পূর্ণ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার পর শেষবার বিজেপি কর্ণাটকে পরাজিত হয়েছিল ২০১৩ সালে। সেই সময় হারের প্রধান কারণ ছিল দলের গোষ্ঠীকোন্দল। যার জেরে লিঙ্গায়ত নেতা বিএস ইয়েদুরাপ্পা দল ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। তিনি তখন কর্ণাটক জনতা পার্টি (কেজেপি) গঠন করেছিলেন। কেজেপি ভোট পেয়েছিল ১০ শতাংশের কম (৯.৭৯ শতাংশ)। আর, এই নতুন দল ২০১৩ সালে ২২৪ আসনের কর্ণাটক বিধানসভায় মাত্র ছয়টিতে আসন জিতেছিল। কিন্তু, তারা লিঙ্গায়ত অঞ্চলে ২৬টি আসনে বিজেপিকে হারিয়েছিল। তার আগে ২০০৮ সালে ওই ২৬ আসনে জিতেছিল বিজেপি। সেই ২০০৮ সালেই বিজেপি দক্ষিণ ভারতে তার প্রথম সরকার গঠন করেছিল।
২০১৩ সালের সেই ঘটনার ১০ বছর পরও যেন বিধানসভা নির্বাচনে কর্ণাটকে একই ধরনের ছবি ফুটে উঠল। সম্প্রতি সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনের পর অভিযোগ উঠেছে লিঙ্গায়েত নেতা ইয়েদুরাপ্পার জন্যই কেন্দ্রীয় কর্ণাটক অঞ্চলে অন্তত ১০টি আসনে বিজেপি পরাজিত হয়েছে। ইয়েদুরাপ্পা অবশ্য এবার বিজেপি ছাড়েননি। কিন্তু, ২০২১ সালে বিজেপি তাঁকে সহজেই ক্ষমতার সীমানা থেকে বের করে দিয়েছে। আর, তারপরই কংগ্রেস এই নির্বাচনে জয়লাভ করল। লিঙ্গায়ত প্রধান অঞ্চলে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা পাঁচ বছর আগে ১১৩টির মধ্যে ছিল ৫৬টি। এবার ১১৩টি আসনের মধ্যে কমে হল ৩১টি। আর, কংগ্রেস লিঙ্গায়েত প্রধান অঞ্চলে তাদের বিধায়ক সংখ্যা ৫০ থেকে বাড়িয়ে করল ৭৮।
আরও পড়ুন- কর্ণাটকের সুদ পরবর্তী সিবিআই ডিরেক্টর, এই নিয়োগ কি আসলে অস্বচ্ছতায় ভরা?
পরিসংখ্যান বলছে, অন্তত ১০টির মত আসনে বিরোধী প্রার্থীর উপস্থিতি বিজেপিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এই সব প্রার্থীরা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পার সহযোগী হিসেবে পরিচিত। তাঁরা হয় কংগ্রেস বা জনতা দল (ধর্মনিরপেক্ষ)-এর হয়ে এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। নতুবা দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তার মধ্যে ইয়েদুরাপ্পা ফ্যাক্টরের জন্য বিজেপি সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে চিকমাগালুরে। সেখানে বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সিটি রবি কংগ্রেস প্রার্থী এইচডি থামমাইয়ার কাছে ৫,৯২৬ ভোটে পরাজিত হয়েছেন। থামমাইয়া একজন লিঙ্গায়ত, পাশাপাশি ইয়েদুরাপ্পার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। দল তাঁকে প্রার্থী না-করায় ভোটের প্রাক্কালে তিনি বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন।