Advertisment

কেন গ্রেটা থুনবার্গের নাম লোকের মুখে মুখে?

২০১৮ সাল। সুইডেনের সংসদে গিয়ে সোচ্চার প্রতিবাদ জানিয়ে এল মেয়েটা। পরিবেশ বাঁচাতে রাষ্ট্রের কড়া পদক্ষেপ দাবি করল গ্রেটা আর তার সঙ্গীরা। স্কুল পালিয়েই দীর্ঘদিন ধরে গড়ে তুলল প্রতিবাদ

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
greta thunberg un speech

গ্রেটা থুনবার্গ। ছবি: টুইটার থেকে

গত একটা দিন ধরে খবরের কাগজে, শিরনামে, টিভিতে বারবার দেখা গেছে একটাই নাম - গ্রেটা থুনবার্গ। কেন একটা ১৮ বছরের মেয়ে রাতারাতি এমন খবর হয়ে উঠল? কেন রাষ্ট্রপুঞ্জের আন্তর্জাতিক মঞ্চও অস্বীকার করতে পারল না গ্রেটা নামের সুইডিশ একটা মেয়েকে? গ্রেটা পরিবেশকে বাঁচাতে চেয়েছে। নিজের জন্যেও, আবার অন্য সবার জন্যেও। এ পৃথিবীর সবার জন্য একটা সুস্থ পৃথিবীর, সুস্থ পরিবেশের স্বপ্ন দেখছে গ্রেটা।

Advertisment

রাষ্ট্র সংঘের  ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিটে গত সোমবার এক ঝাঁক কিশোর কিশোরী পরিবেশের প্রতি রাষ্ট্রের ঔদাসিন্য নিয়ে উগড়ে দিয়েছে তাদের যাবতীয় অভিযোগ। ১৬ জন অভিযোগকারীর মধ্যে মঞ্চে ছিলেন গ্রেটা থুনবার্গ, ছিলেন রিদ্ধিমাও। হ্যাঁ ভারতের রিদ্ধিমা পাণ্ডে।

যারা রাষ্ট্রপুঞ্জের সদস্যদের বিরুদ্ধে পরিবেশ ঔদাসিন্যের অভিযোগ এনেছে, তাঁদের বয়স ৮ থেকে ১৭-র মধ্যে। মূল অভিযোগ হল, সদস্য দেশ পরিবেশের সংকট দূর করতে ব্যর্থ হয়েছে, এবং সেই সঙ্গে শিশুদের অধিকার লঙ্ঘন করেছে।

আরও পড়ুন, এ বিশ্বকে শিশুর বাসযোগ্য করে যেতে গ্রেটার পাশেই ভারতের রিদ্ধিমা

প্রথম আন্তর্জাতিক জনপ্রিয়তা পেয়ে খবরে আসা আগস্ট, ২০১৮ সালে। সুইডেনের সংসদে গিয়ে সোচ্চার প্রতিবাদ জানিয়ে এল মেয়েটা। পরিবেশ বাঁচাতে রাষ্ট্রের কড়া পদক্ষেপ দাবি করল গ্রেটা আর তার সঙ্গীরা। স্কুল পালিয়েই দীর্ঘদিন ধরে গড়ে তুলল প্রতিবাদ। ২০১৮ এর রাষ্ট্রপুঞ্জের জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে হওয়া কনফারেন্স-এ বক্তব্য রাখল থুনবার্গরা। তারপর থেকে প্রতি সপ্তাহে একের পর এক স্কুল পড়ুয়ার মধ্যে ছড়িয়ে গেল প্রতিবাদ। না, কোনও দেশ-কাল-সীমানার গণ্ডি মানল না সেই প্রতিবাদ।

রাষ্ট্র শক্তির পরিবেশ ঔদাসিন্য নিয়ে মুখ খুলতে এতটুকু দ্বিধা করেনি ১৮ বছর বয়সের মেয়েটা। সত্যি বলতে, কাউকেই ছেড়ে কথা বলতে হয়, এই বোধ তৈরির অনেক আগে গ্রেটার মধ্যে চলে এসেছে একটা সুন্দর, সুস্থ পৃথিবীর স্বপ্ন। যেখানে পরিবেশকে নিংড়ে নিয়ে শুধু একপক্ষের বেঁচে থাকা সমৃদ্ধ হয় না, বরং বেশ কিছুটা ফিরিয়ে দেওয়া হয় পরিবেশকেও। ব্যক্তিগত পরিসরেও গ্রেটা বিশ্বাস করেছে পরিবেশবান্ধব এক যাপনে। আকাশপথে যাতায়াত ছেড়েছে, আমিষ খাওয়া ছেড়েছে।

২০১৯-এর মে মাসে টাইম ম্যাগাজিনে গ্রেটা নির্বাচিত হল 'আগামী প্রজন্মের নেতা' হিসেবে। সারা পৃথিবীতে আরও মানুষ জানতে শুরু করল, এই গ্রহেরই কোনও এক সদ্য আঠেরোয় পড়া প্রাণ দিন নেই, রাত নেই, ভেবে চলেছে কী ভাবে একটা সুন্দর, সুস্থ পরিবেশ উপহার দেবে আগামী প্রজন্মকে। তৈরি হল তথ্যচিত্র 'মেক দ্য ওয়র্ল্ড গ্রেটা এগেইন'।

২০০৩ সালে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে জন্ম গ্রেটার। গ্রেটার মা অপেরা গাইকা ম্যালিনা ইমান, বাবা অভিনেতা ভ্যানতে থুনবার্গ। ২০০৮ সালে ১১ বছর বয়সে প্রথম জলবায়ু বদলে যাওয়ার কথা জানতে পারে মেয়েটা। অবসন্ন হতে হতে খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দিতে থাকে। চিকিৎসকেরা জানালেন অ্যাস্পারগার সিনড্রোমে ভুগছে গ্রেটা। এরপরই অবসাদ জ্বলে উঠল প্রতিবাদ হয়ে। বাকিটা ইতিহাস...

Advertisment