রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ অধিবেশনে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানোর প্রস্তাবে ভারতের বিরত থাকা, গাজা ইস্যুতে নয়াদিল্লির অবস্থানকে স্পষ্ট করেছে। মোট ৪৫টি দেশ ভোটদানে বিরত ছিল। যার মধ্যে ভারত ছিল অন্যতম। বাকি দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জার্মানি, জাপান, ইউক্রেন এবং ব্রিটেন। প্রস্তাবে, 'অবিলম্বে মানবিক কারণে স্থায়ীভাবে যুদ্ধবিরতি এবং শত্রুতা বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে গাজা স্ট্রিপে প্রবেশাধিকার' চাওয়া হয়েছে। ২২টি আরব দেশের একটি দল এই প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করেছিল। যা পেশ করেছিল জর্ডান। প্রস্তাবে ইজরায়েলি বোমা হামলায় প্যালেস্তাইনের সাধারণ নাগরিকদের হতাহতের কঠোর সমালোচনা করা হয়েছে। প্রস্তাব সমর্থন করেছে বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, পাকিস্তান, রাশিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকাও।
ফ্রান্স এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে যে, 'কোনও কিছুই সাধারণ নাগরিকদের কষ্টকে ন্যায্যতা দিতে পারে না, সকল ভুক্তভোগী সমবেদনা পাওয়ার যোগ্য, সকলের জীবন সমান এবং তাঁদের মধ্যে কোনও শ্রেণিবিন্যাস নেই।' একইসঙ্গে ফ্রান্স, 'ইজরায়েলের বিরুদ্ধে হামাস এবং অন্যান্য জঙ্গি গোষ্ঠী যে সন্ত্রাসবাদী হামলা চালিয়েছে, তার নিন্দা' কেন প্রস্তাবে নেই, সেই প্রশ্নও তুলেছে ফ্রান্স। আর, এই সন্ত্রাসবাদী হামলার নিন্দা না-করার বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা করেছে প্রস্তাবের।
ইজরায়েল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, পাঁচটি ছোট প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র এবং চারটি পূর্ব ইউরোপীয় দেশ - অস্ট্রিয়া, ক্রোয়েশিয়া, চেকিয়া এবং হাঙ্গেরি সেই ১৪ দেশের অন্যতম, যারা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে। পালটা জর্ডান বলেছে যে প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট আসলে একটি 'বুদ্ধিহীন যুদ্ধ' এবং 'বুদ্ধিহীন হত্যা'র অনুমোদনের সমান। অন্যদিকে ইজরায়েল এই প্রস্তাবকে তাদের 'কুখ্যাতি' করার অপচেষ্টা অভিযোগ করে ভোটাভুটিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
আরও পড়ুন- কোচি বিস্ফোরণ-কাণ্ডের দায় নিয়ে থানায় আত্মসমর্পণ ব্যক্তির, তদন্তে কেরল পুলিশ
কানাডা আবার আরেকটি প্রস্তাব পেশ করে এই সংকটের মধ্যে হামাসের ভূমিকার সমালোচনা করতে চেয়েছিল। সেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও কানাডাকে সমর্থন করেছে। ভারতও সেই প্রস্তাব সমর্থন করেছে। এই প্রস্তাবে কানাডা, গত ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে হামাসের জঙ্গিহানার কড়া নিন্দা করেছিল। হামাসের পণবন্দিদের নিরাপত্তা চেয়ে মানবিকতার খাতিয়ে অবিলম্বে তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছিল। এই প্রস্তাবের পক্ষে ৮৭টি ভোট পড়েছে। বিরুদ্ধে পড়েছে ৫৫টি ভোট। ২৩টি দেশ ভোটদানে বিরত ছিল। সেই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রসংঘের ৭৮তম সাধারণ অধিবেশনের সভাপতি ডেনিস ফ্রান্সিস জানিয়ে দেন যে, খসড়া সংশোধনী গৃহীত হতে পারে না।