সারা দেশের জুন মাসের বৃষ্টিপাত ১৫২.৩ মিলিমিটার, আর স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বলা হয়েছিল, ১৬৫.৩ মিলিমিটার (১৯৭১ থেকে ২০২০ পর্যন্ত তথ্য নির্ভর গড়)। ঘাটতি ৮ শতাংশ। কিন্তু বর্ষা জুলাইতে নিজরূপ ধারণ করছে। আশা করা যাচ্ছে যে, দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভাল পরিমাণে বৃষ্টি হবে।
সাধারণ ভাবে জুনের বৃষ্টি
বর্ষার ১৫ শতাংশের মতো বৃষ্টি হয় জুন মাসে। দক্ষিণপশ্চিম বর্ষার প্রথম মাস এটা, ফলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণে ভাল মাত্রায় কম-বেশি হতে দেখা যায়। কারণ, এ সময়ে বর্ষা দেশের নানা অংশে ধীরে ধীরে ছাড়াতে থাকে। সবখানে আশানুরূপ বৃষ্টি হয় না। আবার কোথাও কোথাও বেশিও হয়ে থাকে বৃষ্টিপাত। জুন এবং সেপ্টেম্বর-- বর্ষার প্রথম মাস এবং শেষ মাস, এই দুইটিতেই বর্ষার এই ভ্যারিয়েশন চোখে পড়ে। বললেন কেরলের ইনস্টিটিউট অফ ক্লাইমেট চেঞ্জ স্টাজিসের ডিরেক্টর এবং সিনিয়র ফোরকাস্টার ড. ডি শিবানন্দ পাই। জানা যাচ্ছে, গত ২০ বছরের মধ্যে ১১ বছরই জুন মাসে বৃষ্টিপাতের ঘাটতি দেখা গিয়েছে। শেষ এটা ঘটেছিল ২০১৯-এ।
এই জুনে কী হল
অঞ্চল ভিত্তিক হিসেবে মধ্য ভারতে বৃষ্টিপাতের ঘাটতি ছিল ৩০ শতাংশ, বৃষ্টি হয়েছে ১১৮.৯ মিলিমিটার। দক্ষিণ ভারতে বৃষ্টিপাতের ঘাটতি ছিল ১৪ শতাংশ, বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ১৩৯ মিলিমিটার। পূর্ব এবং উত্তরপূর্ব ভারতে ২২ শতাংশ অতিরিক্ত বৃষ্টি হয়েছে। মূলত এটা হয়েছে জুনের ১৬ থেকে ২২ তারিখ পর্যন্ত। যদিও বর্ষা এবার আগে এসেছে। মে-র ২৯ তারিখ। তিন দিন আগে এসেছে সে। আরব সাগর থেকে আসা বর্ষার শাখাটি দুর্বল ছিল। ফলে ঠিক মতো বর্ষা হয়নি মে-র ৩১ থেকে জুনের ৯ তারিখ পর্যন্ত। বৃষ্টিপাতের অভাব দেখা গিয়েছে কেরল, কর্নাটক, এমনকি মহারাষ্ট্রে, যেখানে বর্ষার প্রবেশ ঘটেছে ১০ জুন। বঙ্গোপসাগরের শাখাটি অন্য দিকে জুনের প্রথম পর্যন্ত উত্তরপূর্ব পর্যন্ত বিস্তার লাভ করেছে। ভাল বর্ষিয়েছে সেটি।
আরও পড়ুন Explained: সিকিমে রোগ তৈরি করছে, কী এই নাইরোবি মাছি?
জুলাইতে কী আশা
জুলাইতে উত্তরপশ্চিম বর্ষার ৩৫ শতাংশ হওয়ার কথা। জুনে বড় ঘাটতি মাথায়, ফলে জুলাইয়ে বৃষ্টিকে তার অভাব পূরণ করতে হবে। জুনের ৩০ তারিখ থেকে দৈনিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। জুলাইয়ের ৫ তারিখে গিয়ে বৃষ্টিপাতের ঘাটতি দুই শতাংশে এসে পৌঁছেছে। সারা ভারতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২০০.৮ শতাংশ হয়েছে এর ফলে। ৩০ জুন থেকে ৫ জুলাইয়ের মধ্যে বৃষ্টিপাতের ঘাটতি থাকা রাজ্যগুলির সংখ্যা ১৮ থেকে কমে ৯-এ পৌঁছেছে। মৌসম ভবনের তথ্য অনুযায়ী, এই পর্যায়ে উত্তরপূর্ব অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গ, বিহার এবং ঝাড়খণ্ড ছাড়া সারা দেশে ভাল পরিমাণে বৃষ্টি হবে। অন্তত এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিন বর্ষা চলবে।