Government is preparing for new criminal law regime: সরকার নতুন ফৌজদারি আইন ব্যবস্থার জন্য প্রস্তুতি নিতে চলেছে। আগামিকাল থেকে তা কার্যকর হবে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব বিভিন্ন কেন্দ্রীয় মন্ত্রক এবং রাজ্য আর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোর প্রধান সচিব এবং পুলিশ প্রধানদের সঙ্গে এক ডজনেরও বেশি বৈঠক করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন যে নতুন আইনের চালিকাশক্তি হল 'নাগরিক প্রথম, মর্যাদা প্রথম, বিচার প্রথম'। তিনি পুলিশকে 'ডান্ডা' নয়। বরং, ডেটা নিয়ে কাজ করতে বলেছেন।
অপারেশনাল ট্রেনিং
বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া বাধ্যতামূলক করেছে যে নতুন আইনগুলো ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় এবং আইনি শিক্ষা কেন্দ্রগুলির পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত হবে। অক্টোবর এবং মার্চের মধ্যে স্কুল শিক্ষা বিভাগের ষষ্ঠ শ্রেণির জন্য বিশেষ মডিউল থাকবে। লাল বাহাদুর শাস্ত্রী ন্যাশনাল একাডেমি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এলবিএসএনএএ), মুসৌরিতে আইএএস/আইপিএস/বিচার বিভাগের অফিসারদের জন্য এবং ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো, ফরেনসিক ল্যাব ইত্যাদির জন্য পাঁচ দিনের প্রশিক্ষণ সূচির আয়োজন করা করেছে। ডাব্লুসিডি, গ্রামীণ উন্নয়ন, পঞ্চায়েতিরাজ মন্ত্রকগুলো ২১ জুন প্রায় ৪০ লক্ষ তৃণমূল কর্মীর জন্য নতুন আইনের উপর একটি হিন্দি ওয়েবিনারের আয়োজন করেছিল। ২৫ জুন ইংরেজিতে দ্বিতীয় ওয়েবিনারে প্রায় ৫০ লক্ষ কর্মী অংশগ্রহণ করেছিলেন।
প্রচার, সচেতনতা
পুলিশ রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ব্যুরো একটি যৌথ প্রচারের জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় গ্রুপকে নিয়ে যৌথ প্রচারের চেষ্টা চালাচ্ছে। বিষয়ভিত্তিক পোস্টার এবং ফ্লায়ারগুলো সমস্ত বিভাগের সঙ্গে ভাগ করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোতে পরামর্শ, প্রেস রিলিজ, ইনফোগ্রাফিক ইত্যাদির মাধ্যমে নতুন সব আইনের জন্য ব্যাপক প্রচার চালানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো নতুন ফৌজদারি আইন নিয়ে বিভিন্ন রাজ্যের রাজধানীতে আঞ্চলিক মিডিয়া কর্মীদের সঙ্গে ২০টি বার্তালাপ (কথোপকথন) এবং কর্মশালা পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একজন সরকারি আধিকারিকের মতে, এই সব কর্মশালায় আঞ্চলিক মিডিয়ার ব্যাপক অংশগ্রহণ রীতিমতো দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
টেক আপগ্রেডেশন
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো এফআইআর রেজিস্ট্রেশন-সহ প্রযুক্তিগত সামঞ্জস্যের সুবিধার্থে ক্রাইম অ্যান্ড ক্রিমিনাল ট্র্যাকিং নেটওয়ার্ক অ্যান্ড সিস্টেমস (সিসিটিএনএস) অ্যাপ্লিকেশনে ২৩টি কার্যকরী পরিবর্তন করেছে। রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোতে প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। পর্যালোচনা এবং হ্যান্ডহোল্ডিংয়ের জন্য সহায়তা দল তৈরি করা হয়েছে। একটি কল সেন্টার স্থাপন করা হচ্ছে। একটি মোবাইল ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনে ফৌজদারি আইনের NCRB সংকলনও ১৪ মার্চ চালু করা হয়েছে। ন্যাশনাল ইনফরমেটিক্স সেন্টার অপরাধের দৃশ্যের ভিডিওগ্রাফি/ফটোগ্রাফি, বিচারগত শুনানি, এবং ইলেকট্রনিকভাবে আদালতের সমন পাঠানোর জন্য eSakshya, NyaySruti এবং eSummon-এর মত অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করেছে। এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এই সব অ্যাপগুলো রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোর সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে।
পুলিশের ক্ষমতা
পুলিশ রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ব্যুরো পুলিশ, কারাগার, প্রসিকিউটর, বিচার বিভাগের আধিকারিক কর্মকর্তা, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং কেন্দ্রীয় পুলিশ সংস্থাগুলোর সক্ষমতা তৈরি করতে ১৩টি প্রশিক্ষণ মডিউল তৈরি করেছে। প্রশিক্ষকদের একটি গ্রুপ তৈরি করা হচ্ছে যাতে নতুন আইন নিয়ে প্রশিক্ষণ এবং জ্ঞানকে ছড়িয়ে দেওয়া যায়। BPR&D ইতিমধ্যে ২৫০টি প্রশিক্ষণ কোর্স/ওয়েবিনার/সেমিনার পরিচালনা করেছে। ৪০,০০০-এরও বেশি কর্মকর্তা/কর্মীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলো পুলিশ, কারাগার, ফরেনসিক এবং প্রসিকিউশন ইত্যাদি থেকে প্রচুর সংখ্যক আধিকারিককে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। তৃণমূলস্তরের আধিকারিকদের প্রশ্নের সমাধানের জন্য আইন ও পুলিশ আধিকারিকদের নিয়ে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ তৈরি করা হয়েছে।
আইনি বিষয়ক বিভাগ
আইন বিষয়ক বিভাগ বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রতিনিধিদের নিয়ে চারটি সম্মেলনের আয়োজন করেছে। সেই সব সম্মেলনে ভারতের প্রধান বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্ট এবং হাইকোর্টের বিচারপতি, উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক এবং ডোমেন বিশেষজ্ঞরা অংশ নিয়েছেন। এই সব নিয়ে ৩০ জুন মুম্বইয়ে পঞ্চম সম্মেলন আয়োজন হওয়ার কথা। iGOT কর্মযোগী অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পৃথক সিভিল সার্ভিস আধিকারিকদের কর্তাদের ব্যাপক নির্দেশিকা প্রদান করা হবে। নতুন ফৌজদারি আইনের তিনটি প্রশিক্ষণ কোর্স ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে iGOT-তে একটি কিউরেটেড প্রোগ্রাম হিসাবে যুক্ত হয়েছে। আর প্রায় ২,১৮,০০০ আধিকারিক তাতে নাম নথিভুক্ত করেছেন। এমনটাই এক আধিকারিক জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন- সিবিআই গ্রেফতারের পরও দমতে নারাজ কেজরিওয়াল, একই ঘটনায় ভিন্ন সংস্থার গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন
বিভিন্ন পরিকল্পনা
ইউজিসি, এআইসিটিই এবং সিএফআই-এর অধীনে সমস্ত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান- রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে সোমবার একটি দিনব্যাপী কার্যক্রমের আয়োজন করবে। নতুন ফৌজদারি আইনের বিভিন্ন ধারা নিয়ে সেখানে গ্রুপ আলোচনা, কর্মশালা, সেমিনার ইত্যাদির পরিকল্পনা করা হয়েছে। সঙ্গে, ভারতজুড়ে বিভিন্ন থানাতেও নানা অনুষ্ঠান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।