শনিবার (২৯ অক্টোবর) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাংঘভি গুজরাটে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি (ইউসিসি) কার্যকর করার জন্য একটি কমিটি গঠনের কথা ঘোষণা করেছেন। চলতি বছরের মে মাসে, উত্তরাখণ্ড একই পথে হেঁটে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জনা দেশাইয়ের নেতৃত্বে একটি কমিটি তৈরির কথা ঘোষণা করেছে। অসম এবং হিমাচল প্রদেশ-সহ বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলো অভিন্ন দেওয়ানি বিধি লাগু করার কথা ঘোষণা করেছে।
রাজ্যের এক্তিয়ার
সংবিধান অনুযায়ী অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার বিষয়টি সম্পূর্ণ রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত। এটি বিচার্য বিষয় নয়। সম্পূর্ণ ঐচ্ছিক বিষয়। বেশ কয়েক দশক ধরে বিজেপি দেশজুড়ে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার কথা ঘোষণা করেছে। সুপ্রিম কোর্টও বেশ কিছু ক্ষেত্রে সেই সুরে সুর মিলিয়েছে।
অভিন্ন দেওয়ানি বিধি
একটি অভিন্ন দেওয়ানি বিধি গোটা দেশের জন্য একই আইনের ব্যবস্থা করবে। যেখানে সমস্ত ধর্মীয় সম্প্রদায়ের জন্য- বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ, উত্তরাধিকার, দত্তক গ্রহণ ইত্যাদি আইন একই হবে। ভারতীয় সংবিধানের ৪৪ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, রাষ্ট্র দেশজুড়ে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালুর চেষ্টা চালাবে।
নির্দেশমূলক নীতি
এই অনুচ্ছেদ ৪৪ হল রাষ্ট্রীয় নীতির নির্দেশমূলক নীতি। যা সংবিধানের চতুর্থ অংশে বর্ণিত হয়েছে। অনুচ্ছেদ ৩৭ অনুযায়ী, 'এই অংশে থাকা আইনগুলো কোনও আদালতের দ্বারা বলবৎযোগ্য না। তবে এতে বর্ণিত নির্দেশ ও নীতিগুলো মৌলিক আইন। তা বলবৎ করার দায়িত্ব রাজ্যের।'
চতুর্থ অংশ
চতুর্থ অংশে (আর্টিকেল ৩৬-৫১) অভিন্ন দেওয়ানি বিধি ছাড়া যে বিষয়গুলো রয়েছে, তা হল নাগরিকদের সমান ন্যায়বিচার, বিনামূল্যে আইনি সহায়তা নিশ্চিত করা (আর্টিকেল ৩৯এ), শিল্প পরিচালনায় শ্রমিকদের অংশগ্রহণ (আর্টিকেল ৪৩এ), কৃষি ও পশুপালন সংস্থা (আর্টিকেল ৪৮), পরিবেশের সুরক্ষা ও উন্নতি এবং বন ও বন্যপ্রাণীর সুরক্ষা (আর্ট ৪৮এ), আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রচার (আর্ট ৫১)।
আরও পড়ুন- সিওলে হ্যালোইন উৎসবে ১৫১ জনের মৃত্যু, আসলে সত্যিটা কী!
মৌলিক অধিকার ও নির্দেশমূলক নীতির মধ্যে সম্পর্ক
রাষ্ট্রীয় নির্দেশমূলক নীতিগুলো সংবিধানের মৌলিক অধিকার (পার্ট ৩, আর্টিকেল ১২-৩৫) অনুসরণ করে। মৌলিক অধিকারগুলো সংবিধানের মূল বিষয়, ন্যায়সঙ্গত বিষয় এবং আদালতে আইনত প্রয়োগযোগ্য। ১৯৮০ সালে ঐতিহাসিক মিনার্ভা মিলস রায়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, 'ভারতীয় সংবিধানের তৃতীয় অংশ (মৌলিক অধিকার) এবং চতুর্থ অংশ (নির্দেশমূলক নীতি) ভারসাম্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত। একজনের ওপর অন্যজনকে নিরঙ্কুশ প্রাধান্য দেওয়া সংবিধানের সম্প্রীতি নষ্ট করা।' অনুচ্ছেদ ৩১সি বলে যে কোনও নির্দেশমূলক নীতিমালা বাস্তবায়নের জন্য একটি আইন তৈরি করা হলে, অনুচ্ছেদ ১৪ ও ১৯-এর অধীনে মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করার জন্য তাকে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না।
Read full story in English