Bangladesh crisis: বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ৪৫ মিনিটের মধ্যে নিরাপত্তা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা চলে যেতে বলেছিলেন এবং তাঁকে তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় টেলিফোনে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যেতে রাজি করেছিলেন, মঙ্গলবার একটি বাংলাদেশ মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী এই তথ্য জানা গিয়েছে।
সোমবার সকালে তিনি নিরাপত্তার শীর্ষ আধিকারিকদের একটি বৈঠক ডেকেছিলেন যখন বিক্ষোভকারীরা তাঁর পদত্যাগের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের দিকে মিছিল করছিল। সারাদেশে হিংসাত্মক সংঘর্ষে ১০০ জনেরও বেশি লোক নিহত হওয়ার একদিন পর এই বৈঠক হয়।
বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় বাংলা দৈনিক প্রথম আলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “এক পর্যায়ে শেখ হাসিনা আইজিপিকে ইঙ্গিত করে বলেন, তারা (পুলিশ) ভাল করছে। তখন আইজিপি বলেন, পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে পুলিশও আর এমন কঠোর অবস্থান ধরে রাখতে পারবে না।"
আরও পড়ুন কোন সহজ কাজেই ব্রিটেনে আশ্রয় পেতেন শেখ হাসিনা? স্পষ্ট করল সেদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, বল প্রয়োগ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা আর সম্ভব হবে না। কিন্তু হাসিনা তা মানতে নারাজ। এরপর কর্মকর্তারা একটি আলাদা ঘরে হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার সঙ্গে কথা বলেন। তাঁরা তাঁকে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন এবং হাসিনাকে বোঝাতে বলেন। রেহানা তখন হাসিনার সঙ্গে কথা বললেও তিনি ক্ষমতা ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর। এরপর এক পর্যায়ে একজন শীর্ষ আধিকারিক বিদেশে থাকা হাসিনার ছেলেকে ফোন করেন। জয় তাঁর মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। এরপর হাসিনা পদত্যাগে রাজি হন। তিনি জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণ রেকর্ড করতে চেয়েছিলেন, রিপোর্টে বলা হয়েছে, হাসিনার দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার শেষ কয়েক ঘন্টা আগে কী কী হয়েছিল।
গোয়েন্দা রিপোর্টে কী বলা হয়?
“…ততক্ষণে গোয়েন্দা রিপোর্ট আসে যে বিপুল সংখ্যক পড়ুয়া শাহবাগ ও উত্তরা থেকে তাঁদের পদযাত্রা শুরু করেছে। দূরত্বের পরিপ্রেক্ষিতে শাহবাগ থেকে গণভবনে পৌঁছাতে বিক্ষোভকারীদের ৪৫ মিনিট সময় লাগবে বলে অনুমান করা হয়েছিল। একটি ভাষণ রেকর্ড করার জন্য যথেষ্ট সময় নাও থাকতে পারে। সেই বিবেচনায় শেখ হাসিনাকে কোনও ভাষণ রেকর্ড করার জন্য সময় দেওয়া হয়নি বরং ৪৫ মিনিটের মধ্যে চলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে বলা হয়েছিল।"
শেখ হাসিনার পলায়ন
এরপর শেখ হাসিনা ও বোন শেখ রেহানা তেজগাঁওয়ের পুরনো বিমানবন্দরের হেলিপ্যাডে আসেন। তাঁদের কিছু লাগেজ বোঝাই করে তাঁরা বঙ্গভবনে চলে যান। শেখ হাসিনা সেখানে তাঁর পদত্যাগের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন এবং দুপুর আড়াইটার দিকে শেখ হাসিনা ও তাঁর ছোট বোন সেনা হেলিকপ্টারে ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা হন।
ভারতীয় আকাশসীমায় প্রবেশের পর হেলিকপ্টারটি কিছুক্ষণ প্রদক্ষিণ করে এবং পরে আগরতলায় বিএসএফ হেলিপ্যাডে অবতরণ করে। সেখান থেকে তিনি দিল্লি যান এবং সোমবার সন্ধ্যায় হিন্দনে ভারতীয় সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করেন।