Advertisment

Explained: পোল্যান্ডে মার্কিন সেনা-অস্ত্র সাহায্য কেন, রুশ-ইউক্রেন সংঘাতে এর তাৎপর্যটা কী?

রাশিয়ার হামলার পরই, জার্মানিতে থাকা আমেরিকার সেন্য পাঠানো হয় পোল্যান্ড এবং রোমানিয়ায়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Why has the US deployed missile defence systems to Poland and its role in Ukraine-Russia war

পোল্যান্ডে মার্কিন সেনা-অস্ত্র সাহায্য কেন, রুশ-ইউক্রেন সংঘাতে এর তাৎপর্যটা কী?

পোল্যান্ডকে আরও সেনা ও অস্ত্র দিচ্ছে আমেরিকা। আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ঘোষণা করেছেন এ কথা। বৃহস্পতিবার তিনি বলেছেন, আরও ৪, ৭০০ সেনা এবং প্যাট্রিয়ট মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম তাঁরা দিচ্ছে পোল্যান্ডকে। না বোঝার কিছু নেই যে, ইউক্রেনের জন্যই এই দান। পোল্যান্ড হয়ে এসব পৌঁছে যাবে জেলেনেস্কির দেশে।

Advertisment

কেন? যাঁরা আন্তর্জাতিক বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, তাঁদের কাছে এই বিষয়টি হয়তো জলবৎ, কিন্তু সাধারণ পাঠকের জন্য বলতে হবে আমাদের, ব্যাখ্যা-সহ।

পোল্যান্ড, তার মানচিত্রের দিকে তাকালেই দেখা যাবে, ইউক্রেন রয়েছে এর দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে, পূর্বে রয়েছে বেলারুশ। পশ্চিমে রয়েছে জার্মানি। ফলে কৌশলগত দিক থেকে পোল্যান্ডের গুরুত্ব অপরিসীম। বিশেষ করে বেলারুশ এবং ইউক্রেন দুই পরস্পরবিরোধী প্রতিবেশীর সঙ্গে সীমান্ত থাকায়, তাদেরকে অস্ত্রসেনা ইত্যাদি পাঠানো দরকার, যা প্রথমত তাঁদের প্রয়োজন হতে পারে, অন্য দিকে যেহেতু পোল্যান্ড ইউক্রেনের বন্ধু, ফলে তাদের মাধ্যমে ইউক্রেনকেও অস্ত্র পাঠানো যায়। এখানে বলতে হবে পোল্যান্ড ইউক্রেনের যে-সে বন্ধু নয়, তারা যুদ্ধবিধ্বস্ত ওই দেশের অগুনতি জনকে আশ্রয় দিয়েছে। ইউক্রেন থেকে পোল্যান্ডে পালানোর ধূম পড়ে গিয়েছে।

এবার আসুন আমেরিকার পাঠানো মিসাইল সিস্টেমে একটু নজর দিই। বাইডেনের দেশ পোল্যাল্ডে দুটি প্যাট্রিয়ট মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম পাঠিয়েছে। প্যাট্রিয়ট ডিফেন্স সিস্টেম একটি তুখোড় ব্যাপার। এই মোবাইল এয়ার অ্যান্ড মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমটি আকাশপথে বিমান হামলা এবং মিসাইল হামলার সত্যানাশ করে দিতে পারে। এতে রয়েছে সি-ব্যান্ড ফেজড অ্যারে রাডার, যা ছুটে আসা মিসাইল বুঝে নিতে পারে। এবং এর অনেকটা দূর পর্যন্ত এর রেঞ্জ । যাকে বলা হয় লার্জ রেঞ্জ। ২০১৯ সালের আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অফ ডিফেন্সের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯৮২ সালে প্যাট্রিয়ট ইউএস ডিফেন্সে এসেছে। এবং ২০০৩ সালে অপারেশন ইরাকি ফ্রিডম-এ আমেরিকা এটিকে ব্যবহার করেছিল। আরব আমিরশাহি, কুয়েত, সৌদি আরবের মতো দেশ এই ডিফেন্স সিস্টেম কিনেছে মার্কিন মুলুক থেকে।

আরও পড়ুন Explained: আমেরিকার ‘না’ রুশ তেলে, আমাদের ভয়ে কাঁটা হওয়ার দিন শুরু, জানেন কী ভাবে?

কেন পোল্যান্ডে আমেরিকা নিজেদের পোক্ত করতে চাইছে?

সে অনেক আগের কথা। সরকারি ভাবে যুদ্ধ ঘোষণা না করেই সোভিয়েত ইউনিয়ন পোল্যান্ড হামলা করেছিল পূর্ব দিক থেকে, ১৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৩৯-এ। এর ঠিক ষোল দিন আগে জার্মানি পশ্চিম দিক থেকে পোল্যান্ডে ঢুকে পড়েছিল। এর ফলে পোল্যান্ডকে কেকের মতো কেটে দু'ভাগ করে নিয়েছিল সোভিয়েত ও জার্মানি। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে একটি গোপন চুক্তিও হয়েছিল। এখন ইউক্রেনে রুশ হামলার পর, পোল্যান্ডের ভিতরে ভয় ধরেছে যে, তাদের দেশও না পুতিনের গ্রাসে পড়ে যায়। কারণ, ইউক্রেনের পাশে থাকার জন্য তারা তো পুতিনের দু'চোখের বিষ এবং ওই যে ইতিহাসেও তো সোভিয়েত ঢুকেছিল তাদের ভিতর, শাসন করেছিল অনেক দিন। এখন পুতিন সেই সোভিয়েতের স্বপ্ন দেখলে পোল্যান্ডের অস্তিত্বও বিপন্ন। তাই আমেরিকাকে সন্ত্র-সেনা না পাঠালে চলবে কেন!

না, এটাই প্রথম নয়

নিউইয়র্ক টাইমসের খবর অনুযায়ী, রাশিয়ার হামলার পরই, জার্মানিতে থাকা আমেরিকার সেন্য পাঠানো হয় পোল্যান্ড এবং রোমানিয়ায়। ইউক্রেনে পৌঁছানোই ছিল তাদের লক্ষ্য। ইতিমধ্যেই স্পষ্ট হয়েছে যে, ন্যাটোয় থাকা নানা দেশ আলাদা আলাদা ভাবে সাহায্য করছে ইউক্রেনকে, কিন্তু তা যৌথ পদক্ষেপ হিসেবে দেখানো হচ্ছে না, কারণ যৌথ হামলা হলে যুদ্ধ বেড়ে যাবে, পুরো তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের চেহারায় পৌঁছতে তখন বেশি দেরি হবে না।

Russia-Ukraine Conflict US-Poland Relations
Advertisment