কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশন (সিআইসি) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডিগ্রি সংক্রান্ত তথ্য জানাতে গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়কে নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে শুক্রবার গুজরাট হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়। এই ব্যাপারে গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদনের ভিত্তিতে গুজরাট হাইকোর্ট কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনের নির্দেশ বাতিল করেছে।
আদালতের নির্দেশ
শুধু এতেই ক্ষান্ত হননি গুজরাট হাইকোর্টের বিচারপতি বীরেন বৈষ্ণব। তিনি কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনের কাছে মোদীর শিক্ষাগত যোগ্যতার কথা জানতে চেয়েছিলেন আবেদনকারী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তাঁকে বিচারপতি ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। চার সপ্তাহের মধ্যে গুজরাট রাজ্য আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের কাছে ওই টাকা জমা রাখার জন্য কেজরিওয়ালকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গুজরাট হাইকোর্টে মামলা
কেজরিওয়ালের নির্বাচনী ফটো আইডেন্টিটি কার্ড (এপিক) সম্পর্কিত তথ্য সরবরাহ নিয়ে একটি মামলা চলছে। সেই নিয়ে সিআইসির সামনে কেজরিওয়ালের দ্বিতীয় আবেদনের শুনানি থেকে গুজরাট হাইকোর্টে এই মামলার সূত্রপাত। ২০১৬ সালের ২৮ এপ্রিল কেজরিওয়াল সিআইসিকে জানিয়েছিলেন, তিনি নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতার তথ্য সরবরাহ করতে রাজি। কিন্তু, প্রধানমন্ত্রীকেও তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতার বিবরণ প্রকাশ করতে হবে। কেজরিওয়াল অভিযোগ করেছেন যে কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশন তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতার তথ্য চাইছে। অথচ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শিক্ষাগত যোগ্যতার কোনও তথ্য দিতে পারছে না।
তথ্য কমিশনের নির্দেশ
কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশন কেজরিওয়ালের এই আবেদনকে, 'একজন নাগরিকের আরটিআইয়ের অধিকার হিসেবে ধরেছে।' কেন্দ্রীয় মুখ্য তথ্য কমিশনার এম শ্রীধর আচার্যুলু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় এবং গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে মোদির স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রির 'সার্টিফিকেট নম্বর এবং বছর' জানতে চাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। যাতে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের পক্ষে তথ্য অনুসন্ধান করা এবং সম্পর্কিত নথি সরবরাহ করা সহজ হয়।'
আরও পড়ুন- কাঠগড়ায় বিতর্কিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, কিন্তু কেন? কী হতে চলেছে ট্রাম্পের ভবিষ্যৎ?
নির্দেশের বিরুদ্ধে আদালতে
আদেশে কেন্দ্রীয় মুখ্য তথ্য কমিশনার বলেছেন, 'নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ না-করা ভারতীয় গণতন্ত্রের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য। তবে, যখন মুখ্যমন্ত্রী পদে আসীন এক নাগরিক প্রধানমন্ত্রীর ডিগ্রি সংক্রান্ত তথ্য জানতে চান, তা প্রকাশ করাই ঠিক।' আচার্যুলু এই প্রসঙ্গে বলেছেন, 'কমিশন দিল্লি ইউনিভার্সিটি এবং গুজরাট ইউনিভার্সিটি ও আহমেদাবাদের পিআইওদের নির্দেশ দিয়েছে যাতে নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদীর (১৯৭৮ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক এবং ১৯৮৩ সালে গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর) ডিগ্রি সম্পর্কিত তথ্যের জন্য সম্ভাব্য সবরকম অনুসন্ধান করে। আর, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আবেদনকারী কেজরিওয়ালকে তা সরবরাহ করে।' আচার্যুলুর সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয় গুজরাট হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল।