জ্ঞানবাপী মসজিদ ইস্যুতে মামলা কয়েক দশকের পুরোনো। ২০২২ সালে এই মামলা গতি পায়। সেই বছর পাঁচ জন হিন্দু মহিলা মসজিদ ভবনের বাইরের দেওয়ালে মা শ্রীনগর গৌরীর পূজা করার অধিকার চেয়েছিলেন। তারপর থেকে যা ঘটেছে তা হল:-
২০২১
আগস্ট: পাঁচ হিন্দু মহিলা দেওয়ানি মামলা দায়ের করেন। তাঁদের দাবি হল, মসজিদটি মূল মন্দিরের জায়গায় নির্মিত হয়েছে। মসজিদ কমিটি উপাসনার স্থান (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১-এর প্রসঙ্গ টেনে মসজিদ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বকে চ্যালেঞ্জ জানান।
২০২২
১৬ মে: মসজিদ ভবনের একটি ভিডিওগ্রাফিক সমীক্ষা করা হয়। স্থানীয় আদালত কর্তৃক নিযুক্ত একটি কমিশন এই কাজটি করে। তার মধ্যে একটি কাঠামোকে হিন্দু পক্ষ দাবি করে যে, এটি 'শিবলিঙ্গ'। আর, মুসলিম পক্ষের দাবি ছিল, ওই আসলে একটি 'ঝরণা'। যা মসজিদ চত্বরেই পাওয়া গিয়েছে। পরবর্তীতে আদালত মসজিদের ওই ওজুর জায়গা সিল দিয়ে বন্ধ করার নির্দেশ দেয়।
২০ মে: সুপ্রিম কোর্ট মামলাটি সিভিল জজের থেকে জেলা জজের কাছে স্থানান্তর করে। জেলা জজ, মামলার প্রাথমিক দিকগুলো খতিয়ে দেখেই সিদ্ধান্ত নেবে। আর, তার পরে হস্তক্ষেপ করবে বলে জানায়।
সেপ্টেম্বর: বারাণসী জেলা ও দায়রা আদালত মসজিদ কমিটির আবেদন খারিজ করে দেয়। মসজিদ কমিটি এরপর এলাহাবাদ হাইকোর্টে আবেদন জানায়।
অক্টোবর: হিন্দুপক্ষ বারাণসী জেলা আদালতে একটি বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা এবং 'শিবলিঙ্গ'র কার্বন ডেটিং করার আবেদন জানান। কিন্তু, আদালত হিন্দু আবেদনকারীদের সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করে। এরপর হিন্দু আবেদনকারীরা এলাহাবাদ হাইকোর্টে যান।
১১ নভেম্বর: সুপ্রিম কোর্ট মসজিদে প্রবেশ এবং নমাজ পড়া নিয়ে মুসলিমদের অধিকারে হস্তক্ষেপ করেনি। কিন্তু, যেখানে 'শিবলিঙ্গ' পাওয়া গিয়েছিল, সেই জায়গা সুরক্ষিত রাখার নির্দেশ দেয়।
২০২৩
মে: এলাহাবাদ হাইকোর্ট একটি 'বৈজ্ঞানিক সমীক্ষার' নির্দেশ দেয়। একইসঙ্গে কার্বন ডেটিং-সহ, 'শিবলিঙ্গ'র বয়স নির্ধারণেরও নির্দেশ দেয়।
২১ জুলাই: বারাণসীর একটি জেলা আদালত ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক সমীক্ষা (এএসআই)-এর মাধ্যমে মসজিদ প্রাঙ্গণের একটি 'বৈজ্ঞানিক তদন্ত/সমীক্ষা/খনন' করার নির্দেশ দেয়। বর্তমান কাঠামো কোনও, 'হিন্দু মন্দিরের ওপর নির্মিত হয়েছে কি না, তা-ও খুঁজে বের করা'র নির্দেশ দেয়।
২৪ জুলাই: মসজিদ কমিটির আবেদনের পর সুপ্রিম কোর্ট সমীক্ষার ওপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দেয়।
২৫ জুলাই: মসজিদ কমিটি জেলা আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে এলাহাবাদ হাইকোর্টে যান।
৩ অগাস্ট: এলাহাবাদ হাইকোর্ট মুসলিম পক্ষের দায়ের করা আবেদন খারিজ করে দেয়। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব গবেষণা সংস্থার (এএসআই) সমীক্ষা একদিন পরে ফের শুরু হয়।
১১ ডিসেম্বর: বারাণসী জেলা আদালত এএসআইকে তার সমীক্ষার ফলাফল জমা দেওয়ার জন্য আরও এক সপ্তাহ সময় দেয়। এএসআই সেই নির্দেশ মেনে চলে।
১৯ ডিসেম্বর: এলাহাবাদ হাইকোর্ট ১৯৯১ সালের জ্ঞানবাপী কমপ্লেক্স সম্পর্কিত একটি মামলায় মুসলিম পক্ষের চ্যালেঞ্জ খারিজ করে দাবি করে যে মুসলিম সম্প্রদায় অবৈধভাবে সম্পত্তি দখল করে রেখেছে।
২০২৪
২৫ জানুয়ারি: আদালত এএসআই রিপোর্ট হিন্দু ও মুসলিম পক্ষের কাছে হস্তান্তর করে।