Advertisment

'করোনা'ই এবার বদলে গেল! শক্তি বৃদ্ধি করে নয়া রূপ কোভিডের

দেখা গিয়েছে মানবদেহে প্রবেশ করে নিজের এই করোনা 'স্টাইল'কে বদলে দিচ্ছে ভাইরাস। বরং স্পাইককে গুটিয়ে দিয়ে 'চুলের কাঁটার' (হেয়ারপিন স্ট্রাকচার) আকার নিচ্ছে সে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

নতুন রূপে করোনা

বিশ্বে নিজের ক্ষমতা প্রদর্শনের সময় থেকেই ক্ষণে ক্ষণে রূপ বদলেছে সারস-কোভ-২ (SARS-CoV-2)। যে কারণে এই ভাইরাসের নাম করোনাভাইরাস সেই 'করোনা'ই এবার বদলে গেল। এই ভাইরাসের যে ছবি ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপে দেখা যেত তা হল ভাইরাসের বাইরের অংশে স্পাইকের মতো বলয়। যাকে সূর্যের করোনা বলয়ের সঙ্গে তুলনাও করা হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি যে তথ্য প্রকাশ পেয়েছে তা ঘুম উড়িয়েছে গবেষক মহলের। দেখা গিয়েছে মানবদেহে প্রবেশ করে নিজের এই করোনা 'স্টাইল'কে বদলে দিচ্ছে ভাইরাস। বরং স্পাইককে গুটিয়ে দিয়ে 'চুলের কাঁটার' (হেয়ারপিন স্ট্রাকচার) আকার নিচ্ছে সে।

Advertisment

এই স্পাইক প্রোটিন আসলে কী?

ভাইরাসের বিশাল জগতে করোনা স্বাতন্ত্র্য তাঁর এই স্পাইক প্রোটিন চরিত্রের জন্য। আর শক্তিবৃদ্ধির নেপথ্যেও এই রূপ। ভাইরাসটি বাইরের আবরণে কাঁটার মতো প্রোটিনের একটি আস্তরণ রয়েছে। যাকে দেখতে অনেকটা মুকুটের মত। এই গ্লাইকোপ্রোটিনই হল করোনার স্পাইক প্রোটিন। মনে হতেই পারে কেন এত গুরুত্বপূর্ণ এই স্পাইক? আসলে মানবদেহে প্রবেশ করে এই স্পাইক প্রোটিনই কোষের দেওয়ালের অ্যাসিটাইলকোলিন-২ রিসেপ্টরের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়ে কোষের মধ্যে প্রবেশ করে। এরপর সেখানে নিজের জিনের উপাদানগুলি ছড়িয়ে দিয়ে একাধিক ভাইরাস তৈরি করে।

publive-image করোনার রূপ পরিবর্তন

নতুন গবেষণায় কী জানতে পারা গিয়েছে?

ক্রায়োজেনিক ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ (cryo-EM) পদ্ধতি ব্যবহার করে ডাঃ বিং চেন এবং সহকারীরা দু'রকমের ছবি তোলেন ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের। একটি দেহে প্রবেশের আগে (Prefusion state) এবং অপরটি কোষ প্রোটিনের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতানোর সময় (Postfusion state)। আর এই ছবিতে ধরা পড়ল ভাইরাসটির এক নাটকীয় পরিবর্তনের। দেখা যাচ্ছে অ্যাসিটাইল কোলিন রিসেপ্টরের সঙ্গে কাজ করার সময় বদলে যাচ্ছে করোনাই সেই স্পাইক রূপ। পরিবর্তে হেয়ার পিনের আকার নিচ্ছে এই ভাইরাস। গবেষকদের মত ভ্যাকসিন আবিষ্কারের আগে এই রূপ পরিবর্তনের খবর জানা প্রয়োজন ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারকদের।

আরও পড়ুন, করোনায় অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের কামাল! জানুন ঠিক কী করবে এই ভ্যাকসিন

এই রূপ পরিবর্তনের অর্থ কী হতে পারে?

ডা: চেন বলেন যেহেতু এটি আরএনএ ভাইরাস তাই এর চরিত্র বদল সম্ভব। কিন্তু রূপে বদলের বিষয়টি এই প্রথম।এর ফলে যেটা হবে সারস-কোভ-২ ভাইরাসকে ভেঙে ফেলা খুব কঠিন হবে। স্টাডিতে দেখা যাচ্ছে এর ফলে ভাইরাসের কার্যকারীতা অনেকদিন থেকে যাচ্ছে শরীরে। গবেষকদের তরফে মনে করা হচ্ছে এই নয়া রূপ মানবদেহের সহজাত রোগপ্রতিরোধী ক্ষমতাকে আটকে দিচ্ছে। যা চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে করোনা ঝড়ের এই আবহে।

দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের পাঠানো মেইলের জবাবে ডা: চেন বলেন, "এই পোস্টফিউশন স্টেটের যে ভাইরাসের চেহারা তাঁকে আটকাতে পারছে না অ্যান্টিবডি। অনেকটা এভাবেই কাজ করে এইচআইভি ভাইরাস।" বর্তমানে এই স্পাইক প্রোটিনের বিষয়টি মাথায় রেখেই শুরু হয়েছে ভ্যাকসিন তৈরির কাজ। সেই আবহে এই আবিষ্কার নিঃসন্দেহে কার্যকরী ভূমিকা নেবে এমনটাই মত বিজ্ঞানীমহলের।

Read the story in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

coronavirus COVID-19
Advertisment