ঠিক ১০ বছর আগে ২০১৩ সালের উত্তরাখণ্ডের বিপর্যয়ের সময় থেকেই ভারত প্রতিবছর ভারীবর্ষণ দেখে চলেছে। একবছরও বাদ নেই, যখন দেশের কোনও না-কোনও রাজ্য ভারী বর্ষণের সাক্ষী হয়নি। আর, এই ভারী বর্ষণের জেরে ব্যাপকহারে বন্যা, ধ্বংস, জীবনহানির ঘটনার সাক্ষী হয়েছে দেশ। কাশ্মীর, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, পুণে, মুম্বই, গুরগাঁও, কেরল, অসম, বিহার-সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্য এই পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, এবছরও বর্ষার সেই তাণ্ডব থেকে রেহাই পাবে না। আর অল্পসময়ের মধ্যে ব্যাপকহারে বৃষ্টির জেরে ভয়াবহ দুর্বিপাক নেমে আসতে পারে জনজীবনে।
বিজ্ঞানীদের সেই আশঙ্কা কিছুটা হলেও সত্যি করে উত্তর ভারতের সম্প্রতি ব্যাপকহারে বন্যা দেখা দিয়েছে। যদিও গত ২০-২৫ বছরে উত্তর ভারতের কিছু জায়গায় ব্যাপকহারে বৃষ্টিপাত হয়েই থাকে। শুধু তাই নয়, বিশ্বে চরম দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়াও নতুন কিছু নয়। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে চরম দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া রীতিমতো বিশেষজ্ঞদের চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে। তবে, সব জায়গায় যে বন্যা প্রবল বৃষ্টির কারণেই হয়, তেমনটা কিন্ত নয়। বেঙ্গালুরু শহরে প্রতিবছর ব্যাপকহারে বন্যা হয়। সেটা কিন্তু প্রবল বৃষ্টির কারণে নয়। অপরিকল্পিত নির্মাণের জেরে নিকাশির হাল অত্যন্ত খারাপ। তার জেরেই প্রতিবছর বন্যায় ভাসছে দক্ষিণের এই নগরী।
আরও পড়ুন- হোয়াটসঅ্যাপ বা ওই ধরনের পরিষেবাগুলোর নিয়ন্ত্রণ দরকার, বারবার ট্রাই কেন এসব বলছে?
আবার উলটোটাও ঘটছে বিভিন্ন জায়গায়। শ্রীনগরই যেমন, ২০১৪ সালে বন্যায় ভেসেছে। সেবছর সেপ্টেম্বরে মাত্র চার দিনের ব্যাপক বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছিল জম্মু-কাশ্মীরের রাজধানী। প্রতিবছর গোটা মাসে যতটা বৃষ্টি হয়, তার প্রায় চারগুণ বেশি বৃষ্টি হয়েছিল ২০১৪ সালের ওই চার দিনে। কেরলেও যেমন অতিবৃষ্টিটা রীতিমতো পরিচিত একটা ঘটনা। ২০১৮ সালে এই অতিবৃষ্টির জেরে হওয়া বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল কেরল। কারণ হিসেবে যত্রতত্র পর্যটনের পরিকাঠামো গড়ে তোলাকে অনেকে দায়ী করেছেন। মুম্বইয়ে আবার নিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। নিকাশির জল যাওয়ার রাস্তা বিভিন্ন জায়গায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তার ফলে বিভিন্নসময় দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী জলবন্দি হয়ে পড়ে।