Advertisment

Election Results 2019: স্ট্রং রুম থেকে বুথ পর্যন্ত কী ভাবে আনা-নেওয়া করা হয় ইভিএম

ইভিএম-এর যাতায়াত নিয়ে বেশ কিছু বিতর্ক সামনে এসেছে। এর মাঝেই দেখে নেওয়া যাক ইভিএম কোথায় রাখা হয়, কী ভাবে নিয়ে যাওয়া হয়, নিরাপত্তার জন্যই বা কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
EVM

২২টি বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করেন

লোকসভা ভোটের আগে ইভিএমের নিরাপত্তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার ২২টি বিরোধী দল ইভিএমের সন্দেহজনক স্থানান্তরের কয়েকটি রিপোর্টের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়। ইভিএমের অদলবদল নিয়ে অভিযোগ অস্বীকার করেছে নির্বাচন কমিশন। ইভিএম স্ট্রং রুম থেকে বুথে কী ভাবে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখান থেকে আবার কীভাবে স্ট্রং রুমে ফিরিয়ে আনা হয়, দেখে নিন বিস্তারিত-

Advertisment

 যখন ভোট নেই

একটি জেলায় সমস্ত ইভিএম সাধারণ ভাবে ট্রেজারি বা কোনও গুদামে রাখা হয়ে থাকে। এর তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকেন জেলা নির্বাচনী আধিকারিক। জায়গা না পাওয়া গেলে এর ব্যাতিক্রম হতে পারে, কিন্তু যে ট্রেজারি বা ওয়ারহাউসেই ইভিএম রাখা হোক না কেন, তা তহশিল পর্যায়ের নিচে হতে পারে না। ওয়ারহাউসে একাধিক তালাবন্দি রাখা হয়, ২৪ ঘণ্টা সেখানে পুলিশ বা নিরাপত্তারক্ষীর প্রহরা থাকে, এবং একই সঙ্গে থাকে সিসিটিভির নজরদারি। ভোটহীন পর্যায়ে,  নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ ছাড়া কোনও ইভিএম বাইরে বের করা যায় না। প্রথম পর্যায়ে ইভিএম পরীক্ষা ইঞ্জিনয়ররা এখানেই করে থাকেন। সেখানে হাজির থাকেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা।

ভোটের সময়ে

নির্বাচনের দিন এগিয়ে এলে একটি লোকসভার অন্তর্গত বিভিন্ন বিধানসভার জন্য যদৃচ্ছভাবে ইভিএম বরাদ্দ করা হয়। এর জন্য একটি সফটওয়ার ব্যবহার করা হয়। বরাদ্দকরণের প্রক্রিয়া হয় দলীয় প্রতিনিধিদের সামনেই। যদি প্রতিনিধিরা অনুপস্থিত থাকেন, তবে ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট মেশিনের তালিকা দলীয় দফতরে পাঠানো হয়। এই সময় থেকেই প্রতিটি বিধানসভা এলাকার রিটার্নিং অফিসাররা বরাদ্দ হওয়া মেশিনের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন এবং নির্দিষ্ট স্ট্রং রুমে সেগুলিকে মজুত করার বন্দোবস্ত করেন।

ইভিএম নির্দিষ্ট বুথে পাঠানো হয় দলীয় প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে। নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে প্রার্থীদের বলা হয় যে মেশিন নাম্বারগুলি পোলিং এজেন্টদের কাছে পাঠাতে যাতে তাঁরা মেশিনগুলি ভোট শুরুর আগে চিহ্নিত করতে পারেন।

সমস্ত মেশিন তৈরি হয়ে যাওয়ার পর স্ট্রং রুম সিল করে দেওয়া হয়। যেসব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা টান তাঁরা নিজেরাও পৃথকভাবে তালা দিয়ে দিতে পারেন। স্ট্রং রুমে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চালানো হয়, দায়িত্বে থাকে একজন সিনিয়র পুলিশ অফিসার, যাঁর পদমর্যাদা ডিএসপি-র নিচে হতে পারে না। যেখানে যেখানে সম্ভব সেখানে কেন্দ্রীয় পুলিশ বাহিনীও স্ট্রং রুমের পাহারায় থাকতে পারে।

একবার সিল হয়ে যাওয়ার পর স্ট্রং রুম খোলা যেতে পারে একটি নির্দিষ্ট তারিখ ও সময়ে। তখন পোলিং পার্টির কাছে নির্দিষ্ট বুথে ইভিএম হস্তান্তর করে দেওয়া হয়। কখন স্ট্রং রুম খোলা হবে, তার দিন তারিথ আদে থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় সমস্ত প্রার্থী ও তাঁদের ইলেকশন এজেন্টকে।

EVM সূত্র- নির্বাচন কমিশন

publive-image সূত্র- নির্বাচন কমিশন

publive-image সূত্র- নির্বাচন কমিশন

নির্দিষ্ট বুথে মেশিন বরাদ্দ করার পর কিছু অতিরিক্ত ইভিএম স্ট্রং রুম থেকে নিয়ে যাওয়া হয়, এবং সেগুলিকে বিধানসভা এলাকার একটি কেন্দ্রীয় জায়গায় রাখা হয়, যাতে ত্রুটিযুক্ত ইভিএম যত দ্রুত সম্ভব বদল করে ফেলা যায়।

মধ্যপ্রদেশে গত বছরের বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে ইভিএম সংরক্ষণ এবং তার স্থানান্তর নিয়ে অভিযোগের প্রেক্ষিতে এবারে লোকসভা ভোটে ব্যবহৃত এবং অব্যবহৃত সব ধরনের ইভিএম নেওয়া-আনার জন্য কেবলমাত্র জিপিএস সমৃদ্ধ গাড়ি ব্যবহার করা হচ্ছে। এর ফলে জেলা নির্বাচনী আধিকারিক এবং মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক ইভিএমের যাতায়াতের উপর নজর রাখতে পারছেন।

বুথ থেকে স্ট্রং রুম

ভোট শেষ হওয়ার পরই ইভিএম স্ট্রং রুমে পাঠানো হয় না। ভোটদানের হিসেব নিতে হয় প্রিসাইডিং অফিসারকে। এর একটি প্রত্যয়িত নকল দেওয়া হয় সমস্ত প্রার্থীর পোলিং এজেন্টকে। এর পর ইভিএম সিং করে দেওয়া হয়। প্রার্থী এবং তাঁদের এজেন্টরা সিয়ের উপর স্বাক্ষর করতে পারেন, যাতে প্রয়োজনে ইভিএমে কারচুপি হলে সে স্বাক্ষর তাঁরা মিলিয়ে নিতে পারেন। প্রার্থী অথবা তাঁদের প্রতিনিধিরা বুথ থেকে স্ট্রং রুম অবধি গাড়ি অনুসরণ করতে পারেন। সাধারণত স্ট্রং রুম হয় গণনা কেন্দ্রের কাছাকাছি।

ভোটে ব্যবহৃত ইভিএম এবং রিজার্ভে রাখা অতিরিক্ত ইভিএম একই সঙ্গে ফিরিয়ে আনা হয়। একবার ব্যবহৃত ইভিএম পৌঁছে গেলে প্রার্থী বা তাঁর প্রতিনিধির উপস্থিতিতে স্ট্রং রুম সিল করে দেওয়া হয়। এবারেও প্রয়োজন বোধ করলে প্রার্থী বা তাঁর প্রতিনিধিরা সিলের উপর স্বাক্ষর করতে পারেন। এমনকি তাঁরা ২৪ ঘণ্টা স্ট্রং রুমের উপর নজরও রাখতে পারেন।

একবার সিল করার পর ভোটগণনার দিন সকালের আগে স্ট্রং রুম আর খোলা যায় না। যদি স্ট্রং রুম অনিবার্য কারণে খুলতেই হয় তাহলে তা খোলা যায় প্রার্থী বা তাঁর প্রতিনিধির উপস্থিতিতে, যাঁরা আবার স্ট্রং রুম সিল করার সময়ে নিজেদের মত করে ফের তালা দিতে পারেন বা সিল করতে পারেন।

স্ট্রং রুম পাহারা দেওয়ার জন্য তৈরি করা হয় তিন বলয়ের নিরাপত্তা। মধ্যবর্তী বলয়ে থাকে কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী। ভোটের ফলের দিন, গণনা শুরু হয় প্রার্থী বা তাঁর পোলিং এজেন্ট মেশিন নম্বর এবং সিল পরীক্ষা করার পর।

Read the Story in English

election commission
Advertisment