/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2019/05/pepsico.jpg)
যে জাতের আলুর পেটেন্ট নেওয়া আছে, সেটি হল এফ এল-২০২৭ (বাণিজ্যিক নাম এফসি-৫)।
পেপসিকো ইন্ডিয়া হোল্ডিংস বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেছে তার উত্তর গুজরাটের ৯জন কৃষকের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। এর আগে পোপসিকো কম্পানির নামে নথিকৃত নির্দিষ্ট ধরনের আলু বেআইনি চাষ ও বিক্রির অভিযোগ তুলে মামলা করেছিল।
যে জাতের আলুর পেটেন্ট নেওয়া আছে, সেটি হল এফ এল-২০২৭ (বাণিজ্যিক নাম এফসি-৫)। পেপসি-র উত্তর আমেরিকার কোম্পানি ফ্রিটো-লে-র এ জাতের আলুর উপর পেটেন্ট নেওয়া রয়েছে ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত। ভারতে, ২০০১ সালের পেটেন্ট আইনানুসারে পেপসিকো ইন্ডিয়া হোল্ডিংসের তরফ থেকে এ জাতের আলুর পেটেন্ট নেওয়া রয়েছে ২০৩১ সালের জানুয়ারি মাস অবধি।
পেপসিকো ইন্ডিয়া গুজরাটের ১১ জন কৃষকের বিরুদ্ধে পেপসিকো ইন্ডিয়া হোল্ডিংসের অনুমতি ব্যাতিরেকে এ জাতের আলুর বেআইনি চাষ, উৎপাদন ও বিক্রির অভিযোগ এনেছে। এদের মধ্যে তিনজনের সঙ্গে ওই সংস্থার পূর্ববর্তী চুক্তি ছিল।
মামলা প্রত্যাহার করার আগে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে কথা হয়েছিল এক অভিযুক্ত কৃষকের। তিনি জানিয়েছিলেন, চুক্তি ছিল ৪৫ মিটারের বেশি ব্যাসযুক্ত আলু কিনবে পেপসিকো। এর চেয়ে ছোট আলু তাঁরা পরের বছরের চাষের জন্য মজুত করে রাখতেন। অন্য যে চারজন কৃষকের বিরুদ্ধে ১.০৫ কোটি টাকার মামলা আনা হয়েছে, তাঁরা জানিয়েছেন, গত চার বছর ধরে তাঁরা পরিচিত গোষ্ঠী এবং কৃষকদের কাছ থেকে নথিভুক্ত বীজ কিনে আসছেন, এবং তাঁদের সঙ্গে কারোরই কোনও চুক্তি নেই। তাঁরা জানিয়েছেন, গত ১১ এপ্রিল আদালতের নোটিস পাওয়ার পরেই তাঁরা জানতে পেরেছেন য়ে তাঁরা রেজিস্টার্ড জাতের আলু চাষ করছেন।
মামলা রুজু হওয়ার পর সমাজকর্মী, কৃষক ইউনিয়ন এবং অন্য সংগঠনগুলির তরফ থেকে পেটেন্ট আইনের ৩৯(১)(৪) ধারা উদ্ধৃত করা হয়েছে। ওই ধারায় বলা হয়েছে, কোনও কৃষক এ আইনবলে পেটেন্টকৃত ফসল সংরক্ষণ, ব্যবহার, চাষ, পুনর্চাষ, দেওয়া-নেওয়া এবং তাঁর ক্ষেতে উৎপন্ন বীজ বিক্রি করতে পারবেন। তবে এ আইনের বলে পেটেন্টকৃত জাতের বীজ তাঁরা বিক্রি করতে পারবেন না।
সংগঠনগুলির দাবি, এ আইন তৈরি হয়েছে কৃষকরা যাতে সহজেই বীজ পেতে পারেন, সে কথা মাথায় রেখে। জৈব চাষ নিয়ে কর্মরত এক জাতীয় পর্যায়ের সংস্থার তরফ থেকে কবিতা কুরুংগাটি জানিয়েছেন, "আমেরিকায় একজন যদি কোনও বীজের পেটেন্ট নেয়, তাহলে অন্য কেউ সে চাষ করতে পারে না। যদি এখানে পেপসিকো সে সুবিধে ভোগ করতে চায়, তাহলে তারা তা পারবে না।" (পেপসিকোর বৃহস্পতিবারের ঘোষণার আগে এ কথা জানিয়েছিলেন তিনি)
বনসকণ্ঠের দীসার এক আদালত এ ব্যাপারে খতিয়ে দেখার জন্য দুজন কোর্ট কমিশনার নিয়োগ করেছে। তাঁরা দুজন কৃষকের জমিজায়গা এবং দুটি কোল্ড স্টোরেজে গিয়ে তদন্ত করবেন। আরাবল্লীর এক আদালত পাঁচজন কৃষকের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছে। আমেদাবাদের এক বাণিজ্যিক আদালত সনরকণ্ঠের চার কৃষকের এফসি ৫ জাতীয় আলুর চাষ ও বিক্রি নিষিদ্ধ করেছেন।
ইতিমধ্যে গুজরাট সরকার ঘোষণা করেছে তারা কৃষকদের পক্ষে দাঁড়াবে এবং সমস্ত মামলাতেই পক্ষ নেবে। জানা গেছে বুধবার সরকারের তরফ থেকে আদালতের বাইরে বিষয়টি মিটমাট করে নেওয়ার জন্য কোম্পানির সঙ্গে কথা বলে। এর পরেই মামলা প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করা হয়। ৯ জন কৃষকের বিরুদ্ধে করা ৬টি মামলা তুলে নিয়েছে পেপসিকো। সংস্থার আধিকারিকদের শুক্রবার সরকারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিলিত হওয়ার কথা রয়েছে।
Read the Full Story in English