ভারতীয় ন্যায় সংহিতা বিল, ২০২৩ গত ১৬০ বছরেরও বেশি পুরনো ভারতীয় দণ্ডবিধি (আইপিসি) রদ ও প্রতিস্থাপন করবে। এতে বিধির সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত কিছু ধারার জন্য নতুন নম্বর থাকছে। অর্থাৎ, দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত ধারাগুলোর যে নম্বর, তা বদলে যাচ্ছে। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ, চলচ্চিত্রের ওই সব ধারার নম্বরগুলো ইতিমধ্যে সিনেমার সংলাপের অংশ হয়ে উঠেছে। কার্যত সাধারণ মানুষের মুখের ভাষা হয়ে উঠেছে। যেমন, খুনের জন্য ৩০২ ধারা, প্রতারণার ৪২০ ধারা, ধর্ষণের ৩৭৬ ধারা। ভারতীয় ন্যায় সংহিতা বিলে এই সব ধারারই এখন অন্য নম্বর। যদিও নতুন নম্বরগুলো এখনই চূড়ান্ত নয়। কারণ, বিলটি স্থায়ী কমিটির দ্বারা বিবেচিত হওয়ার পরে সংসদে বিতর্ক হওয়ার পরে পরিবর্তিত হতে পারে।
আইপিসি ধারা ৪২০
প্রতারণার বিচার হয় ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৪২০-তে। প্রতারণা বা অসাধুভাবে সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়া। অথবা অন্য কোনও কারণে ঠকানো। তা সে জামানত পাওয়ার জন্যই হোক। অথবা, চাকরি পাওয়ার জন্য সিলমোহরের অপব্যবহারই হোক না-কেন, সবটাই শাস্তিযোগ্য ধারা ৪২০-তে। এই ক্ষেত্রে সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। প্রস্তাবিত বিএনএস, ২০২৩-এ প্রতারণার অপরাধকে ধারা ৩১৬-এ শাস্তিযোগ্য করা হয়েছে। ৩১৬ (১) ধারায় বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি কোনও ব্যক্তি বা সংস্থাকে প্রতারণা করে, প্রতারণামূলকভাবে বা অসৎভাবে প্রলুব্ধ করে কোনও কিছু হাতিয়ে নেয় অথবা বাদ দিতে বাধ্য করে, যা প্রতারিত না-হলে ওই ব্যক্তি বা সংস্থা প্রলুব্ধ হত না বা বাদ দিত না, সেই কাজের মাধ্যমে কোনও ব্যক্তির শরীর, মন, খ্যাতি বা সম্পত্তির বা সংস্থার ক্ষতি হলে বা ক্ষতির সম্ভাবনা থাকলে, তাকে প্রতারণা বলে। যা ধারা ৩১৬ (২), (৩), এবং (৪)-এর অধীনে তিন বছর, পাঁচ বছর বা সাত বছর পর্যন্ত শাস্তিযোগ্য। জরিমানাও সেই শাস্তিতে জুড়তে পারে।
আরও পড়ুন- আত্মহত্যার চেষ্টা কি অপরাধ, কী বলছে মোদী সরকারের নতুন দণ্ডবিধির বিল?
আইপিসি ধারা ৩০২
আইপিসি ধারা ৩০২ খুনের শাস্তির কথা বলে। যাতে বলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তি খুন করলে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে এবং জরিমানাও দিতে হবে। প্রস্তাবিত ভারতীয় ন্যায় সংহিতা বিল, ২০২৩-এ ৩০২ ধারা ছিনতাইয়ের অপরাধের সাজার কথা বলেছে। প্রস্তাবিত দণ্ডবিধিতে ৩০২ (১) ধারা বলে যে চুরি, ছিনিয়ে নেওয়া, চুরি করার জন্য, অপরাধী হঠাৎ বা দ্রুত অথবা জোরের সাহায্যে কোনও ব্যক্তির থেকে কিছু কেড়ে নিলে বা দখল করে নিলে তা ছিনতাইয়ের পর্যায়ে পড়ে। প্রস্তাবিত দণ্ডবিধিতে হত্যাকে ধারা ৯৯-এর অধীনে রাখা হয়েছে। যা অপরাধমূলক হত্যা এবং হত্যার মধ্যে পার্থক্য চিহ্নিত করেছে। ১০১ ধারায় হত্যার সাজার কথা বলা হয়েছে, যার দুটি উপধারা রাখা হয়েছে। তার মধ্যে ১০১(১) উপধারায় বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি হত্যা করবে সে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে এবং জরিমানাও দিতে হবে।