উষ্ণায়নের শুরু থেকেই হিমবাহের গলন যেন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। 'গ্লোবাল ওয়ার্মিং'-এর কুনজরে আন্টার্কটিকার হিমশৈলশহরে একের পর এক ধ্বস নেমেছিল। তবে ২০১৭ সালে সবচেয়ে বড় ধাক্কা এসেছিল। উষ্ণতা বৃদ্ধির জের সইতে না পেরে মূল হিমশৈল ভূখণ্ড ছেড়ে ভেঙে বেরিয়ে আসে পৃথিবীর বৃহত্তম আইসবার্গ, যার নাম- A68। কিন্তু বিরাটায়তন এই হিমশৈলটি নিএজি যেন একটি দ্বীপ। কিন্তু এবার সেই দ্বীপেই এবার ভাঙন ধরেছে। যার ফলে বিপন্ন হয়ে উঠছে প্রাণীকুল।
Advertisment
আটলান্টিক মহাসাগরে ভাসমান এই হিমশৈলটি প্রায় ৫ হাজার ৮০০ স্কোয়ার কিলোমিটার এলাকা নিয়ে ভাসমান ছিল। জলের টানে ক্রমশই দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের দিকে এগিয়ে চলেছে এটি। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, এর ফলে দক্ষিণ জর্জিয়া বড় বিপদের মুখে পড়তে পারে। শুধু তাই নয় বিপদ বাড়ছে হিমশৈলে থাকা প্রাণীদেরও।
শুধু কী তাই? উষ্ণায়নের ফলে এই হিমশৈলতে লেগেছে ফাটল। সমুদ্রের মধ্যেই ভাঙতে শুরু করেছে আইসবার্গের বিভিন্ন দিক। ২০১৭ সালে যার পরিধি ছিল প্রায় ৫ হাজার ৮০০ স্কোয়ার কিলোমিটার, এখন গলতে গলতে তা এসে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬০০ স্কোয়ার কিলোমিটার। বর্তমানে মূল হিমবাহ A68 যার এখন নতুন নাম- A68a আরও দুটি খন্ডে বিভক্ত হয়েছে। যাঁদের নাম যথাক্রমে- A68E এবং A68F। জলের স্রোতে যতই দ্বীপের দিকে এগিয়ে আসছে এই হিমশৈলটি ততই ঢুবতে শুরু করেছে।
Advertisment
ব্রিটিশ আন্টার্কটিক সার্ভে (BAS)-এর পরিবেশবিদরা জানাচ্ছেন, আগামী কয়েক মাস থেকে এর প্রভাব পড়তে শুরু করবে। পেঙ্গুইন, সিল মাছেরা খাবার না পেয়ে ক্রমশই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বে। ভাল দিক বলতে খোলা সমুদ্রে এই আইসবার্গগুলি প্ল্যাঙ্কটনদের জন্য বেশ উপকারী। এছাড়া বাতাস থেকে প্রচুর পরিমাণে কার্বন-ডাই-অক্সাইডও টানে। কিন্তু এর নেতিবাচক দিকের প্রাবল্য এতটাই যে এই ভাল দিকের উপকারীতার হার যৎসামান্য। ভয় একটাই, করোনাকে হয়ত ভ্যাকসিন দিয়ে আটকানো যাবে কিন্তু আগামী দিনে আন্টার্কটিকার এই ভাঙন কোন ভ্যাকসিনে আটকাবে?