সময়টা ২০১৩ সালের মে মাস। একাধিক দুর্নীতি কেলেঙ্কারিতে জর্জরিত ইউপিএ সরকার। সুপ্রিম কোর্ট সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই) সম্পর্কে একটি পর্যবেক্ষণ করেছিল। যা তখন থেকে এই সংস্থার সঙ্গে যেন স্টিকারের মত সেঁটে আছে। বিচারপতি আরএম লোধার নেতৃত্বাধীন একটি বেঞ্চ সেই সময় বলেছিল যে সিবিআই হল, 'একটি খাঁচাবন্দি তোতাপাখি যে তার মালিকের সুরে কথা বলে'।
বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন
কয়লার ব্লক বরাদ্দ করেছিল সরকার। সেই বরাদ্দ সংক্রান্ত মামলার তদন্ত করছিল সিবিআই। সেই তদন্তে সরকারের হস্তক্ষেপের প্রেক্ষাপটে এই পর্যবেক্ষণ করেছিল শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ। তবে, এবারই প্রথম নয়। এর আগেও সুপ্রিম কোর্ট সিবিআইয়ের 'সক্রিয়তা এবং নিষ্ক্রিয়তার' জন্য বেশ কয়েকবার সমালোচিত হয়েছে। যা এই সংস্থার গ্রহণযোগ্যতাকেও প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে।
বারবার সমালোচিত
চলতি বছরের ১ এপ্রিল সিবিআইয়ের এক অনুষ্ঠানে ডিপি কোহলি স্মারক বক্তৃতা দেওয়ার সময়, তৎকালীন প্রধান বিচারপতি (সিজেআই) এনভি রমনাও এনিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে সিবিআই জনগণের সবচেয়ে বিশ্বস্ত হওয়ার বদলে জনসাধারণের গভীর তদন্তের বিষয় হয়ে গিয়েছে। বিচারপতি রমনা বলেছিলেন, 'যখন সিবিআইয়ের কথা আসে, তখন এটি প্রাথমিক পর্যায়ে জনগণের অগাধ আস্থার অধিকারী ছিল। কিন্তু, সময়ের সঙ্গে, অন্যান্য খ্যাতিমান প্রতিষ্ঠানের মতো সিবিআইও জনসাধারণের গভীর তদন্তের বিষয় হয়ে উঠেছে। এর ক্রিয়াকলাপ এবং নিষ্ক্রিয়তা কিছু ক্ষেত্রে এর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে।' এর আগে ২০১৯ সালের গোড়ার দিকে, তৎকালীন সিজেআই রঞ্জন গগৈও- 'রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল' ক্ষেত্রে সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।
আরও পড়ুন- SFI-DYFI-এর ইনসাফ সভা: ধর্মতলায় থিকথিকে ভিড়, সভা ২১ জুলাইয়ের জায়গায়
পদ্ধতি ঠিক করার চেষ্টা
সিবিআই এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর মতো প্রথমসারির তদন্ত সংস্থাগুলোকে সরকার এবং রাজনৈতিক দলের কবল থেকে মুক্ত করার লড়াই ১৯৯০ সাল থেকেই চলছে। সুপ্রিম কোর্টের ১৯৯৭ সালের ঐতিহাসিক বিনীত নারাইন বনাম কেন্দ্র মামলায় এনিয়ে বিশদভাবে বলা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট সিবিআই ডিরেক্টরের মেয়াদ দুই বছর নির্ধারণ করেছে। সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশনকে (সিভিসি) বিধিবদ্ধ মর্যাদা দিয়েছে। পাশাপাশি, শর্ত দিয়েছে যে সিভিসির নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকারের শীর্ষ সচিব-সহ একটি প্যানেল তৈরি হবে, যা ইডির ডিরেক্টর নির্বাচন করবে।
নিয়োগ পদ্ধতি এড়ানোর অভিযোগ
লোকপাল আইন, ২০১৩ অনুযায়ী সিবিআই ডিরেক্টর নির্বাচিত হওয়া উচিত সর্বসম্মতিক্রমে বা সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি সার্চ কমিটি এবং বিরোধী দলের নেতা ও সিজেআই অথবা তাঁর প্রতিনিধি প্রার্থী তালিকা থেকে বেছে নেবেন সিবিআই ডিরেক্টরকে। তালিকা তৈরি করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তালিকা পরীক্ষা করবে কর্মী ও প্রশিক্ষণ বর্গ মন্ত্রক। কিন্তু, সেই নিয়ম বারবার লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
Read full story in English