বেশিরভাগ ভারতীয়র কাছে, নয়াদিল্লির কুচকাওয়াজ প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রতীক। এই সময় ভারতের সামরিক শক্তির একটি দুর্দান্ত প্রদর্শনী চলে। ভারতের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি, প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ বহু ভারতীয়র হৃদয়ে এই সময়ে বিশেষ জায়গা করে নেয়। কিন্তু, কেন প্রজাতন্ত্র দিবসের উদযাপনে সেনাবাহিনীর প্যারেড অন্তর্ভুক্ত হল? সংবিধান গ্রহণের সঙ্গে সেনার কুচকাওয়াজের কী সম্পর্ক? চলুন দেখে নিই।
সামরিক বাহিনীর কুচকাওয়াজ: প্রাচীনকাল থেকেই ক্ষমতার প্রকাশ্য প্রদর্শনী, সৈন্য এবং অস্ত্রশস্ত্রের শক্তিশালী প্রদর্শন আর জাতীয়তাবাদ বা জাতীয় গর্বের মধ্যে একটি ঐতিহাসিক যোগসূত্র রয়েছে। মেসোপটেমিয়ার সভ্যতার আগের বিবরণগুলোয় সৈন্যদের এগিয়ে যাওয়ার উল্লেখ রয়েছে। ব্যাবিলনের ইশতারের পবিত্র গেট দিয়ে, ফিরে আসা যোদ্ধাদের নিয়ে রাজা শহরের দিকে যাত্রা করলে তাঁদের স্বাগত জানাতে দু'পাশে থাকত ৬০টি দৈত্যাকার সিংহের মূর্তি। রোমান সাম্রাজ্যের হেডেতে, বিজয়ী সেনাপতিরা রাজধানীতে মিছিলের নেতৃত্ব দিতেন। চারদিক থেকে তাদের উৎসাহ দিত জনতা।
সৈন্যদের সংগঠিত মিছিলের মাধ্যমে এই শক্তি প্রদর্শন, উত্তরাধিকার এবং প্রায়-অতীন্দ্রিয় শক্তি দর্শকদের মনে এবং তার বাইরেও ছড়িয়ে দিয়েছিল সাম্রাজ্যগুলো। এই সব সাম্রাজ্যগুলো যতটা পরিমাণে জাতি-রাষ্ট্রকে পথ দেখিয়েছিল, সামরিক কুচকাওয়াজের সুরই ছিল সেই রকম। ১৯ শতকে ইউরোপে ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদের সঙ্গে, সামরিক কুচকাওয়াজ জাতীয় প্রতীক হয়ে ওঠে। এই কুচকাওয়াজের মাধ্যমে একটি জাতি বা দেশের বাসিন্দারা সম্মিলিত জাতীয়তাবাদী উন্মাদনাকে তাদের অনুভূতিতে ধারণ করত।
আরও পড়ুন- ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশের সংবিধান তৈরির গোড়ার কথা, কীভাবে তৈরি হয়েছিল?
প্রাশিয়ান সেনাবাহিনী (প্রাশিয়া, যার মধ্যে আধুনিক জার্মানির বেশিরভাগটাই রয়েছে) আধুনিক সামরিক কুচকাওয়াজের পথপ্রদর্শক বলে মনে করা হয়। নাৎসিদের প্রতীক কুখ্যাত 'হংস পদক্ষেপ' প্রাশিয়া থেকে নেওয়া। আবার ভারতে ব্রিটিশ জমানায় রাজকীয় কুচকাওয়াজ ও এবং সেনার মিছিল ছিল সাধারণ ব্যাপার। যা ব্রিটিশ শক্তিকে শুধু ভারতীয়দের কাছেই নয়, বাকি বিশ্বের কাছেও বিশেষ করে প্রতিদ্বন্দ্বী ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক শক্তির কাছে ব্রিটিশদের ক্ষমতাকে তুলে ধরেছিল। ভারত তার স্বাধীনতা লাভের সঙ্গে সঙ্গেই পূর্ববর্তী ব্রিটিশ ঐতিহ্যে অনেককিছুই গ্রহণ করেছিল। যার মধ্যে কুচকাওয়াজ অন্যতম।
Read full story in English