দিনটা ছিল ১৯৭৪ সালের ১৮ মে। এই বিশেষ দিনে ভারত বিশ্বকে বুঝিয়ে দিয়েছিল, সে অস্ত্রশক্তিতে নতুন উচ্চতায় প্রবেশ করেছে। বিশ্বের পরমাণু অস্ত্রধর দেশগুলোর অন্যতম হয়ে উঠেছে। যে পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে গোটা বিশ্বের কাছে ভারত এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছিল, তার নাম অপারেশন স্মাইলিং বুদ্ধ। তবে, ভারতের এই অগ্রগতিতে শঙ্কিত হয়ে পড়েছিল অনেক দেশই। তাদের অন্যতম রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স, চিন। যারা পি-৫ নামেও পরিচিত। এই পাঁচ দেশকে আশ্বস্ত করতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী পোখরানের সেই পরমাণু পরীক্ষাকে 'শান্তিপূর্ণ পরমাণু বিস্ফোরণ' বলে অভিহিত করেছিলেন।
কোন পরিস্থিতিতে পরমাণু পরীক্ষা?
১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি মানেই কিন্তু, বৃহৎ আকারের যুদ্ধ শুরু হওয়ার সম্ভাবনার সমাপ্তি ঘটেনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউএসএসআর বা সোভিয়েত রাশিয়া সেই সময় উভয়ের মতাদর্শগত এবং অর্থনৈতিক শ্রেষ্ঠত্বের জন্য পরস্পরের সঙ্গে বিভিন্ন দেশে ছায়াযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছিল। যাকে বিশ্বের ইতিহাস ঠান্ডা যুদ্ধ বলে।
জাপানে বিস্ফোরণ
১৯৪৫ সালের আগস্টে যুদ্ধের শেষের দিকে জাপানের শহর হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে আমেরিকা দুটি পরমাণু বোমা ফেলেছিল। আর, ১৯৪৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন তার নিজস্ব পরমাণু পরীক্ষা চালিয়েছিল। তখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে ব্যাপক ধ্বংসাত্মক প্রতিরোধের জন্য নির্দিষ্ট নিয়মের প্রয়োজন আছে।
পি-৫
ন্যূনতম শান্তি বজায় রাখার জন্য ১৯৬৮ সালে এক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। যার নাম পরমাণু নিয়ন্ত্রণ চুক্তি বা এনপিটি। এই চুক্তির অধীনে পরমাণু অস্ত্রে বলীয়ান রাষ্ট্রগুলোকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তালিকায় সেই সব দেশ ছিল, যারা ১৯৬৭ সালের ১ জানুয়ারির আগে পরমাণু অস্ত্র তৈরি বা পারমাণু অস্ত্রবাহী যন্ত্রপাতি তৈরি এবং বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল। এই দেশগুলোই পি-৫ তালিকাভুক্ত হয়।
আরও পড়ুন- দশক-পুরোনো মামলা, জাল্লিকাট্টুর পক্ষেই সায় আদালতের, কিন্তু কেন?
এই চুক্তির স্বাক্ষরকারীরা পরমাণু অস্ত্র বা পরমাণু অস্ত্র প্রযুক্তি অন্য কোনো রাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর না-করার ব্যাপারে সম্মত হয়েছিল। আর, পরমাণু শক্তিহীন রাষ্ট্রগুলো সম্মত হয়েছিল যে তারা পরমাণু অস্ত্র গ্রহণ করবে না, বিকাশ করবে না এবং অর্জন করবে।