Raj Kundra Arrested: চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে মুম্বাই শহরতলির একাধিক জায়গায় অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছিল মুম্বাই পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল উঠতি অভিনেতাদের হুমকি দিয়ে পর্ণ ছবিতে কাজ করানোর। শ্যুটিং স্পটে তল্লাশি চালিয়ে হাতেনাতে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে চলে তদন্ত। জানা গিয়েছে, দেশের একাধিক প্রান্ত থেকে অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে মুম্বাই পাড়ি দেওয়া তরুণ-তরুণীদের টার্গেট করত এই চক্র। ওয়েব সিরিজে কাজ দেওয়ার অছিলায় শ্যুটিংয়ে ডেকে করানো হতো পর্ণ ছবির শ্যুট। কেউ আপত্তি করলে তাঁদের বলা হত শ্যুটিংয়ের সব খরচা বহন করতে। এভাবেই চলত শ্যুটিং।
তারপর সেই ছবি একাধিক মোবাইল অ্যাপে এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মে আপলোড করা হত।সেই অ্যাপ সাবস্ক্রাইব করতে নোটিফিকেশন যেত গ্রাহকদের কাছে।সেই সব প্ল্যাটফর্ম এবং মোবাইল অ্যাপে চলত বড় করে প্রচার। ভারতে যেহেতু পর্ণ ছবি বানানো নিষিদ্ধ, তেমন এই ছবির প্রচার ও বিপণন নিষিদ্ধ।
তদন্তে জানা গিয়েছে, মুম্বাই শহরতলির কোনও বাংলো ভাড়া করে সারাদিন চলত এই শ্যুটিং। মাড আইল্যান্ডের মতো বিচ্ছিন্ন জায়গাকে এই ধরণের কুকর্মের জন্য তাঁরা বেছে নিত। শ্যুটিং স্পটে উপস্থিত থাকতেন ৫-৬ জন। চিত্রগ্রাহক, পরিচালক, সংলাপ লেখক এবং প্রোডাকশন বয়। এঁদের সঙ্গেই থাকতেন একজন করে সংশ্লিষ্ট ওয়েব অ্যাপ ডেভেলপার। দেশব্যাপী লকডাউনের সময় এই ওয়েবঅ্যাপগুলো জনপ্রিয় হয়েছিল। তদন্তে দেখা গিয়েছে প্রতি অ্যাপের গ্রাহক সংখ্যা কয়েক লক্ষ। এই তথ্যগুলো হাতে পেয়ে পুলিশ দুটি লক্ষে তদন্ত করতে শুরু করে। যারা এই ছবি বানায় তাঁদের গ্রেফতার করা এবং যারা এই ছবি সম্প্রচার করে তাঁদের গ্রেফতার করা। জানা গিয়েছে, কিছু ওয়েবঅ্যাপের পর্ণ ছবির সম্প্রচার (আপলোড) বাইরের কোনও দেশ থেকে করা হয়েছে।
তেমনই একটা প্রযোজনা সংস্থা ইউকের। যারা এই ধরণের ছবি সম্প্রচার করে থাকে। সেই সংস্থায় নজরদারি চালিয়ে উমেশ কামাত নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে মুম্বাই পুলিশ। এই ব্যক্তি সেই সংস্থার অন্যতম অধিকর্তা। তাঁকে জেরা করেই এই ছবি ব্যবসায় রাজ কুন্দ্রার নাম উঠে আসে। কামাতের সঙ্গে কুন্দ্রার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথাও স্বীকার করে নিয়েছিলেন সেই ধৃত। কামাতের সংস্থাকে সামনে রেখেই পর্ণোগ্রাফিক ছবিতে বিনিয়োগ শুরু করেন রাজ কুন্দ্রা।
পাশাপাশি রাজের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও, তথ্য-প্রমাণ ছিল না। তাই ধীরে চলো নীতি নিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। মুম্বাই পুলিশের একটা সূত্রের দাবি, রাজ কুন্দ্রার মতো বিশিষ্টদের গ্রেফতার করার আগে একাধিক তথ্য-প্রমাণ জোগাড় করতে হয়। সেই প্রমাণ হাতে পেয়েই এই গ্রেফতারি।
এর আগেও আইপিএলে স্পট ফিক্সিং কাণ্ডে নাম জড়িয়েছিল কুন্দ্রার। যেহেতু তিনি লন্ডনের নাগরিক তাই সেবার ক্লিনচিট পেয়ে যান এই হীরে ব্যবসায়ী। এদিকে, গত বছরই আর্থিক তছরূপের অভিযোগে কুন্দ্রার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল মুম্বাই পুলিশের সাইবার ক্রাইম। এবারেও একইভাবে সাইবার ক্রাইম বিভাগ রাজের বিরুদ্ধে পর্ণোগ্রাফি বানিয়ে একাধিক ওয়েবসাইটে সম্প্রচারের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে। অপরদিকে আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করলেও, আগামি সপ্তাহ পর্যন্ত সেই আবেদনের শুনানি পিছিয়ে দিয়েছে বম্বের এক আদালত। ফলে, সোমবার রাতে গ্রেফতার হতে হয় কুন্দ্রাকে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন