Advertisment

Explained: হোলিতে বৃন্দাবনের বিধবাদের মুখে হাসি

শ্রীচৈতন্যের পথ ধরেই বৃন্দাবনে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Bridaban_Widow

বৃন্দাবন, এখানেই শ্রীকৃষ্ণ তাঁর শৈশব কাটিয়েছেন বলে মনে করা হয়। এই বৃন্দাবন শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বহু হিন্দু বিধবা মহিলার আশ্রয়স্থল। সমাজ তাঁদের এড়িয়ে গিয়েছেন। আর, তাঁরা পড়ে রয়েছেন এখানে। বৃন্দাবনের বিধবারা কঠিন জীবনযাপন করেন। বাঁচার জন্য তাঁদের নির্ভর করতে হয় বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা, পবিত্র শহরের বিভিন্ন মন্দির ও আশ্রমের ওপর।

Advertisment

উচ্চবর্ণের বিধবারা অত্যাচারের শিকার

উচ্চবর্ণের বিধবা হওয়া যেন এক কলঙ্ক। সতীদাহ প্রথা থেকে শুরু করে শুভ অনুষ্ঠানে বিধবাদের উপস্থিতিতে নিষেধাজ্ঞা। এমন নানা বিধিনিষেধ রয়েছে বিধবাদের ওপর। স্বামী হারানোর পর বিধবা হলেই যেন সামাজিক অবস্থান দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। বিধবারা সাদা পোশাক পরে চরম তপস্যার জীবন যাপন করবেন বলে যেন ধরেই নেওয়া হয়। মনে করা হয়, 'ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি'ই তাঁদের জীবনের প্রধান লক্ষ্য হবে।'

পরিবারের কারণে বৃন্দাবনে

বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে বিধবাদের জন্য পরিবার কোনও অর্থ খরচ করতে চায় না। যার জেরে বিধবা মহিলারা হামেশাই বারাণসী বা বৃন্দাবনের মত পবিত্র স্থানগুলোয় আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। তবুও প্রতিবছর, হোলি বৃন্দাবনের বিধবাদের কঠোর জীবনে কিছু রঙ নিয়ে আসে। ঐতিহ্যগতভাবে উত্সবে বিধবাদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ। কিন্তু, আজকাল হোলি এমন একটি উত্সব হয়ে উঠেছে যেখানে বিধবারা আনন্দের জন্য সেই প্রথা এবং ঐতিহ্যকে এড়িয়ে চলেন।

বৃন্দাবনের বিধবা

১৯৯৮ সালে বৃন্দাবনের এক বিধবা, 'দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস'কে বলেছিলেন, 'আমাদের এরকমই জীবন। এর মধ্যেই আমাদের বাঁচতে হবে। আরও ভালো কিছুর আশা রাখতে হবে।' আজ হাজার হাজার বিধবা বৃন্দাবনে বাস করেন। তাঁদের অধিকাংশই আবার বাংলার। ২০১০ সালে জাতীয় মহিলা কমিশনের সমীক্ষায় ধরা পড়েছে, বৃন্দাবনে যত বিধবা বাস করেন, তাঁদের ৭৪ শতাংশই বাংলার।

আরও পড়ুন- রঙের উৎসব: কীভাবে হোলি সংস্কৃতির সঙ্গে মিশেছে?

চৈতন্যই এনেছিলেন বৃন্দাবনে

মনে করা হয় যে ষোড়শ শতকের পূর্বে সমাজ সংস্কারক শ্রীচৈতন্যদেব সতীদাহ প্রথা থেকে বাঁচাতে বাঙালি বিধবাদের একটি দলকে বৃন্দাবনে নিয়ে এসেছিলেন। তারপর থেকেই দলে দলে বিধবারা বৃন্দাবনে জড় হতে শুরু করেন। সতীদাহ প্রথা বন্ধ হলেও, বাঙালি বিধবাদের কিন্তু বৃন্দাবনমুখী হওয়া দূর হয়নি। এর মধ্যে কিছু বিধবা এসেছেন পালিয়ে। কিছু এসেছেন বাড়ির শারীরিক এবং মানসিক নিগ্রহ থেকে রেহাই পেতে। আর, বাকিদের পরিবারের লোকজনই স্রেফ বৃন্দাবনে ফেলে রেখে পালিয়ে গিয়েছেন।

Hindu holi colours
Advertisment