- বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) দুবাইয়ের বুর্জ খলিফা (Dubai, Burj Khalifa) ১৪ বছর পূর্ণ করল।
- ২০০৪ সালে নির্মাণ শুরু হয়। ২০০৯ সালে কাজ শেষ হয়। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় ৪ জানুয়ারি, ২০১০-এ।
- প্রথমে বুর্জ দুবাই (দুবাই টাওয়ার) নামকরণ করা হয়েছিল। এর নাম পরিবর্তন করে বুর্জ খলিফা রাখা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) দুবাইয়ের বুর্জ খলিফা (Dubai, Burj Khalifa) ১৪ বছর পূর্ণ করল। বিশ্বের বৃহত্তম রিয়েল এস্টেট কোম্পানিগুলির মধ্যে একটি, Emaar Properties দ্বারা তৈরি, বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবনটিতে একটি বিলাসবহুল হোটেল, বিলাসবহুল আবাসন, রেস্তোরাঁ এবং মানমন্দির আছে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা বিলবোর্ড। নতুন পণ্য বা ফিল্ম লঞ্চ করাই হোক বা একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা শেয়ার করা, আকাশচুম্বি ভবনের বহিরাঙ্গন একটি বিশাল বিজ্ঞাপন প্ল্যাটফর্মের মত কাজ করে। যা দুবাই এবং সারা বিশ্বের দর্শকদের মুগ্ধ করে।
মানুষের তৈরি সবচেয়ে উঁচু কাঠামো
উচ্চতা মোট ৮২৯.৮8 মিটার। ১১.৫টিরও বেশি কুতুব মিনারের সমান এই কাঠামো। একটির ওপর উঠেছে আরেকটি স্তম্ভ। বুর্জ খলিফা এখনও পর্যন্ত নির্মিত মানুষের তৈরি সবচেয়ে উঁচু কাঠামো। এর ১৬০+ ফ্লোরে ৫৭টি লিফট আছে। স্কাইস্ক্র্যাপারটি তাইপেই ১০১ (৫০৮.২ মিটার লম্বা)-কে ছাড়িয়ে উচ্চতায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে। ২০০৪ সালে নির্মাণ শুরু হয়। ২০০৯ সালে কাজ শেষ হয়। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় ৪ জানুয়ারি, ২০১০-এ। এটি দুবাইয়ের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। বহু ব্যক্তির আনাগোনার যোগ্য, উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে তৈরি হয়েছে। খনিজ তেলের আরবভূমে যা রীতিমতো আধুনিকতা এবং বিস্ময়ের প্রতীক হয়ে রয়েছে। বাণিজ্য, পর্যটন এবং বিলাসিতাকে কেন্দ্র করে চলে বুর্জ খলিফার অর্থনীতি। প্রথমে বুর্জ দুবাই (দুবাই টাওয়ার) নামকরণ করা হয়েছিল। সংযুক্ত আরব আমিরশাহির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট শেখ খলিফার সম্মানে এর নাম পরিবর্তন করে বুর্জ খলিফা রাখা হয়েছে। শেখ খলিফা আর্থিক সমস্যার সময় এই প্রকল্পে অর্থ দিয়ে সহায়তা করেছিলেন।
বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু বিলবোর্ড
প্রথম থেকেই, বুর্জ খলিফাকে একটি প্রিমিয়াম বিজ্ঞাপনের প্ল্যাটফর্ম হিসাবে কল্পনা করা হয়েছিল। এর অবস্থান এমন জায়গায়, যে কেউ বিজ্ঞাপন দিতে পারেন। ভিতরের লিফট এবং সাধারণ এলাকা থেকে, বিশাল বিল্ডিংয়ের বাইরের দাগ পর্যন্ত এবং অবশ্যই বিল্ডিংয়ের গায়ে। বুর্জ খলিফার সম্মুখভাগ সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিজ্ঞাপনের জায়গার মধ্যে অন্যতম। আরবিয়ান বিজনেসের মতে, একটি বিজ্ঞাপন, সিনেমার টিজার বা বার্তা দেওয়ার জন্য খরচ সপ্তাহের কাজের দিনগুলোতে তিন মিনিটের জন্য প্রায় ২৫০,০০০ দিরহাম (বা মোটামুটি ৭০,০০০ মার্কিন ডলার) থেকে শুরু হয়। উইকেন্ড বা সপ্তাহান্তে বিজ্ঞাপনের খরচ হয় তিন মিনিটে ৩৫০,০০০ দিরহাম (প্রায় ১০০,০০০ মার্কিন ডলার)। নির্দিষ্ট তারিখ, সময়, এবং বিজ্ঞাপনের ধরনের ওপর নির্ভর করে এই দাম বাড়ে। সঠিক বিজ্ঞাপনের মূল্য সর্বজনীনভাবে প্রকাশ করা হয় না। কেস-টু-কেস ভিত্তিতে আলোচনা করা হয়। বছরের পর বছর ধরে, বুর্জ খলিফা দ্য লায়ন কিং এবং অ্যাভেঞ্জারস: এন্ডগেম চলচ্চিত্র, নুন ডটকম, কার্টিয়ার, হুয়াওয়ে এবং ওয়াল্ট ডিজনির মতো কোম্পানিগুলোর হয়ে প্রচার চালিয়েছে।
আরও পড়ুন- Pakistan National Election: পাকিস্তানের ভোট পিছোতে চায় সেনেট, পিছনে কোন মতলব?
কীভাবে এগুলো কাজ করে?
বুর্জ খলিফা হল বিশ্বের বৃহত্তম ইলেকট্রনিক ডিসপ্লে। যার দক্ষিণমুখী সম্মুখভাগে ১.২ মিলিয়ন পিক্সেলেরও বেশি ফিট করা আছে। এই বিজ্ঞাপনের ব্যবস্থা ২০১৪ সালে ফিটিং করা হয়েছিল। ২০১৫ সালের ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনের সময় এর উদ্বোধন করা হয়। এই এলইডিগুলো একসঙ্গে বুর্জ খলিফাকে অন্য যে কোনও ইলেকট্রনিক্স স্ক্রিনের মত কাজ করার সুযোগ এনে দিয়েছে। ভিজ্যুয়ালগুলো একটি প্রধান সার্ভারে পাঠানো হয়। যা, ফাইবার অপটিক্স এবং ছোট সার্ভারের একটি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে নির্দিষ্ট রং তুলে ধরে সামনের এলইডির মাধ্যমে। দূর থেকে যাকে একসঙ্গে দেখা যায়। যা আসলে ১.২ মিলিয়ন এলইডির একটি সংমিশ্রণে তৈরি ছবি। ডিসপ্লেটি প্রতি ঘণ্টায় ৭৯০ কিলোওয়াট শক্তি ব্যবহার করে। যা একটি থ্রি-স্টারের রেটযুক্ত স্প্লিট এয়ার কন্ডিশনারের শক্তির খরচের প্রায় ৭২০ গুণ।