গালওয়ানে ভারত ও চিনের সামরিক বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের পর থেকে সব টেলিভিশন চ্যানেলে হ্যান্ড-টু-হ্যান্ড কমব্যাট বা শারীরিক সংঘর্ষ নিয়ে সবাই সোচ্চার। ভারতীয় সামরিক বাহিনীতে এর অর্থ কী তার বিশ্লেষণ রইল এখানে।
ভারতীয় সেনা সশস্ত্র বাহিনী এবং সে কারণে মূল জোর দেওয়া হয় অস্ত্রের অনুশীলনের উপর। বিভিন্ন সময়ে অস্ত্রবিহীন সংঘর্ষের ট্রেনিং দেওয়া হলেও মূল জোর থাকে অস্ত্রের উপরেই। রাইফেল, কারবাইন ও পিস্তল সব সেনা ও আধিকারিককে তো দেওয়া হয়ই, তা ছাড়াও একটি ইনফ্যানট্রি ব্যাটালিয়নে এমএমজি (মিডিয়াম মেশিন গান), এজিএল (অটোমেটিক গ্রেনেড লঞ্চার), মিসাইল লঞ্চার, রকেট লঞ্চার, ৫১ মিমি মর্টার, ৮১ মিমি মর্টার, এমজিএল (মাল্টি গ্রেনেড লঞ্চার) ইত্যাদি থাকে।
প্রত্যেক সেনা ও আধিকারিককে একটি বেয়নেট ও একটি অ্যাসল্ট রাইফেল দেওয়া হয়। খুব নিকট সংঘর্ষের সময়ে বেয়নেট ব্যবহার যাতে সঠিক ভাবে করা যায়, সে কারণে বিশেষ ট্রেনিং দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন, সীমান্তে ভারত-চিন সংঘর্ষ: পরিস্থিতি কতটা গুরুতর, এর পর কী?
সেনাবাহিনীর সমস্ত ব্যাটালিয়নের সকলকে একটি রাইফেল, একটি কার্বাইন বা সাইডআর্ম দেওয়া হয়।
ক্রমশ আধুনিকায়নের কারণে শারীরিক সংঘর্ষের ট্রেনিং ক্রমশ কমে এসেছে কারণ প্রাথমিক সংঘর্ষের উপায় এখন অস্ত্রের ব্যবহার বলেই ধরে নেওয়া হয়। সব ইউনিটই প্রস্তুত করা হয় এই অস্ত্রব্যবস্থা ঘিরে।
ইনফ্যানট্রি ব্যাটালিয়নের ঘটক প্ল্যাটুনকে অস্ত্রহীন সংঘর্ষের জন্য বিশেষ ট্রেনিং দেওয়া হয়। এ ছাড়া উগ্রপন্থা দমন ও জঙ্গল যুদ্ধের জন্যও অস্ত্রহীন সংঘর্ষের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। স্পেশাল ফোর্সও তাদের সেনাকে অস্ত্রহীন সংঘর্ষের জন্য মার্শাল আর্ট সহ বিভিন্ন টেকনিকের প্রশিক্ষণ দেয়, যার মাধ্যমে তারা শত্রুকে নিশ্চিহ্ন করতে পারে।
রুটিন হিসেবেই সমস্ত ইউনিটের মধ্যে নিয়মিত বক্সিং ও কুস্তির প্রতিযোগিতা হয়। তা শুরুই হয় ইন্টার প্ল্যাটুন, ইন্টার কোম্পানি, ইন্টার ব্যাটালিয়ন ও ফর্মেশন স্তরে।
জনতাকে নিয়ন্ত্রণের জন্য কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীকে ব্যাটন চার্জ ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, কিন্তু সেনা বাহিনীকে ডাকা হলে তারা কেবল অস্ত্রই ব্যবহার করে। সশস্ত্র বাহিনীর প্রশিক্ষণে লাঠির ব্যবহার শেখানো হয় না। সেনাবাহিনী যে কোনও দেশের প্রতিরক্ষার শেষ দুর্গ এবং সে কারণেই সমস্ত দেশের সেনাবাহিনীকে তাদের শত্রুর মোকাবিলা করার জন্য সেরা অস্ত্র দ্বারা তৈরি রাখে।