ওড়িশার বাহানাগা বাজার স্টেশনে রেল দুর্ঘটনার দু'দিন পরেও, কীভাবে ট্র্যাজেডিটি ঘটল, তা স্পষ্ট নয়। রেল কর্তৃপক্ষের বিবৃতিতে দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়নি। তার মধ্যেই মৃতের সংখ্যা ২৮৮ তে পৌঁছেছে। আহত প্রায় ১,০০০ জন।
বাহানাগা বাজারের রেলপথ
চেন্নাইয়ের দিকে রয়েছে আপ মেন লাইন। হাওড়ার দিকে আছে ডাউন মেন লাইন। এছাড়া দুই পাশে দুটো লুপ লাইন আছে। এই লুপ লাইনের উদ্দেশ্য হল, একটি ট্রেনকে পাশে দাঁড় করানো, যাতে গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনের জন্য মূল লাইনটি পরিষ্কার থাকে। করমণ্ডল কাছে আসার সঙ্গে সঙ্গেই লুপ লাইনে আপের দিকে যাওয়া একটি মালগাড়ি ঢুকে গিয়েছিল। করমণ্ডলের যাওয়ার কথা ছিল মেইন লাইন দিয়ে।
ভুলটা কী হয়েছে?
রেল কর্তৃপক্ষের জারি করা দুর্ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ অনুযায়ী, আপ ট্রেন নম্বর ১২৮৪১ আপ মেইন লাইনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল। সেই সময় তা মালগাড়িতে ধাক্কা মারে। ট্রেনটির ফুল স্পিড ছিল। কারণ, বাহানাগা বাজার স্টেশনে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দাঁড়ানোর কথা ছিল না। এই বিবরণ থেকেই স্পষ্ট যে, করমণ্ডল এক্সপ্রেস মেইন লাইনের বদলে লুপ লাইনে ঢুকে পড়েছিল। আর, মালগাড়িতে ধাক্কা মেরেছিল। দুর্ঘটনাস্থলের ছবিতেও দেখা গিয়েছে যে করমণ্ডলের ইঞ্জিন মালগাড়ির ওপরে উঠে গিয়েছে।
কিন্তু, এটা কীভাবে সম্ভব?
ট্রেন চালকরা সিগনাল দেখে ট্রেন চালান। বিশেষ করে অন্ধকারে তাঁরা রেলপথে যে সিগনাল দেখেন, সেই দেখেই ট্রেন চালান। রেলের একটি সূত্রের খবর, সেই সিগনালিংয়ে গন্ডগোল ছিল। তদন্তকারীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর অনুমান করছেন যে করমণ্ডলকে প্রথমে মেইন লাইনের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার জন্য সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, তারপর সিগনাল বদলানো হয়। যার ফলে, ট্রেনটি দ্রুতগতিতে লুপ লাইনে ঢুকে পড়ে আর মালগাড়িতে ধাক্কা মারে।
আরও পড়ুন- বালাসোর ট্রেন দুর্ঘটনা নাশকতা, নাকি ‘ত্রুটি’? কী বলছে রেল মন্ত্রক?
দুর্ঘটনা এড়াতে চালক কিছু করেননি?
তদন্তকারীরা সিগনালিংয়ের পাশাপাশি চালকেরও দোষ দেখছেন। কিন্তু, তারপরও মনে রাখতে হবে যে ট্রেনগুলো ইস্পাতের তৈরি। শক্তিশালী ইঞ্জিন দ্বারা চালিত। রেলের বিবরণেই বলা হয়েছে যে করমণ্ডল পূর্ণ গতিতে যাচ্ছিল। যার অর্থ, ঘণ্টায় প্রায় ১০০ কিলোমিটার গতিতে ছিল সেই সময়। তখন চালক যদি ইমারজেন্সি ব্রেকও ব্যবহার করতেন, ট্রেনটি সম্ভবত কয়েক কিলোমিটারের আগে থামত না।