Advertisment

চন্দ্রযান ২: কীভাবে বিক্রম ল্যান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে?

চাঁদের রাতগুলি অতীব শীতল, বিশেষ করে চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে, যেখানে বিক্রম অবস্থান করছে। এখানকার তাপমাত্রা -২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্তও হতে পারে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

তিন দিনের বেশি হয়ে গেল চন্দ্রযান ২-এর বিক্রম ল্যান্ডারের সঙ্গে পৃথিবীর সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। ইসরো জানিয়েছে, ল্যান্ডারের সঙ্গে ফের যোগাযোগের চেষ্টা এখনও সফল হয়নি। ইতিমধ্যে, বিক্রমকে অরবিটার মডিউলের মাধ্যমে চন্দ্রপৃষ্ঠে দেখতে পাওয়া গিয়েছে এবং তার থার্মাল ইমেজও তুলতে পেরেছে ল্যান্ডার। বিক্রম অবস্থা কী, তা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গিয়েছে নাকি সম্পূর্ণ অটুট রয়েছে- সে কথা এখনও অজানা।

Advertisment

 চন্দ্রযান ২-এর বিক্রম ল্যান্ডারের সঙ্গে ফের যোগাযোগ হওয়ার আশা কি রয়েছে?

সময় চলে গিয়েছে, কিন্তু যোগাযোগ সম্ভব হয়নি- ফলে যোগাযোগের সম্ভাবনা ক্ষীণ, এমন তত্ত্ব এখানে খাটবে না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের সম্ভাবনা মোটেই কমে যাচ্ছে না। কিন্তু আবার এর একটা সময়সীমাও রয়েছে। ইসরোতে আগামী দু সপ্তাহ (২১ সেপ্টেম্বর)-র মধ্যে এ কাজে সফল হতে হবে।

আরও পড়ুন, চন্দ্রযান ২: মিশন কি সত্যিই ব্যর্থ?

সময়সীমা কেন?

কারণ এর পরেই চান্দ্র রাত শুরু হবে পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহে। মনে রাখতে হবে, ল্যান্ডার ও রোভার চাঁদের মাটি স্পর্শ করার পর মাত্র ১৪ দিন ক্রিয়াশীল থাকবে। চাঁদের দিন ও রাত পৃথিবীর ১৪ দিনের সমতুল্য। চাঁদের রাতগুলি অতীব শীতল, বিশেষ করে চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে, যেখানে বিক্রম অবস্থান করছে। এখানকার তাপমাত্রা -২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্তও হতে পারে। ল্যান্ডারে যে সব যন্ত্রাংশ রয়েছে, সেগুলি এই ঠান্ডায় কাজ করার উপযোগী নয়। ল্যান্ডারের ইলেক্ট্রনিকগুলি কাজ করবে না এবং চিরকালের জন্য খারাপ হয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে, আগামী দু সপ্তাহের মধ্যে যদি যোগাযোগ পুনরুদ্ধার না করা যায়, তাহলে ইসরোকে হাল ছাড়তেই হবে।

বিক্রম ল্যান্ডারের সঙ্গে কীভাবে ইসরো যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করছে?

দূরবর্তী কোনও বস্তুর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গের মাধ্যমে। মহাকাশে যোগাযোগের জন্য এস ব্যান্ড (মাইক্রোওয়েভ) এবং এল ব্যান্ড (রেডিও ওয়েভ) সাধারণ ভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যোগাযোগের লিঙ্ক যে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে এ কথা এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। ল্যান্ডার যখন গতিশীল ছিল সে সময়ে যান্ত্রিকভাবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া একটি কারণ হতে পারে। কিন্তু তার পরে ল্যান্ডার চন্দ্রপৃষ্ঠে নিরাপদে অবতরণের জন্য প্রয়োজনীয় গতিবেগের চেয়ে বেশি গতিতে অবতরণ করে। এর ফলে ল্যান্জারের আংশিক বা সম্পূর্ণ ক্ষতি হতে পারে।

যন্ত্রাদির সঙ্গে সংযোগ করা যেতে পারে যদি সেগুলি কার্যক্ষম থাকে। বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে অরবিটার এবং গ্রাউন্ড স্টেশন। দু তরফ থেকেই যোগাযোগ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চলছে। ল্যান্ডারের যন্ত্রাংশ সমূহ যে নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সিতে সিগন্যাল পেতে পারে, সেই ফ্রিকোয়েন্সিতেই সিগন্যাল পাঠানো হচ্ছে এই আশায় যে ল্যান্ডারের কোনও না কোনও যন্ত্রাংশ সে সিগন্যাল পেতে পারে এবং তাতে সাড়া দিতে পারে।

আরও পড়ুন, বজ্রপাতে মৃত্যু এড়াতে রাজ্যগুলির সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন কেন, কী বলছেন বিশেষজ্ঞ

এ ব্যাপারে সহায়ক হতে পারে কোন বিষয়গুলি?

ল্যান্ডারের অ্যান্টেনার অবস্থান একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যদি অ্যান্টেনা বাধাহীন ভাবে খাড়া হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে, তাহলে একটা বড় অঞ্চল জুড়ে আসা সমস্ত সিগন্যালগুলিকেই সে স্ক্যান করতে পারে। কিন্তু অ্যান্টেনা যদি মাটিতে পুঁতে যায়, বা অন্য কোনও রকম ভাবে বাধাপ্রাপ্ত হয়, তাহলে তার সিগন্যাল গ্রহণের ক্ষমতা অনেকটাই কমবে।

যোগাযোগ পুনরুদ্ধারের সবচেয়ে বেশি সুযোগ রয়েছে অরবিটারের। চাঁদের বিভিন্ন তথ্য প্রতিদিন পাঠানোর সঙ্গে সঙ্গে, বিক্রমের উপর দিয়ে অরবিটার যতবার উড়ে যাবে, ততবার সে সিগন্যাল পাঠানোর চেষ্টা করবে বিক্রমের উদ্দেশে।

মহাকাশের কোনও বস্তুর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর ফের যোগাযোগ স্থাপন কোনও দুর্লভ ঘটনা নয়। কিন্তু  কক্ষপথে থাকলে বা ভালরকম ভাবে কার্যকর থাকলে যোগাযোগ যে অনেক সহজ- তাতে সন্দেহ নেই।

Read the Full Story in English

ISRO
Advertisment