বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল কুমার মোদীর মতে এবারের অতিমারীর দৌলতে জিএসটি জমানা চতুর্থ বছরে এসে সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষার সামনে পড়েছে।
প্রথম দু বছরে ১৪ শতাংশ বার্ষিক বৃদ্ধির ফলে জিএসটি ব্যাপক কার্যকর হয়েছিল। কিন্তু ২০১৯ সালে আর্থিক মন্দার জেরে জিএসটি আর তত কার্যকর থাকেনি।
সুশীল মোদী বলেছেন, ২০১৯ সালের এপ্রিল ছাডড়া গত বছর পর্যন্ত কোনও মাসে বৃদ্ধি দু অংক হয়নি, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বরে সংখ্যা ঋণাত্মক। ২০২০-২১ এর দিকে এগোনোর সময়ে জিএসটি কাউন্সিলের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ রাজ্যগুলির ক্ষতি কীভাবে পূরণ করা যায়। সাধারণত ক্ষতিপূরণ দিতে দেরি হয়, এবং যেহেতু বর্তমান অর্থবর্ষের প্রথম দুমাসের সংগ্রহ ২০১৯-২০-র এই সময়কালের মাত্র ৪৬ শতাংশ, ফলে সে পরিস্থতির উন্নতি হওয়ার আশা নেই বললেই চলে।
স্পষ্টতই এখন রাজ্যগুলি যাতে গুরুতর আর্থিক সংকটে না পড়ে সে ব্যাপারে পদক্ষেপ করা জরুরি।
অনেকেই মনে করছেন ঋণ নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে মোদী মনে করেন এ ধরনের সংকটের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে কোভিডের কারণে অর্থনীতিতে যে প্রভাব পড়েছে এবং বিশেষ করে রাজ্যকে ১৪ শতাংশ দেওয়ার সুনিশ্চয়তার প্রেক্ষিতে ঋণ কোনও সমাধান নয়। তাঁর বক্তব্য ঋণের ক্ষেত্রে অনেকগুলি জটিলতা রয়েছে। যেমন কেমন ভাবে ও কবে ঋণ শোধ দেওয়া হবে... এ পদ্ধতি অবলম্বন করলে সমস্যা সমাধানের চেয়ে তাকে পিছিয়ে দেওয়া হবে।
বিকল্প হিসেবে বলা যেতে পারে কেন্দ্র এই ক্ষতিপূরণের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ঋণ নিতে পারে। এর ফলে কেন্দ্র কিছুটা হাঁফ ছাড়ার সুযোগ পাবে এবং দীর্ঘ মেয়াদে পরিস্থিতি সহজ হবে, কেন্দ্রের উপর আর্থিক চাপও পড়বে না।
কিন্তু মোদী এ পদ্ধতি নাকচ করে দিচ্ছেন। "ঋণের সীমা রয়েছে এবং কেন্দ্রের আর্থিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অনেকে বলছেন কাউন্সিল নিজেই ঋণ নিতে পারে, কেন্দ্র যদি গ্যারান্টার হয়। আমার দৃষ্টিভঙ্গিতে কাউন্সিল এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার উপযুক্ত সংস্থা নয়।"
এর ফলে একমাত্র যে উপায় হাতে থাকে তা হল জিএসটি হার পরিবর্তন। সুশীল মোদী বলছেন, শুরুতে জিএসটি আয় নিরপেক্ষ ছিল না। এই হার ক্রমশ কমেছে, কমেছে মূলত দুবার, ২০১৭ সালের নভেম্বর ও ২০১৮ সালের জুলাইতে। ৬০ লক্ষ কোটি কর ভিত্তিতে, এক শতাংশ কর বৃদ্ধি হলে অতিরিক্ত আয় হবে ৬০ হাজার কোটি টাকা।
তবে তিনি মনে করেন এটা হার নিয়ে নাড়াচাড়া করার উপযুক্ত সময় নয়। তবে এই দুরবস্থা কাটিয়ে উঠলে এ নিয়ে বিতর্ক হওয়া উচিত।
হার বৃদ্ধির সঙ্গে বা তা ব্যতিরেকেই জিএসটি হার কাঠামো ঢেলে সাজানোর কথাও উঠে আসছে, যেখানে কোনও একটি পণ্যের মোট করের ৬০-৬৫ শতাংশ রাজ্যের খাতে যাবে, বাকিটা যাবে কেন্দ্রের খাতে। যেমন ১৮ শতাংশ জিএসটি হারের কোনও পণ্যের ক্ষেত্রে ১১ শতাংশ যাবে রাজ্যের জিএসটি, ৭ শতাংশ যাবে কেন্দ্রের জিএসটি-তে।
সুশীল মোদী বলছেন, "এরকম ভাবে জিএসটি হার প্রবর্তন করা হলে রাজ্যের অতিরিক্ত আয়ও হবে, এর ফলে ক্ষতিপূরণের বোঝাও কমবে।"