কিয়েভে সঙ্কটের ওয়েভ। ইউক্রেনের উপর ঝাঁপ কাটতে পরে রাশিয়া, যে কোনও সময়ে। ফলে সে দেশের রাজধানী কিয়েভে ভারতীয় দূতাবাসেও তুমুল তৎপরতা। দূতাবাসের কপালে চিন্তার লম্বা ও চওড়া ভাঁজ। তারা নোটিশ জারি করে বলেছে, যে সব পড়ুয়ার সেখানে থাকা জরুরি নয়, তাঁরা সাময়িক ভাবে ইউক্রেন ছাড়তে পারেন। ভারতীয় নাগরিকদের জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ইউক্রেনে যেতে এবং ইউক্রেনের মধ্যে চলাচল করতে বারণ করা হয়েছে। এও বলা হয়েছে যে, ইউক্রেনে থাকা ভারতীয়রা যেন তাঁদের সম্পর্কে দূতাবাসকে জানিয়ে রাখেন। স্টেটাসটা কী, সেইটি যেন ঠিকমতো জানানো হয়।
কেন এই নির্দেশিকা জারি করল ভারতীয় দূতাবাস?
শুরুতেই বললাম, রাশিয়া কিয়েভে ঢুকে পড়তে পারে, এই আশঙ্কা ঘনিয়ে উঠেছে বলেই এমন নির্দেশিকা। যদিও মস্কো এই আশঙ্কাটি ডাহা অস্বীকার করেছে। তাদের সাফ কথা, এমন কোনও পরিকল্পনা নেই। যদিও রাশিয়ার ১ লক্ষ ৩০ হাজার সেনা ইউক্রেনের সীমান্তে মোতায়েন রয়েছে। আমেরিকা ইতিমধ্যেই রাশিয়াকে সতর্ক করে বলে রেখেছে, যদি এই ধরনের কিছু তারা করে, তবে পরিণতি ভয়ঙ্কর হবে।
ইউক্রেনে ভারতীয় কত?
২০২০ সালে কিয়েভের নিজেদের হিসেবে ১৮ হাজার ভারতীয় ছাত্র রয়েছেন সেখানে। রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতীয় দূতাবাসের গত মাসের হিসেব অনুযায়ী ইউক্রেনে ভারতীয়ের সংখ্যা ২০ হাজার। বেশির ভাগ ছাত্র। পড়েন মেডিকেল কলেজে। সেখানকার মেডিকেল কলেজে পড়াশুনো করাটা গত কয়েক দশকে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
ভারতীয় দূতাবাসের নির্দেশিকার তাৎপর্য কী?
এর মানেটা জলের মতো পরিষ্কার, যাঁদের ইউক্রেনে থাকাটা জরুরি নয়, তাঁরা যেন আপাতত সে দেশটিকে টাটা-বাই বাই করেন। বিদেশ বিভুঁইয়ে বিপদে পড়ার হাত থেকে তা হলে একশো শতাংশ বাঁচা যাবে। এর আরেকটি মানেও বেরিয়ে আসছে, সেইটি হল, কিয়েভ বিমানবন্দর এখনও চালু। দৈনন্দিন বিমান ওঠানামা করছে। সেই সুযোগটি নিয়ে পাততাড়ি এখনই গোটানো উচিত।
ইতিমধ্যেই উড়ানে কাটছাঁটের পর্বটি শুরু হয়ে গিয়েছে। রয়্যাল ডাচ এয়ারলাইন্স কেএলএম কিয়েভগামী সব উড়ান বাতিল করেছে। তারাই প্রথম উড়ান সংস্থা, যারা এই কাঁচিটি চালাল। এর পর লাইন দিয়ে আরও অনেকে এই পথে হাঁটতে পারে, ফলে দ্রুত যাঁরা যাওয়ার চলে যান, বলতে চেয়েছে দূতাবাসের নির্দেশিকা।
আরও পড়ুন শেয়ার বাজার থেকে কর বৃদ্ধির বিশাল আশা, কিন্তু আশঙ্কা এর পর কী হবে?
আসন্ন বিপদের জন্য কি ভারতীয় দূতাবাস তৈরি?
ভারতীয় দূতাবাস সেই পথেই এগচ্ছে। তথ্য সংগ্রহ করছে তারা। যে সব ভারতীয় ইউক্রেনে রয়েছেন, তাঁদের সম্পর্কে জানার কাজটি চলছে। সব ভারতীয়কে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে বলা হয়েছে দূতাবসের ওয়েবসাইটে। একটি গুগল ফর্ম এ জন্য তৈরি করা হয়েছে। সপ্তাহ দুই আগে। যদিও এটা বাধ্যতামূলক নয় একেবারেই। আসলে, দূতাবাসের কাছে কত জন ভারতীয় ইউক্রেনে রয়েছেন, তার পরিষ্কার হিসেব নেই। ফলে সবাই যদি ফর্মটি ফিল-আপ করে জমা দেন, তা হলে সুবিধা হবে। সাহায্যের হাতটা ঠিক মতো বাড়ানো দূতাবাসের পক্ষে সহজ হবে। কখন কী ঘটে যায়, যা পরিস্থিতি, যে রকম রাশিয়ার ফোঁস-ফোঁসানি, কিচ্ছু বলা যাচ্ছে না!