জি২০-তে একটি ঐকমত্য ঘোষিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবারই দুই দিনের শীর্ষ সম্মেলনের প্রথম দিন ঘোষণা করেছিলেন, আলোচনাকারীরা ইউক্রেনের যুদ্ধের ব্যাপারে তাঁদের মতপার্থক্য মিটিয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ বিষয়ক:-
সমস্ত দেশকে অবশ্যই রাষ্ট্রসংঘের সনদের উদ্দেশ্য এবং নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কাজ করতে হবে। আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্ব বা যে কোনও রাষ্ট্রের রাজনৈতিক স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অথবা অঞ্চল অধিগ্রহণের জন্য হুমকি দেওয়া বা শক্তির প্রয়োগ থেকে বিরত থাকতে হবে। পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার বা ব্যবহারের হুমকি গ্রহণযোগ্য নয়। সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং সংকট মোকাবিলার চেষ্টার সঙ্গেই কূটনীতি আর সংলাপ চালানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিস্থিতি (ইউক্রেন) নিয়ে বিভিন্ন মতামত এবং মূল্যায়ন আছে। বর্তমান যুগ অবশ্যই যুদ্ধের নয়।
শস্য/খাদ্য/শক্তি নিরাপত্তা বিষয়ক:-
রাশিয়া এবং ইউক্রেন থেকে শস্য, খাদ্যসামগ্রী, এবং সার আনা এবং ওই সব দেশে বিভিন্ন পণ্যের সরবরাহ অবিলম্বে নিশ্চিত করার জন্য রাশিয়া এবং ইউক্রেনকে আহ্বান জানানো হয়েছে বৈঠকে। খাদ্য এবং শক্তিক্ষেত্রে নিরাপত্তা বজায় রাখার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে পরিকাঠামোর ওপর সামরিক হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। খাদ্য ও শক্তিক্ষেত্রে অস্থিরতা দূরীকরণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
অর্থনীতি এবং আর্থিক বাজার বিষয়ক:-
আর্থিক ক্ষেত্রে সুষম বৃদ্ধি এবং সমষ্টিগত অর্থনৈতিক ও আর্থিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দুর্বলদের রক্ষা করার কথা বলা হয়েছে। জি২০ দেশগুলোর অর্থমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের নিয়ে ২০২১ সালের এপ্রিলের বৈঠকে বিনিময় হারের প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছিল। তার ওপর পুনরায় জোর দেওয়া হয়েছে। ক্রিপ্টো-সম্পদ, ভার্চুয়াল মুদ্রার কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ, তত্ত্বাবধানের সঙ্গেই আর্থিক স্থিতিশীলতা রক্ষার ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, অর্থমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নররা অক্টোবরে তাঁদের বৈঠকে ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যবহারের পথকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আলোচনা করবেন। যার মধ্যে রয়েছে সুরক্ষা, ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে প্রতারণা বন্ধ করা, বাজারে একটি ন্যায্য প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করা।
জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক:-
পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কয়লা থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের উৎপাদন পর্যায়ক্রমে হ্রাস করার চেষ্টার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। উন্নয়নশীল দেশগুলোকে এই ব্যাপারে অর্থ দিয়ে সাহায্য করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে বৈঠকে। সিদ্ধান্ত হয়েছে, ২০২০ সালের মধ্যে জাতীয় পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্য আর লক্ষ্য ও নীতি বজায় রেখে বিশ্বব্যাপী পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তির ক্ষমতা তিনগুণ বাড়ানো হবে। সঙ্গে কার্বনের পরিমাণ কমানোর দিকে নজর দেওয়া হবে। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা মেনে নেওয়া হয়েছে বৈঠকে। এজন্য ২০৩০ সালের আগে ৫.৮-৫.৯ ট্রিলিয়ন ডলার উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রয়োজন বলে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন- নতুন করিডর বদলে দেবে বিশ্ব! ভারতের প্রাপ্তি কতটা, জানলে গর্ব হবে
বিশ্বব্যাপী ঋণ দুর্বলতা:-
উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ঋণদান ও পরিশোধের দুর্বলতা দূর করার ওপর বৈঠকে জোর দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে, ইথিওপিয়ার ঋণে গুরুত্ব দেওয়া নিয়েও আলোচনা হয়েছে। আর, স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে শক্তিশালী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংকের সহযোগিতায় জলবায়ু এবং কম কার্বন উৎপাদনশীল স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নয়নে সহায়তার ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে বৈঠকে।