অতীতের দিকে তাকালে বোঝা যায় যে সামরিক দুনিয়ায় ঠিক কতটা বিপ্লব ঘটেছে। এর পিছনে আন্তর্জাতিক মানের প্রযুক্তিবিদ্যা। যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমেছে হাতাহাতির লড়াইয়ের সুযোগ। কিন্তু, মধ্যপ্রাচ্যে সাম্প্রতিকতম ইজরায়েল-হামাসের যুদ্ধে মিলল অন্য শিক্ষা। ভূগর্ভস্থ টানেলের শনাক্তকরণ, ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর বিরুদ্ধে হামাসের কৌশল দেখাল, ডিজিটাল যুগেও সামরিক বাহিনীকে অ্যানালগ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
উচ্চমানের সামরিক প্রযুক্তির অভাব
উচ্চ প্রযুক্তির চাহিদার কারণ, মেশিনের মাধ্যমে মানুষের ত্রুটির দূরীকরণ। আরও দক্ষতাকে কাজে লাগানো। আজকের যুগের মেশিনগুলো আধুনিক। কিন্তু, এই সময়ও ডিভাইস চালু, মেশিন নিয়ন্ত্রণ করতে অনেক পরীক্ষার দরকার হয়। বাজেট যত বড়, তত আধুনিক যন্ত্র তথা অস্ত্রের অধিকারী হয় সামরিক বাহিনী। তার মধ্যেই সুপার-কমপিউটিং, এআই, মেশিন লার্নিং এবং আধুনিক নেটওয়ার্কিং প্রযুক্তি সামরিক ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটিয়েছে।
অস্ত্রের সুরক্ষায় নজর
প্রতিকূল আবহাওয়া, কম্পন বা বিস্ফোরণ থেকে রক্ষা, জল থেকে অস্ত্রগুলোকে বাঁচানোর দিকে বিশেষ নজর দিতে হয়। এটি ব্যয়বহুল। নেটওয়ার্ক, কমপিউটার এবং ভারী সিস্টেমের জন্য সফটওয়্যার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সবটা কিন্তু, সশস্ত্র বাহিনীর আওতায় থাকে না। বহিরাগত সংস্থা, অরিজিনাল ইকুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার (OEMs)-এর ওপর সামরিক বাহিনীকে অস্ত্রের জন্য নির্ভর করতে হয়। বিশেষ করে যুদ্ধের জন্য যে বাহিনী তৈরি হয়, তাদের অস্ত্রগুলো কোনওভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে সারানোর কৌশল তাদের জানা থাকে না। তাদের কাছে সারানোর সরঞ্জামও থাকে না।
প্যান্টারের পরামর্শ
২০১৮-র এপ্রিলে 'ইউএস নেভাল প্রসিডিংস'-এ, জোনাথন প্যান্টার পরামর্শ দিয়েছিলেন যে প্রযুক্তি সবসময় সাহায্য করবে না। মার্কিন নৌবাহিনীকে 'অ্যানালগ' বা হাতাহাতি যুদ্ধের জন্যও প্রস্তুত থাকতে হবে। কিন্তু, প্রযুক্তির ওপর নির্ভরতার জন্য মার্কিন বাহিনীর মধ্যে সেই প্রস্তুতির অভাব দেখা দিতে পারে বলেও তিনি সতর্ক করেছিলেন। এই সতর্কবাণী অবশ্য নতুন কিছু নয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশই এমন সতর্কবাণীর কথা মাথায় রাখছে দীর্ঘদিন ধরেই।
আরও পড়ুন- বাংলায় কবে CAA চালু হবে, ধর্মতলার সভা থেকে দিনক্ষণ জানিয়ে দিলেন অমিত শাহ
সামরিক বাহিনীতে প্রযুক্তির ব্যবহার
তার আগে অবশ্য, ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে ভারতীয় নৌবাহিনী তার সমস্ত অফিসারদের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু করেছিল। সেই সিদ্ধান্ত কতটা সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল, তার পরীক্ষা এখনও হয়নি। কিন্তু, তারপরও নয়াদিল্লির উচ্চপ্রযুক্তির সরঞ্জাম বা ব্যবস্থাপনা কেনা থেমে থাকেনি। উলটে, যুদ্ধে এগিয়ে যাওয়া বাহিনীর মধ্যে প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনকী, বৈদ্যুতিন ব্যবস্থা বা ইলেকট্রনিক্সের ব্যবহার সেখানে বিরাট জায়গা করে নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ইজরায়েল এবং হামাসের লডা়ই বিভিন্ন দেশের সামরিক বাহিনীকে এক বিরাট শিক্ষা দিয়ে গেল।