For foreign eyes, colours and India have always had a connection: বিদেশিদের চোখে ভারত মানেই এক রঙিন জায়গা। কোল্ডপ্লে প্রযোজিত ২০১৬ সালের মিউজিক ভিডিওটির কথাই মনে করুন। ওই মিউজিক ভিডিওর প্রায় প্রতিটি ঝলক হোলির ছায়ায় ঢেকে গিয়েছিল। যা দেখে মনে হয়েছিল যে, বসন্ত উত্সব আর ভারতীয় উপমহাদেশ সমার্থক। এই মিউজিক ভিডিও একটা প্রতীকমাত্র। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে, হোলি ভারতে আসা বিদেশিদের হৃদয় ও মনে একটি বিশেষ স্থান ধরে রেখেছে। তবে, কখনও বলেছে, এই উৎসব ভারতে বাইরে থেকে এসেছে। কখনও আবার বলেছে, এই উৎসবের সঙ্গে একটা আদিমতা যুক্ত। তবে উৎস যাই হোক, ভারতীয় সংস্কৃতির মানচিত্রে হোলি বরাবরের অপরিহার্য অঙ্গ।
Advertisment
Holi-Europe: ইউরোপীয়রা মনে করেন যে হোলি কোনও রঙের উৎসব নয়। এটা হিন্দুদের এমন ধর্মীয় অনুষ্ঠান, যা ভগবান কৃষ্ণের প্রেম-পীড়িত থেকে শুরু হয়েছে। (ছবি- উইকিমিডিয়া কমন্স)
নানা নামে ডাকতেন বিদেশিরা ইউরোপীয়রা যখন ভারতের কিছু অংশে প্রথমে শাসন করতে শুরু করে, তখন ওই অঞ্চল, এর ভূগোল এবং এর জনগণ, তাঁদের আচার-ব্যবহার ও ঐতিহ্য তাঁদের কাছে অবোধ্য ছিল। তাঁরা রঙের উৎসবে বিশেষভাবে মুগ্ধ হয়েছিলেন। কারণ, তাঁরা মনে করতেন, এটা 'হিন্দুদের কার্নিভাল'। 'প্রেমময় গোপালক কৃষ্ণের সম্মানে হিন্দুদের বসন্ত উৎসব'। যদিও সেই উৎসবের নাম ইংরেজি ভাষায় আত্তীকরণ করা কঠিন ছিল। বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে ইংরেজি অভিধানে এই শব্দের বর্তমান বানান যুক্ত হয়। তার আগে বহুদিন পর্যন্ত ইউরোপীয়রা হোলিকে- Houly, Huli, Whoolye এবং Wooly নামে ডেকে এসেছে।
Holi-Europe: ইউরোপীয়া কখনও বলেছে, এই উৎসব ভারতে বাইরে থেকে এসেছে। কখনও আবার বলেছে, এই উৎসবের সঙ্গে একটা আদিমতা যুক্ত। (উইকিমিডিয়া কমন্স)
Advertisment
ইউরোপীয়দের কাছে হোলি ইউরোপীয় পর্যবেক্ষকদের কাছে হোলি মানে ছিল, মূলত হিন্দুদের একটা ধর্মাচার। যা আসলে ভগবান কৃষ্ণ এবং তাঁর প্রেম-পীড়িতের একটা উপায়। সেই উপায় বা পদ্ধতি অবশ্যই রঙ ছড়ানোর ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্ত। ১৮৮৬ সালে তাঁদের 'হবসন-জবসন' ডিকশনারিতে হেনরি ইউল ও এসি বার্নেল, হোলিকে যে ভাষায় বর্ণনা করেছেন, তা হল- 'এটা হল কৃষ্ণ এবং গোয়ালিনীদের সম্মানে এক ধরণের উৎসব। যেখানে পথচারীদের গায়ে লাল পাউডার ছুড়ে দেওয়া হয়। অথবা, তাঁদেরকে হলুদ-জল দিয়ে ভিজিয়ে দেওয়া হয়। গানের নামে কৃষ্ণের অশ্লীল স্তুতি গাওয়া হয়। আর, আগুনের চারপাশে নাচানাচি চলে।'
বাস্তবতার অভাব অর্থাৎ, এই আচারের উৎসগত তথ্যাদি এবং উৎসবগত দিক ইউরোপীয়দের দৃষ্টির বাইরেই ছিল। উপমহাদেশের বিভিন্ন উপজাতি, বর্ণ এবং সম্প্রদায় কীভাবে তাঁদের আচার-অনুষ্ঠান পালন করেন, তা ইউরোপীয়রা বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু, তাঁদের অনুভব এবং বিবরণের সঙ্গে বাস্তবতার মিল তেমন ছিল না বললেই চলে।