সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে ভয়াবহ কম্পনে ঘুম ভেঙেছে তুরস্কের। অনেকেই ঘুম ভাঙার আগে চিরঘুমে ঢলে পড়েছেন। ১,৩০০ জনের প্রাণহানির পরও মৃত্যুমিছিল থামছে না। এখনও অনেকে ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে আছেন। যাঁদের উদ্ধার করা গিয়েছে, তাঁদেরও অনেকে গুরুতর আহত। সংখ্যাটা অন্তত ১,০০০। ফলে, মৃতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা চূড়ান্ত। শুধু দক্ষিণ-মধ্য তুরস্কই না, উত্তর-পশ্চিম সিরিয়াও কেঁপেছে ওই কম্পনে। এখনও ধ্বংসস্তূপের চেহারা নিয়ে বহু বাড়ি ওই অঞ্চলে দাঁড়িয়ে আছে। আচমকা চাহিদার পরিমাণ এত বেড়ে গেছে যে আহতদের চিকিৎসা আর ঘরহারাদের ত্রাণের ব্যবস্থা করতে গিয়ে রীতিমতো নাকানিচোবানি খেতে হচ্ছে প্রশাসনকে।
জীবনে এত জোরে কম্পনের সাক্ষী হননি অনেকেই। যাঁরা বেঁচে গিয়েছেন, এখনও কম্পনের আতঙ্ক তাঁদের মনে জেগে আছে। মনে হচ্ছে যেন এইমাত্র কোনও ঘটনা। তুরস্কের গাজিয়ানতেপের বাসিন্দা আরডেন। এই গাজিয়ানতেপ আবার ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছাকাছি এলাকা। বছর ৪০-এর আরডেন যেমন বিশ্বাসই করতে পারছেন না, তিনি বেঁচে আছেন। সাংবাদিকদের বললেন, 'আমি গত ৪০ বছরে এমন ভূমিকম্প দেখিনি।' তুরস্ক এবং সিরিয়ার বিভিন্ন এলাকা এমনিতে ভূমিকম্পপ্রবণ। তাই কম্পনের অভিজ্ঞতা আছে অনেকেরই। কিন্তু, এমন ভয়াবহ ভূমিকম্প! সোশ্যাল মিডিয়ায় যেটুকু ছবি বেড়িয়েছে, তা দেখেই আত্মারাম খাঁচাছাড়া হয়ে গিয়েছে অনেকের। দেখা যাচ্ছে, কীভাবে যেন দেশলাইয়ের তৈরি বাড়ির মত করে ভেঙে পড়ছে আস্ত বহুতল।
আরও পড়ুন- লাল মসজিদে অভিযান মুশারফের জীবন ছারখার করে দিয়েছিল, কিন্তু কীভাবে?
আরডেনরা খুব একটা ভুল বলছেন না। গত ১,৯০০ বছরে এই নিয়ে দু'বার মাত্র ৭.৮ মাত্রার কম্পনের সাক্ষী হল তুরস্ক। এর আগে ১৯৩৯-এর ডিসেম্বরে উত্তর-পূর্ব তুরস্ক দেখেছিল এমনই ভূমিকম্প। সেবারও মৃত্যুর সংখ্যাটা পৌঁছে গিয়েছিল ৩০ হাজারে। হবে না-ই বা কেন? ৭.৮ তো সবকিছু ওলটপালট করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। এমনটাই জানিয়েছেন লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের সিসমোলজির গবেষক স্টিফেন হিকস। মার্কিন জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, এবারে কম্পনের কেন্দ্রস্থল ছিল গাজিয়ানতেপ থেকে ৩৩ কিলোমিটার দূরে। ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৮ কিলোমিটার গভীরে।
Read full story in English