বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় সরকার সংসদে বলেছে যে আইন কমিশন অভিন্ন দেওয়ানি বিধির 'প্রাসঙ্গিকতা এবং গুরুত্ব' এবং এই বিষয়ে বিভিন্ন আদালতের নির্দেশের ব্যাপারে নতুন করে পরামর্শ নেওয়া শুরু করেছে। অভিন্ন দেওয়ানি বিধির পদ্ধতি সম্পর্কে একটি প্রশ্নে, আইনমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল রাজ্যসভায় জানিয়েছেন যে যেহেতু আইন প্যানেলে বিষয়টি এখনও আলোচনাধীন, তাই এক্ষেত্রে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, সেই ব্যাপারে ভাবনাচিন্তার সময় আসেনি।
যদিও অভিন্ন দেওয়ানি বিধিকে বিজেপির অন্যতম প্রধান এজেন্ডা হিসাবে দেখা হয়। অবশ্য বিজেপি দল এবং তার পূর্বসূরি ভারতীয় জনসংঘ (বিজেএস) সবসময় তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে অভিন্ন দেওয়ানি বিধিকে অন্তর্ভুক্ত করেনি। এখানে বিজেপি এবং তার পরামর্শদাতা সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) অভিন্ন দেওয়ানি বিধি সম্পর্কে বছরের পর বছর ধরে কী অবস্থান নিয়েছে, তা দেখে নেওয়া যাক।
ভারতে জওহরলাল নেহরুর প্রথম সরকার হিন্দু বিধি বিল আনলে, জনসংঘ ১৫ এপ্রিল, ১৯৫৫ সালে কর্ণাটকের গোকাকের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটিতে একটি প্রস্তাব পাস করে। বিলটির তীব্র নিন্দা করে জনসংঘ অভিযোগ করে, এই বিল তৈরির সময় জনগণের মতামত নেওয়া হয়নি। এই বিল জনমতের বিরোধী। সেই অভিযোগের পাশাপাশি, বিলটিকে বাস্তবায়িত না-করার জন্যও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আহ্বান জানায় জনসংঘ।
এই ব্যাপারে জনসংঘের কমিটি জানায়, যখন সংবিধান 'সকল নাগরিকের জন্য একটি অভিন্ন দেওয়ানি বিধি প্রণয়ন করার নির্দেশ স্পষ্টভাবে রাজ্যগুলোকে দিয়েছে, সেই সময় হিন্দু দেওয়ানি বিধি শুধুমাত্র একটি সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্য করা। যা ভারতের সংবিধানের বিরোধী।' সেই কারণে হিন্দু উত্তরাধিকার বিলের উপর, ভারতীয় জনসংঘ ২৩ অক্টোবর, ১৯৫৫ সালে 'তীব্র আপত্তি' জানায়। কারণ, সেখানে অবৈধ সন্তানদের তাদের পিতার সাথে সম্পর্কিত বলে গণ্য করার কথা বলা হয়েছিল।
আরও পড়ুন- বৈবাহিক ধর্ষণ নিয়ে আবেদন শুনবে সুপ্রিম কোর্ট, কারণটা কী?
শুধু তাই নয়, একইসঙ্গে বলা হয়েছিল, বৈধ সন্তানদের সমান মর্যাদা দেওয়ার কথাও। পাশাপাশি, বিলটি মহিলা উত্তরাধিকারীদের পুরুষ উত্তরাধিকারীদের চেয়ে ভালো মর্যাদা দিয়েছিল। আর, কিছু ক্ষেত্রে তাদের বেশি ভাগের কথা বলেছিল। ১৯৫৭ সালের নির্বাচনী ইস্তাহারে, ভারতীয় জনসংঘ ক্ষমতায় এলে হিন্দু বিবাহ আইন এবং হিন্দু উত্তরাধিকার আইন বাতিল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তবে, ইস্তাহারে তারা অভিন্ন দেওয়ানি বিধির ব্যাপারে নীরব ছিল।