আইনশৃঙ্খলা: প্রবল প্রতিবাদ এসেছে মানবাধিকার-কর্মীদের থেকে, কিন্তু তাতে কর্ণপাত না করেই মাফিয়া এবং দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে পুলিশি এনকাউন্টার চলেছে উত্তর প্রদেশে। যা হয়তো আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বড় প্রদক্ষেপ বলে মনে করেছে সে রাজ্যের একাংশ। নির্বাচনী প্রচারে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও খুনের হার হ্রাসের তথ্য তুলে ধরেছেন। অপহরণ, ধর্ষণের মতো অপরাধও চোখে পড়ার মতো কমেছে গত পাঁচ বছরে, এমনটা তাঁরা বলেছেন সভা থেকে সভায়। ফলাফল প্রমাণ করছে মানুষ তা মেনে নিয়েছে।
কল্যাণমূলক প্রকল্প: কেন্দ্র ও রাজ্যের বিনামূল্যে রেশন প্রকল্প খেলা ঘুরিয়ে দিয়েছে অনেকটা, মনে করছেন অনেকে। কারণ, মহামারি বহু মানুষকে সর্বস্বান্ত করে দিয়েছিল, তাঁদের মুখে এই রেশন প্রকল্প তুলে দিতে পেরেছে অন্ন। রেশন ছাড়াও অন্য আরও কয়েকটি সরকারি প্রকল্পও ভাল সাড়া পেয়েছে উত্তরপ্রদেশে, তার মধ্যে একটি-- পিএম কিসান নিধি। যেখানে কৃষকদের জন্য অর্থ সরাসরি পড়েছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। যা সরকার-বিরোধী হাওয়ার গতি কমিয়েছে বলেই মত বিশ্লেষকদের একাংশ।
হিন্দুত্ব : হিন্দুত্বের তাস। বিজেপি তার প্রয়োগে কোনও কার্পণ্য কখনওই করে না। উত্তরপ্রদেশে সেই কর্মের ব্যতিক্রম কেনই বা ঘটবে! বরং মাঝে মাঝে সে ব্যাপারে তাদের আরও মরিয়া বলে অনেকের মনে হয়েছে। অযোধ্যায় রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, হিন্দুত্ব-পথে একটা মাইলস্টোন নিশ্চয়ই। এছাড়া রয়েছে কাশী করিডোরের মতো প্রকল্পের সূচনা। উত্তরপ্রদেশে নির্বাচনী প্রচারে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ হিন্দুত্বের ধ্বজা উড়িয়েছেন, আলি বনাম বজরংবলি-র মতো মন্তব্য হিন্দুভোট একত্র করেছে ।
দলের সংগঠন : বিজেপি একেবারে গ্রাসরুট স্তর থেকে গুছিয়ে কাজ করে গিয়েছে। লকডাউনে ডোর-টু-ডোর গিয়েছেন বিজেপি-কর্মীরা। যা কার্যত সরকার ও দলের প্রচার হয়ে উঠেছে। বিরোধীপক্ষ তেমন কিছু করার অনেক আগেই বিজেপি মাছ খেলিয়ে ডাঙায় তুলে ফেলেছে। বিজেপি প্রত্যেকটি বিধানসভা ক্ষেত্রে নির্বাচনী কো-অর্ডিনেশন কমিটি তৈরি করেছে। তাদের প্রতিনিধিরা লাগাতার গিয়েছেন এসসি-এসটি মানুষজনের দরজায়। বিজেপি উচ্চবর্ণের দল, এমনটা অনেকে প্রচার করে থাকেন, বিরোধীদের একটা অস্ত্রও এটা, বিজেপি চেয়েছে সেই অস্ত্রটা ভোঁতা করে দিতে।
আরও পড়ুন- ‘জিত কা চৌকা’ পালনে মোদীর পাশে নাড্ডা, শাহ কোথায় প্রশ্নে জন্ম জল্পনার
ডুবন্ত বিরোধীপক্ষ: সমাজবাদী পার্টি কিন্তু এবারের ভোটে দারুণ ফল করেছে। গতবারের ৪৭ থেকে তারা পৌঁছে গিয়েছে ১১৪-তে (জয়ী এবং এগিয়ে মিলিয়ে)। কিন্তু সব মিলিয়ে বিরোধীদের ফল বেশ খারাপ। একে অন্যের ভোট কেটে যাত্রাভঙ্গ করেছে তারা নিজেদের, অনেক আসনে। বিএসপি এবং কংগ্রেসের ডুবে যাওয়া মানে, বিজেপি বনাম সমাজবাদী পার্টির দুই মেরুর লড়াই। সপা ভাল ফল করলেও, বিজেপির থেকে তো অনেকটা পিছিয়ে। সপা-র সাইকেল হলে, টেকযুগের গেরুয়া সন্ন্যাসীদের যে মোটরসাইকেল, তাই না!
Read story in English