছিল। ২০১৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ' মেরি কম' আবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বক্সার মেরি কমের জীবনকাহিনি তুলে ধরেছে। ওই বছরই মুক্তি পেয়েছিল 'মর্দানি'। যা নারীপাচারের বিরুদ্ধে এক মহিলা পুলিশকর্মীর লড়াইয়ের কাহিনি নিয়ে তৈরি। এই সব ছবিও করমুক্ত হয়েছিল।

আরও পড়ুন Explained: কোন ৫ কারণে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার ভারত সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ

পাশাপাশি, ২০১৬ সালে দুটো সামাজিক ক্ষেত্রে অতি প্রাসঙ্গিক সিনেমা, 'দঙ্গল' এবং 'নীরজা'ও বিভিন্ন রাজ্যে করমুক্ত হয়েছিল। এর মধ্যে দঙ্গল সিনেমা হরিয়ানা থেকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে উঠে আসা দুই কুস্তিগীর বোনের জীবনকাহিনির ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। আর, 'নীরজা' ১৯৮৬ সালে বিমান অপহরণ-কাণ্ডে অপহরণকারীদের গুলিতে নিহত বিমানসেবিকা নীরজা ভানোতের জীবনের ওপর নির্মিত। এছাড়াও ২০১৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত 'টয়লেট এক প্রেম কথা'ও করমুক্ত হয়েছিল। এই সিনেমা শৌচাগারের প্রয়োজনীয়তার ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল। ২০২০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত 'ছপক' আবার অ্যাসিড আক্রান্তের বিচারের জন্য লড়াইকে পর্দায় তুলে ধরেছে।

The Kashmir Files Tax Free Film
Advertisment