বিহারের বিভিন্ন অংশে গত দুই দিনে বজ্রপাতে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ভাগলপুর জেলা থেকে ছয় জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বৈশালীতে তিন জন এবং বাংকা ও খাগরিয়ায় দু'জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যান্য মৃত্যু ঘটেছে মধ্যপুরা, সহরসা, মুঙ্গের এবং কাটিহারে।
সমস্ত বায়ুমণ্ডলীয় ঘটনার মধ্যে, বজ্রপাত সম্ভবত সবচেয়ে বিপজ্জনক এবং রহস্যময়। ভারতে, বজ্রপাতে প্রতি বছর প্রায় ২,০০০-২,৫০০০ লোক মারা যান। বিহার ভারতে বজ্রপাতের কয়েকটি হটস্পটের একটি।
বজ্রপাত কি?
বৈজ্ঞানিকদের মতে, বজ্রপাত হল বায়ুমণ্ডলে বিদ্যুতের একটি দ্রুত এবং ব্যাপক নিঃসরণ। যার কিছু অংশ পৃথিবীর দিকে পরিচালিত হয়। এগুলো ১০-১২ কিলোমিটার লম্বা দৈত্যাকার আর্দ্রতা বহনকারী মেঘে পরিণত হয়। এই মেঘগুলোর ভিত্তি সাধারণত পৃথিবী পৃষ্ঠের ১-২ কিলোমিটারের মধ্যে থাকে। সবচেয়ে ওপরের মেঘটি ভূপৃষ্ঠ থেকে ১২-১৩ কিলোমিটার দূরে থাকে। এই মেঘের ওপরের তাপমাত্রা -৩৫° থেকে -৪৫°C এর মধ্যে থাকে।
জলীয় বাষ্প মেঘে ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সঙ্গে পতনশীল তাপমাত্রা এটিকে ঘনীভূত করে। যখন তারা ০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচের তাপমাত্রায় চলে যায়, তখন জলের ফোঁটাগুলি ছোট বরফের স্ফটিকে পরিবর্তিত হয়। তারা ওপরে উঠতে থাকে। এই ওপরে ওঠা চলতেই থাকে যতক্ষণ না-তারা ভারের চোটে পৃথিবীতে পড়তে শুরু করে। এটি এমন এক ব্যবস্থার দিকে নিয়ে যায় যেখানে, একইসঙ্গে ছোট বরফের স্ফটিকগুলো ওপরে ওঠে। আর, বড় স্ফটিকগুলি নীচে নেমে আসে।
আরও পড়ুন- আদবানি থেকে মমতা অনুগামী, মোদী-বিরোধী যশবন্তই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধীদের তুরুপের তাস
এই সময় এদের ঘর্ষণে বিদ্যুতের ফুলকি তৈরি হয়। ব্যাপারটা ধারাবাহিক হওয়ায় বিরাট আকারে বিদ্যুতের ঝলক দেখা যায়। এই প্রক্রিয়ায় খুব অল্প সময়ের মধ্যে, ১ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ অ্যাম্পিয়ার বিদ্যুতের বিশাল স্রোত মেঘের স্তরগুলোর মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করে। এর মধ্যে প্রায় ১৫%-২০% বিদ্যুতের স্রোত পৃথিবীর দিকেও ধেয়ে আসে। এর ফলে পৃথিবীতে জীবন ও সম্পত্তির ক্ষতি হয়।