Advertisment

Explained: মার্চেই চাঁদিফাটা গরম, হাঁসফাঁস অবস্থার কারণ কী?

গরমের ঝোড়ো ব্যাটিং দেখার এখনও অনেক বাকি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Explained: Why is it so hot in March?

কেন উত্তর-পশ্চিম ভারতে মার্চ মাস এত গরম হয়ে উঠেছে?

শীত গিয়েছে কি যায়নি, গ্রীষ্মের ঘনঘটা শুরু। গায়ে একেবারে ছ্যাঁকা লেগে যাওয়ার জোগাড় এর মধ্যে। নয়া দিল্লির সফদরজঙ্গ এবং লোধি রোডে রবিবার পারদ পৌঁছয় ৩৮.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। স্বাভাবিকের চেয়ে যা সাত ডিগ্রি বেশি। উত্তর-পশ্চিম দিল্লির পিতমপুরায় তাপমাত্রায় পৌঁছেছিল ৩৯.৯ ডিগ্রিতে। এটাও একটা রেকর্ড বটে। আগেও যে এমন হয়নি, তা বলা যাবে না। ২০১৩-র মার্চে রাজধানী দেখেছিল ৪০-৪২ ডিগ্রি উষ্ণতা। কিন্তু বলতেই হবে যে, এবার প্রকৃতি একটু বেশিই অদ্ভুত। অসময়ে প্রবল বৃষ্টি, বন্যা দেখলাম আমরা, আবার এখন বৃষ্টিশূন্যতা, তীব্র গরম। রাজধানীর গ্রীষ্মের কথা শুধু নয়, গত সপ্তাহে জম্মু এবং উত্তরাখণ্ড চলেছে তাপপ্রবাহ। রাজস্থানে তাপপ্রবাহ চলছে সপ্তাহ ধরে। কেন উত্তর-পশ্চিম ভারতে মার্চ মাস এত গরম হয়ে উঠেছে? আসুন, নজর দেওয়া যাক সে দিকে।

Advertisment

কেন এত গরম?

মৌসম ভবন জানাচ্ছে, অ্যান্টি সাইক্লোন, যা কিনা রাজস্থানে তৈরি হয় মার্চের শেষের দিকে, এবার তা আগে ভাগে তৈরি হয়ে গিয়েছে। এবং পশ্চিমী ঝঞ্ঝা বা পশ্চিমী ঝামেলা সক্রিয় নয় এখন। পশ্চিমী ঝঞ্ঝা না থাকায় এবং অ্যান্টি সাইক্লোনে ভর করে গরম হাওয়া থর মরুভূমি পাকিস্তান থেকে ঢুকে আসছে দিল্লি এবং উত্তর-পশ্চিম ভারতে। তাতেই তাপমাত্রা বাড়ছে। মৌসম ভবনের অধিকর্তা মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র বলেছেন, 'গত কয়েক দিন ধরে দক্ষিণ পাকিস্তান থেকে আসছে গরম হাওয়া। সাধারণত পশ্চিমী ঝঞ্ঝা এই গরম হাওয়া রুখে দেয়। কিন্তু এ বার তা আর হচ্ছে না। ফলে বৃষ্টি হচ্ছে না। যার জেরে জম্মু, রাজস্থান, এবং আশপাশের এলাকাগুলিতে তাপমাত্রা বেড়েছে।'
পশ্চিমী ঝঞ্ঝা না থাকায় বৃষ্টিপাত কতটা কম, সে দিকে নজর দেওয়া যেতে পারে। আবহাওয়া দফতরের হিসেবে সারা ভারতে মার্চে বৃষ্টিপাতের ঘাটতি (২১ মার্চ পর্যন্ত) ৮৩ শতাংশ। দেখা যেতে পারে, ভারতের কোন অঞ্চলে মার্চে বৃষ্টিপাতের ঘাটতি কতটা।

  • উত্তর-দক্ষিণ ভারত: ৮৬ শতাংশ
  • পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব ভারত: ৯২ শতাংশ
  • মধ্য ভারত: ৮৪ শতাংশ
  • দক্ষিণ ভারত: ৪০ শতাংশ

এমনিতে তাপমাত্রার মোটামুটি শীর্ষে পৌঁছানোর সময় হল এপ্রিল থেকে মে মাস। তখন ভয়ঙ্কর গরম পড়ে। গা পুড়ে যায় একেবারে। তাপপ্রবাহের রমরমা দেখা যায়। মৌসম ভবন তাপপ্রবাহের যে সব অঞ্চল চিহ্নিত করেছে, এই সুযোগে সেগুলি বলে নেওয়া যেতে পারে-- রাজস্থান, পঞ্জাব, হরিয়ানা, চণ্ডীগড়, দিল্লি, পশ্চিম মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, ছত্তীশগড়, ওড়িশা, মহারাষ্ট্রের বিদর্ভ এবং পশ্চিমবঙ্গের গাঙ্গেয় উপকূলভাগ, অন্ধ্রের উপকূলবর্তী এলাকা এবং তেলেঙ্গানা।

আরও পড়ুন Explained: শব্দের চেয়েও বেশি গতিতে ‘হামলা’ রাশিয়ার, কী ভাবে জানেন?

আসুন এবার গরম বাড়ার আর একটি কারণে নজর দেওয়া যাক। সেটা কী? সেটা হল-- আন্টার্কটিকার গলে যাওয়ার মতো অবস্থা।

আন্টার্কটিকায় তাপপ্রবাহ

আন্টার্কটিকার নাজেহাল অবস্থা। মার্চের ১৮ তারিখ পূর্ব আন্টার্কটিকায় তাপমাত্রা ছিল ঐতিহাসিক। স্বাভাবিকের চেয়ে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেড়েছিল যা। সাধারণত এই সময়ে সেখানে তাপমাত্রা থাকে মাইনাস ৪৫ থেকে মাইনাস ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তা পৌঁছয়-- মাইনাস ১৮ থেকে মাইনাস ১২ ডিগ্রিতে। গত সপ্তাহে আন্টার্কটিকার কনকর্ডিয়ায় তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। এর কারণটা হল পশ্চিম দিক থেকে আসা গরম হাওয়া। যা দক্ষিণ সাগরের শীতল হাওয়াকে সরিয়ে ঢুকে পড়েছে আন্টার্কটিকার ভিতরে।

অবশ্য, ভারতের উত্তর-পশ্চিম অংশের গরম দ্রুত কমবে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। না, এতে স্বস্তির কোনও ব্যাপার নেই, ছিঁটেফোঁটাও।গরমের ঝোড়ো ব্যাটিং দেখার এখনও অনেক বাকি।

Climate Change Temperature Rise
Advertisment