ভারত-সহ বিশ্বের ৪০টি দেশে নির্বাচন হবে। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, আর্থিক বাজার অস্থির থাকবে। কারণ, সুদের হারের গতিপথ সম্পর্কে নির্দিষ্ট সংকেত না-পেলে আর্থিক বাজারে স্থিতিশীলতা আসে না।
চলতি বছরের জুনে জি২০-র সদস্য হিসেবে আফ্রিকান ইউনিয়নকে অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে ভারতের পদক্ষেপ ফলপ্রসূ হয়েছে। ৫৫টি দেশের প্রতিনিধিত্বকারী এই গ্রুপে শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) জি২০-র নতুন সদস্য হিসেবে স্থান পেল আফ্রিকান ইউনিয়ন। গত জুন থেকে এই ব্যাপারে বেশ চিন্তাভাবনা চলছিল। সেই সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জি২০ নেতাদের কাছে প্রস্তাব করেছিলেন যাতে আফ্রিকান ইউনিয়নকে 'তাদের অনুরোধ অনুযায়ী জি২০-র আসন্ন দিল্লি শীর্ষ সম্মেলনে পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়া হয়।'
ভাবনার শুরু সূত্রের খবর, এই চিন্তাভাবনার সূত্রপাত হয়েছিল চলতি বছরের জানুয়ারিতে 'ভয়েস অফ দ্য গ্লোবাল সাউথ' শীর্ষ সম্মেলনের পরে। 'ভয়েস অফ দ্য গ্লোবাল সাউথ' সম্মেলনে আফ্রিকা মহাদেশের ৫৫টি দেশ অংশ নিয়েছিল। আফ্রিকান ইউনিয়নের সদর দফতর ইথিওপিয়ার আদ্দিস আবাবায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা এগিয়েছিল। আফ্রিকান ইউনিয়নের আগে, এখনও পর্যন্ত জি২০-তে সমগ্র আফ্রিকা মহাদেশ থেকে শুধুমাত্র একটি দেশই প্রতিনিধি হিসেবে ছিল, তা হল দক্ষিণ আফ্রিকা।
Advertisment
আফ্রিকান ইউনিয়নের বক্তব্য অনেক আফ্রিকান নেতা যুক্তি দিয়েছিলেন যে ইউরোপের প্রতিনিধিত্বকারী পাঁচটি দেশের পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নও (ইইউ) জি২০-তে আছে। তেমনই আফ্রিকান ইউনিয়নও অনুরূপ প্রতিনিধিত্ব করতে পারে। এই যুক্তি সামনে আসার পর শীঘ্রই মার্কিন এবং ফরাসি প্রেসিডেন্টরা তাঁদের সম্মতি জানান। তাঁরা জানিয়ে দেন যে এই পদক্ষেপ, 'ন্যায়, ন্যায্যতা, আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, প্রতিনিধিত্বশীল বিশ্বনির্মাণ এবং শাসন'-এর পথে একটি 'সঠিক পদক্ষেপ'।
ভারত-আফ্রিকা সম্পর্ক সূত্রের খবর, 'জি২০ বৈঠকে সভাপতিত্বের অংশ হিসেবে ভারত আরও বেশি করে এজেন্ডায় আফ্রিকান দেশগুলোর অন্তর্ভুক্তিকে অগ্রাধিকার দিয়েছিল।' এই পদক্ষেপ আফ্রিকার সঙ্গে নয়াদিল্লির ঘনিষ্ঠতার প্রতিফলন। যা, ২০১৫ সালের অক্টোবরে তৃতীয় ভারত-আফ্রিকা মঞ্চের শীর্ষ সম্মেলনে যখন ৪০টিরও বেশি দেশ এবং সরকার প্রতিনিধিত্ব করেছিল, তখন পূর্ণতা পেয়েছিল। আফ্রিকার দেশগুলোর কাছে আরও বেশি করে পৌঁছনোর লক্ষ্য নিয়ে ভারত মন্ত্রী পর্যায়ে সমস্ত আফ্রিকান দেশে সফর করেছে। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গত নয় বছরে আফ্রিকার অন্তত ১০টি দেশ সফর করেছেন।
চিনও আফ্রিকায় অংশগ্রহণ বাড়াচ্ছে আফ্রিকাতে ভারতের পরিকাঠামোগত অংশগ্রহণ ২০০৮ সালে শুরু হয়েছিল। কিন্তু, চিন ভারতের দেখাদেখি তাতে ঢুকে পড়েছে। তারা অবশ্য ২,০০০ সালে জিয়াং জেমিন প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন সময় থেকেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। ফোরাম অন চায়না-আফ্রিকা কোঅপারেশন (এফওসিএসি) প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল যখন, সেবছর বেজিংয়ে প্রথম মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আফ্রিকা মহাদেশে চিনা স্বার্থের বিকাশের প্রদর্শন তখন থেকেই শুরু। ইতিমধ্যে তা দীর্ঘপথ অতিক্রমও করেছে।
ভারতের কূটনৈতিক সাফল্য তারপরও জি২০র মঞ্চে আফ্রিকান ইউনিয়নকে অন্তর্ভুক্ত করার পদক্ষেপের মাধ্যমে, ভারত কার্যত উন্নয়নশীল এবং অনুন্নত দেশগুলোর নেতা হিসেবে নিজেকে তুলে ধরল। এটি রাষ্ট্রসংঘের স্থায়ী সদস্যপদ পাওয়ার জন্য ভারতের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। ভারতের আশা, এই ব্যাপারে নয়াদিল্লিকে আফ্রিকান ইউনিয়নে থাকা ৫৫টি দেশ সাহায্য করবে, সমর্থন দেবে।