scorecardresearch

Explained: মমতার হাতিয়ার ‘মুড়ি’, জানুন বাঙালির প্রিয় খাদ্যের খুঁটিনাটি

মুড়িতে জিএসটি লাগু হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই দাম বাড়বে মুড়ির। যা নিয়েই সরব তৃণমূল নেত্রী।

mamata muri
২১শে জুলাইয়ের সভায় মুড়ি হাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি পার্থ পাল

মুড়ি। বাঙালির অন্যতম প্রিয় খাদ্য। শুধু এ রাজ্যেই নয়, বিভিন্ন প্রদেশে মুড়ির জনপ্রিয়তা রয়েছে। তবে ভিন্ন নামে। বিত্তবান থেকে দরিদ্র- সবস্তরের মানুষই মুড়ি খেয়ে থাকেন। এই মুড়িতেই জিএসটি লাগু হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই দাম বাড়বে মুড়ির। যা নিয়েই সরব তৃণমূল নেত্রী। ২১ জুলাইয়ের সভায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে মুড়িকেই বেছে নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দর্শকদের থেকে মুড়ির বস্তা নিয়ে তা একটি ট্রে-তে ঢেলে মমতা প্রশ্ন করেন, ‘কেন মুড়িতে জিএসটি চালু হবে? আমাদের মুড়ি ফিরিয়ে দাও।’

বাংলায় মুড়ির গুরুত্ব

কলকাতা হোক বা বাংলার যেকোনও প্রান্তের পথে-ঘাটে মুড়ির বিক্রেতাদের খোঁজ মেলে। এছাড়া, দূরপাল্লার বাসে বা ট্রেনেও মুড়ি বিক্রেতাদের রমরমা।

কুচনো পেঁয়াজ, লঙ্কা, ধনেপাতা কুচো, বাদাম, টমেটো, ঝুরি ভাজা ও অল্প সরষের তেল দিয়ে স্টিলের পাত্রে মুড়ি মাখা খিদের সময় বা অবসরে যেন অমৃত-সমান স্বাদ। এর সঙ্গে যদি, যা বাংলায় ঝাল মুড়ি নামে পরিচিত।

শুধু তাই নয়, বাঙালিরা সকালে চায়ের সঙ্গে, বা টিফিনে আলু চচ্চরির সঙ্গেও মুড়ি খেয়ে থাকে। এমনকী শুধু শুধুই মুড়ি খাওয়া যায়। পেটের গন্ডগোলেও স্বস্তির কারণ হয়ে ওঠে মুড়ি।

বাঙালির ভাঁড়ারে টিন বা প্লাসটিকের পাত্রে মুড়ির মজুতদারি খুবই পরিচিত।

মুড়ির পুষ্টিগুণ

ধানের ভাঙা অংশ ভেজে মুড়ি তৈরি হয়। তবে, কবে থেকে খাদ্য কালিকায় মুড়ি যোগ হয়েছে তা নিশ্চিৎভাবে কেউই বলতে পারেনি। জানা যায়, পঞ্চদশ শতকে বড় মুখওয়ালা হাঁড়িতে ধানের ভাঙা অংশ ভেজে তা ঈশ্বরের কাছে নিবেদন করা হত। সেকান থেকেই মুড়ির সূচনা। যা অতি সহজপাচ্য বলে বিবেচিত।

১৯৩০ নাগাদ রসায়নবিদ এবং ভারতের প্রথম ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ‘বেঙ্গল কেমিক্যালস অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালস’র প্রতিষ্ঠা শিল্পপতি প্রফুল্ল চন্দ্র রায় মুড়ির সঙ্গে বিস্কুটের পুষ্টিগুণের তুলনা করে একটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন।

উভয় খাদ্যে স্থিত ভিটামিনের তুল্যমূল্য বিচারে বিস্কুটের চেয়ে মুড়ির গুণগত মান অনেক বেশি বলে উল্লেখ ছিল।

বাংলার বাইরে মুড়ির ব্যবহার

শুধু বাংলাতেই নয়, মুড়ির জনপ্রিয়তা মোটের উপর দেশব্যাপী। ভেল পুরি-র জনপ্রিয়তা সর্বজনবিদিত। মুড়ি অন্ধ্র প্রদেশের ‘মুন্থা মসলা’, কোলহাপুরের ‘ভদাং মুরমুরা’ এবং ওড়িশায় ‘মুরি মসলা’ নামে পরিচিত।

ইতিহাসের পাতায় উল্লেখ রয়েছে ময়ূরভঞ্জের ‘মুড়ি মনসা’ পদের। মাটির পাত্রে ধীরে ধীরে রান্না করা মটন কারি এবং মুড়ি এবং সবুজ লঙ্কার যোগে বানানো একটি সুস্বাদু পদ। জানা যায়, কলিঙ্গের সঙ্গে যুদ্ধের পরে অশোকের রান্নাঘরে সুস্বাদু এই খাদ্যের প্রবেশ ঘটেছিল।

মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে মুড়িকেই অন্যতম অস্ত্র হিসাবে বেছে নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সফল হবেন তৃণমূল নেত্রী? আপাতত তা নিয়েই কাটাছেঁড়া চলছে।

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Explained news download Indian Express Bengali App.

Web Title: History and culture of eating muri