/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/07/Wajid-Ali-Shah.jpg)
ওয়াজিদ আলি শাহ
আজ ৩০ জুলাই, ২০২৩। নবাব ওয়াজিদ আলি শাহের ২০১তম জন্মবার্ষিকী। অওধের সিংহাসনে বসা শেষ নবাব। ওয়াজিদ আলি শাহ ছিলেন বহু বৈপরীত্যে পরিপূর্ণ একজন মানুষ। এমন একজন রাজা, যার কখনও খুব বেশি ক্ষমতা ছিল না। কিন্তু, যিনি তাঁর মৃত্যুদিন পর্যন্ত একটি 'আদালত' চালু রাখতে পেরেছিলেন। তিনি ছিলেন এমন একজন শাসক, যাঁর অপসারণ ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহে অবদান রেখেছিল। কিন্তু, যিনি কখনও ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করার ইচ্ছে দেখাননি। তাঁর এস্টেটের প্রেম এবং আবেগ সম্পর্কে তিনি অনেক কিছু লিখেছেন। কিন্তু, তার অসংখ্য স্ত্রী এবং সন্তানদের সঙ্গে সেই নবাবই আবার কঠোর আচরণ করেছেন।
লখনউয়ের নবাব হিসেবে শাসনকাল
ওয়াজিদ আলি শাহের গল্পের প্রথম অংশ, লখনউয়ের 'নবাব' হিসেবে তাঁর প্রায় নয় বছরের শাসনকাল। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অপশাসন এবং অবাধ্যতার অভিযোগে অপসারণ। এমনটাই দাবি ছিল ব্রিটিশদের। যদিও বাস্তবে নবাব তাঁর প্রশাসনের সংস্কারের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু, তিনি ব্রিটিশদের দ্বারা বাধাগ্রস্ত হয়েছিলেন। তিনি প্রশাসনের ওপর একটি মোটামুটি বিস্তারিত বই লিখেছিলেন। যা ব্রিটিশরা উপেক্ষা করেছিল। একবছর পরে, প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়। যার দৌলতে নবাব ওয়াজিদ আলি শাহের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী বেগম হজরত মহল নবাবের নির্বাসন সমাপ্ত করে ইতিহাসের পাতায় উঠে আসেন।
ওয়াজেদ আলি শাহের প্রতি ইংরেজদের মনোভাব
তাঁর জীবনের শেষ ৩০ বছর নবাব কলকাতায় অতিবাহিত করেছিলেন। যা ওয়াজিদ আলি শাহের অনন্য চরিত্রকে সর্বোত্তমভাবে তুলে ধরেছিল। যদিও তাঁর ভাগ্যের চাকা ঘোরেনি। ব্রিটিশরা তাঁকে কখনও সম্মান করেনি। শুধু সারাজীবন উদার থেকেছে পেনশন দেওয়া, ব্যক্তিগত ভদ্রতা বজায় রাখা এবং চিকিত্সার ব্যবস্থা করার মধ্যেই।
ইংল্যান্ডে যাওযার পরিকল্পনা
লখনউয়ের 'রাজা' পদ থেকে তাঁকে পদচ্যুত করার পরেও ব্রিটিশরা তাঁর প্রতি সেই উপাধি বজায় রেখেছিল। এই পরিস্থিতিতে ওয়াজিদ আলি শাহ এবং তাঁর পরিবার ইংল্যান্ডে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। আর, সরাসরি রানি ভিক্টোরিয়ার কাছে তাঁদের সমস্যার কথা জানানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। তাঁদের আশা ছিল, রানি ভিক্টোরিয়া তাঁদের প্রতি আরও সহানুভূতিশীল হবেন। আর, এই উদ্দেশ্যেই ওয়াজিদ আলি শাহ, তাঁর মা মালেকা কিশওয়ার বাহাদুর ফখর-উজ-জামানি বা জনাব-ই-আলিয়া এবং তাঁর ভাই সিকান্দার হাসমত, মন্ত্রী ও তাঁদের আত্মীয়রা কলকাতায় এসেছিলেন।
আরও পড়ুন- লোকসভায় পাস বন সংরক্ষণ বিল, তা নিয়ে ব্যাপক চেঁচামেচি, কারণটা কী?
রচনায় বিলাপ
নবাব লখনউয়ের ক্ষতি অনুভব করেছিলেন এবং মাতৃভূমি থেকে তাঁর বিচ্ছিন্নতা প্রকাশ করতে গিয়ে 'বাবুল মোরা নাইয়াহার ছুটো হি যায়ে (বাবা, আমার বাড়ি এখন আমার কাছে হারিয়ে গেছে)' রচনা করেছিলেন বলে জানা যায়। ইতিহাসবিদ রুদ্রাংশু মুখার্জি লিখেছেন, এরই মধ্যে আছে তাঁর বিলাপ, 'আংরেজ বাহাদুর আয়ে, মুলক লেঁই লিহোঁ (সাহসী ইংরেজরা এসে দেশ কেড়ে নিয়েছে)।'