এই লোকসভা ভোটে গুজরাটে ভোটদানের রেকর্ড ভেঙে গেল। ৫২ বছর আগে, ১৯৬৭ সালের নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৬৩.৭৭ শতাংশ। এতদিন সেটাই ছিল রেকর্ড। এবারের নির্বাচনে সে রেকর্ড ভেঙে গেল, ভোটদানের হার ৬৪.১১ শতাংশ। পাঁচ বছর আগে নরেন্দ্র মোদী ঢেউয়ের সময়ে প্রধানমন্ত্রীর রাজ্যে ভোট পড়েছিল ৬৩.৬৬ শতাংশ, একটুর জন্য সেবার ৬৭ সালের রেকর্ড ভাঙেনি। সেবারের ভোটে বিজেপি গুজরাট থেকে ২৬টি আসন পেয়েছিল।
এ বছর সে অর্থে কোনও নির্দিষ্ট দল বা ব্যক্তি ঢেউ না থাকা সত্ত্বেও গুজরাটের এই রেকর্ড ভোটদানের ঘটনা বিস্ময়কর। ক্ষমতাসীন বিজেপি এবং বিরোধী কংগ্রেস, দু পক্ষই দাবি করেছে এই ভোট তাদের পক্ষে যেতে চলেছে। মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণি বলেছেন, ভোটদানের এই আধিক্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঢেউয়ের ইঙ্গিতবাহী। অন্যদিকে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা ভরত সোলাঙ্কি আনন্দ কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি বলেছেন ২০১৪ সালের তুলনায় রাজ্যে কংগ্রেস ভাল ফল করবে। গুজরাটের মানুষ দলে দলে ভোট দিয়েছেন বিজেপিকে হারানোর জন্য।
কিন্তু এটা কিঞ্চিৎ অতিসরলীকরণ। সাদা চোখে দেখলে এই পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট যে রাজ্যের প্রচুর সংখ্যক মানুষ ভোট দিয়েছেন। কিন্তু একটু ভেঙে দেখলে বোঝা যাবে বর্ধিত সংখ্যক ভোটারদের ভোট সারা রাজ্যে কোনও নির্দিষ্ট একটি দিকে ধাবিত হয়েছে এমন নয়। উত্তর গুজরাটে পাক সীমান্তে বনসকণ্ঠ কেন্দ্রের কথাই ধরা যাক, সেখানে এ বছর ভোট দানের হার একলাফে ৬. ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তান সীমান্ত লাগোয়া কচ্ছ এলাকায় ২০১৪ সালের তুলনায় ভোটদানের হার কমেছে ৩.৫৬ শতাংশ। সেখানে ভোটদানের এই হ্রাসের কারণ খরা। কচ্ছের রাপার এলাকায় এবার খরাকবলিক, বহু মানুষ এ জায়গা ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছেন। এখানে ভোট পড়েছে মাত্র ৪৭.৩৭ শতাংশ। কচ্ছে সব মিলিয়ে ভোট পড়েছে ৫৮.২২ শতাংশ, যা রেকর্ড। দক্ষিণের সুরেন্দরনগর আরেকটি গ্রামীণ আসন। এখানে ভোটদানের হার কমেছে ৫ শতাংশ।
সৌরাষ্ট্রের দক্ষিণে উপকূলবর্তী পোরবন্দর এলাকায় ভোটদানের হার ২০১৪ সালের তুলনায় বেড়েছে ৪ শতাংশ, কিন্তু মোট ভোটদানের হার রাজ্যের গড় ভোটের থেকে ৮ শতাংশ কম, ৫৬.৭৯ শতাংশ।
আমরেলিতে ভোট পড়েছে সব থেকে কম, ৫৫.৭৫ শতাংশ, কিন্তু তা আবার ২০১৪ সালের থেকে ১.২৮ শতাংশ বেশি। দক্ষিণ গুজরাটের জনজাতি অধ্যুষিত এলাকা ভালসাডে ভোট পড়েছে সব থেকে বেশি ৭৫.২১ শতাংশ, যা গত লোকসভা ভোটের তুলনায় প্রায় ৩ শতাংশ বেশি।
ভারুচ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত দেদিপাড়া বিধানসভা এলাকার জনজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলে ৮৫.০১ শতাংশ ভোট পড়েছে।
এক একটি লোকসভা এলাকায় ভোটদানের হার এক এক রকম তো বটেই, এমনকি একই লোকসভা কেন্দ্রের মধ্য়েই বিভিন্ন জায়গায় ভোটদানের হারে তফাৎ পরিলক্ষিত হয়েছে।
Read the Story in English