আগামী ১৩ জুলাই পদত্যাগ করতে চলেছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপক্ষ। এখনও তিন দিন বাকি তাঁর পদত্যাগের। ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে, কেন তিনি ১৩ জুলাইকেই পদত্যাগের দিন হিসেবে বেছে নিলেন? ইতিমধ্যেই তো পদত্যাগ করতে পারতেন। কারণ, তিনি যে আর শ্রীলঙ্কার সরকার চালাতে পারবেন না, তা তো স্পষ্টই হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখাতে জনসমুদ্রের মত তাঁর প্রাসাদে আছড়ে পড়েছে। তাঁর আসবাব ইচ্ছেমতো ব্যবহার করেছেন। তাঁর সুইমিং পুলে ইচ্ছেমতো সাঁতার কেটেছেন। পুলিশের বাধা আর ব্যারিকেড টপকে কার্যত দখল করে নিয়েছেন রাজাপক্ষর প্রাসাদ।
শনিবার, ৯ জুলাই এই সব ঘটেছে। ' গোটা গো' বিক্ষোভকারীরা কলম্বোর ফোর্ট এলাকায় প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপক্ষর সরকারি বাসভবন এবং গল ফেস-এ রাষ্ট্রপতির সচিবালয় দখল করার কয়েক ঘন্টা পরে, স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্ধনে রাতে এক টেলিভিশন ভাষণে জানান যে প্রেসিডেন্ট তাকে জানিয়েছেন যে তিনি ১৩ জুলাই পদত্যাগ করবেন। আর, তারপরই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, কেন ১৩ জুলাই পদত্যাগের দিন হিসেবে বাছলেন গোটাবায়া?
এই তারিখের সঙ্গে বৌদ্ধধর্মের একটা যোগসূত্র আছে
যদিও কোনও আনুষ্ঠানিক ব্যাপার নেই, তবে আগামী ১৩ জুলাইয়ের সঙ্গে একটি ধর্মীয় যোগাযোগ রয়েছে। বিশেষ করে বৌদ্ধধর্মের। আর, সেই কারণেই পদত্যাগের জন্য গোটাবায়া রাজাপক্ষ দিনটিকে বেছে নিয়েছেন। এমনই মনে করছেন শ্রীলঙ্কার বৌদ্ধরা। ওই দিন পূর্ণিমা। চন্দ্র চক্রে দিনটি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
শ্রীলঙ্কা বৌদ্ধপ্রধান দেশ। সিংহলিতে ওই বিশেষ দিনটিকে বলা হয় ‘পোয়া’। প্রতি ' পোয়া'ই শ্রীলঙ্কার সরকারি ছুটির দিন। দেশ হিসেবে শ্রীলঙ্কা থেরাবাদ বৌদ্ধধর্ম অনুসরণ করে। থেরাবাদ বৌদ্ধ ক্যালেন্ডারে, জুলাই মাসের পূর্ণিমা 'এসলা পোয়া' হিসেবে পালন করা হয়। এই দিনটিতেই বুদ্ধ প্রথম ধর্মোপদেশ দেশ এবং বৌদ্ধ সংঘের প্রতিষ্ঠাও হয়েছিল ওই দিন।
এই দিনটিতেই বুদ্ধদেব বারাণসীর কাছে সারনাথের হরিণ উদ্যানে তাঁর প্রথম ধর্মোপদেশ প্রদান করেছিলেনয। ৫২৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দের এই দিনটিতে বুদ্ধদেবের বয়স ছিল মাত্র ৩৫ বছর। সেই সময় তিনি পাঁচ জন তপস্বীর কাছে নিজের ধর্মমত প্রচার করেছিলেন। প্রবর্তন করেছিলেন ধর্মচক্রের। বৌদ্ধ দর্শনের মূলনীতি চতুর্যামের কথা বলেছিলেন। গোটাবায়া একজন কট্টর বৌদ্ধ। তিনি ভালো করেই জানেন যে ২০১৯ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে শ্রীলঙ্কায় শুধুমাত্র সিংহলি-বৌদ্ধরাই তাঁকে ভোট দিয়েছিলেন।
Read full story in English