Advertisment

Uttarakhand forest fire: শুধু গাছ কাটাই নয়, দাবানলের জন্যও ভারসাম্য হারাচ্ছে প্রকৃতি! ভারতের পরিস্থিতিটা কেমন?

Forest fire cause: অধিকাংশ আগুনই মানবসৃষ্ট বলে মনে করা হয়। কারণ কৃষির পরিবর্তন এবং ভূমি-ব্যবহারের ধরণ ইতিমধ্যেই বদলেছে। বন বিভাগ এর আগে উত্তরাখণ্ডে দাবানলের চারটি কারণ উল্লেখ করেছে। সেগুলো হল– স্থানীয়দের দ্বারা ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন লাগানো, অসাবধানতায় আগুন লেগে যাওয়া, কৃষি-সম্পর্কিত কার্যকলাপ এবং প্রাকৃতিক কারণ।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Fire, Uttarakhand

Fire-Uttarakhand: ২০১৮ সালে উত্তরাখণ্ডের চাম্বায় বনভূমিতে অগ্নিকাণ্ডের দৃশ্য। (এক্সপ্রেস ছবি- প্রবীণ খান্না)

Fires caused and how frequent are they in India: উত্তরাখণ্ডের নৈনিতালে বনভূমিতে শনিবার আগুন লেগেছে। রবিবার, ২৮ এপ্রিল থেকে ভারতীয় বায়ুসেনা আগুন নেভানোর জন্য পুরোদস্তুর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর- নৈনিতাল, হলদোয়ানি, রামনগরের বনবিভাগ অগ্নিকাণ্ডে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে হেলিকপ্টারে করে আগুনের ওপর জল ছিটানো হচ্ছে। লাগাতার সম্ভব না হলে, কিছুক্ষণ বিরতির পরপরই জল ঢালার কাজ চলছে। আগুন লাগার প্রকৃত কারণ এখনও জানা যায়নি।

Advertisment

ভারতে বনাঞ্চলে কত ঘনঘন আগুন লাগে?

অতীতের নজির অনুযায়ী, ভারতে নভেম্বর থেকে জুনের মধ্যেই সাধারণত দাবানল ছড়ায়। তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত, গাছপালা এবং আর্দ্রতার মত বিষয়গুলো এক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, মূলত তিনটি কারণে দাবানল ছড়ায়। সেগুলো হল- গাছগুলো শুকনো হয়ে পড়লে। পাশাপাশি অক্সিজেন এবং তাপমাত্রার কারণেও দাবানল ছড়ায়। গাছের শুকনো পাতা দাবানল ছড়াতে সাহায্য করে। ফরেস্ট সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (এফএসআই) ওয়েবসাইট অনুযায়ী, ভারতের প্রায় ৩৬ শতাংশ বনে ঘনঘন দাবানল ছড়াতে পারে। শীতের শেষে এবং গ্রীষ্মের মধ্যের সময়ে শুষ্ক জৈববস্তু বেশি পাওয়া যায়। আর, সেই কারণেই মার্চ, এপ্রিল এবং মে মাসে অগ্নিকাণ্ড বেশি ছড়ায়।

ভারতের যে অঞ্চলগুলোয় বেশি আগুন লাগে

এফএসআই ওয়েবসাইট অনুযায়ী, 'মূলত বনাঞ্চলেই দাবানল মারাত্মক আকারে ছড়ায়। বিশেষ করে শুষ্ক পর্ণমোচি বন, যেখানে চিরসবুজ, আধা-চিরসবুজ এবং পাহাড়ি নাতিশীতোষ্ণ বন রয়েছে। ইন্ডিয়া স্টেট অফ ফরেস্ট রিপোর্ট (আইএসএফআর), ২০১৫ অনুযায়ী দেশের প্রায় ৪% বনভূমিতে আগুন ছড়ানোর প্রবণতা বেশি। আইএসএফআর ২০১৯ অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের বনাঞ্চলের ৬% অত্যন্ত অগ্নিপ্রবণ। আবার, আইএসএফআর ২০২১ অনুযায়ী, উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলো বনে আগুনের প্রবণতা সর্বোচ্চ। এছাড়াও পশ্চিম মহারাষ্ট্রের কিছু অংশ, দক্ষিণ ছত্তিশগড়, মধ্য ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা এবং কর্ণাটকের বনাঞ্চলেও দাবানলের প্রবণতা বেশ বেশি।

বনে আগুন লাগার কারণ

অধিকাংশ আগুনই মানবসৃষ্ট বলে মনে করা হয়। কারণ কৃষির পরিবর্তন এবং ভূমি-ব্যবহারের ধরণ ইতিমধ্যেই বদলেছে। বন বিভাগ এর আগে উত্তরাখণ্ডে দাবানলের চারটি কারণ উল্লেখ করেছে। সেগুলো হল– স্থানীয়দের দ্বারা ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন লাগানো, অসাবধানতায় আগুন লেগে যাওয়া, কৃষি-সম্পর্কিত কার্যকলাপ এবং প্রাকৃতিক কারণ। একটি সরকারি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয়রা ভালো মানের ঘাস পাওয়ার জন্য, অবৈধভাবে গাছ কাটার জন্য আর চোরাশিকারের জন্য বনে আগুন লাগিয়ে দেয়। রিপোর্টে বলা হয়েছে, শুকনো পাতার সঙ্গে বিদ্যুতের তারের ঘর্ষণেও বজ্রপাতের মতো দাবানল ছড়ায়। যদিও, জঙ্গলে আগুন দেওয়া ভারতীয় দণ্ডবিধির অধীনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। একজন বন আধিকারিক বলেছেন, এই ব্যাপারে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অভিযুক্তদের ধরা যায়নি।

আরও পড়ুন- ভোটলুঠ থেকে বুথদখল, হাজারো শব্দ নির্বাচনে ফিরে আসে! কিন্তু, আইনে কী আছে জানেন?

কীভাবে বনের আগুন প্রতিরোধ করা হয় বা নিবারণ করা হয়?

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রক (এমওইএফসিসি) বনের আগুন প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলি ব্যবহার করে। সেগুলো হল: প্রাথমিক সনাক্তকরণের জন্য ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ। অগ্নি পরিদর্শকদের মোতায়েন। স্থানীয় বাসিন্দাদের বন রক্ষণাবেক্ষণে যুক্ত করা। ফায়ার লাইন চিহ্নিত করা। সেই জায়গাগুলো রক্ষণাবেক্ষণ। ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (এনডিএমএ) ওয়েবসাইটের মতে, দুই ধরনের ফায়ার লাইন রয়েছে– কভার ফায়ার লাইন এবং ওপেন ফায়ার লাইন। কভার ফায়ার লাইনে, গাছপালা এবং ঝোপঝাড় সরিয়ে ফেলা হয়। জ্বালানির সমস্যা কমাতে গাছের আশপাশ থেকে জঙ্গল পরিষ্কার করা হয়। ওপেন ফায়ার লাইনে, দাবানল রুখতে বন বা বনাঞ্চলকে আলাদাভাবে সংরক্ষণ করা হয়। এফএসআই ওয়েবসাইট অনুযায়ী, 'দাবানল রুখতে স্যাটেলাইট ভিত্তিক রিমোট সেন্সিং প্রযুক্তি এবং জিআইএস সরঞ্জামগুলো অগ্নিপ্রবণ এলাকায় ব্যবহার করা হয়েছে। যা প্রাথমিক সতর্কতা তৈরি করেছে। পাশাপাশি, বিভিন্ন সময়ে আগুন নিরীক্ষণ করা হচ্ছে। পোড়া দাগ চিহ্নিত করে আগুন প্রতিরোধে আরও ভালো ব্যবস্থা করা হয়েছে।'

Maharastra Andhra Pradesh indian air force Uttarakhand fire
Advertisment