সীমান্ত সংঘর্ষের মাঝেই ভারতের চিন বয়কট নীতির জের পড়ল ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)-এ। এমনিতেই করোনা আবহে আইপিএল আয়োজন নিয়ে শঙ্কা ছিলই। বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখ থেকে বাঁচতে আরব-আমিরশাহীতে আইপিএল অনুষ্ঠান আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই)। কিন্তু ফের আর্থিক ধাক্কার মুখেই পড়তে হল ভারতীয় ক্রিকেটকে। আইপিএলের মূল স্পনসর থেকে নিজেদের নাম সরিয়ে নিল ভিভো।
কতটা ধাক্কা খেতে চলেছে আইপিএল ২০২০?
ভারতে করোনা যা হারে বেড়ে চলেছে সেখানে আইপিএল আয়োজন অসম্ভব। অগত্যা সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতেই বসবে আসর। কিন্তু বিদেশে খেলা হওয়ায় বেড়েছে খরচ। সেখানে প্লেয়ারদের থাকা-খাওয়া-ট্রেনিংয়ের আলাদা বন্দোবস্ত সবেতেই খরচ অতিরিক্ত। যদিও ভিভো সরে যাওয়ার অনেক ফ্র্যাঞ্চাইজির মত লাভের বেশ কিছুটা ভাগ এবার তাঁদের জন্য বরাদ্দ হবে। তবে নতুন কোনও স্পনসরশীপ না পেলে ক্ষতির মুখোমুখি হতে হবে আইপিএলকে।
কত টাকা বিনিয়োগ করত ভিভো?
চিনা মোবাইল প্রস্তুতকারক সংস্থা ভিভো ২০১৮ সালে আইপিএলের টাইটেল স্পনসরশীপ পাঁচ বছরের জন্য কিনেছিল ২ হাজার ১৯৯ কোটি টাকা দিয়ে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে প্রতি বছর স্পনসরশীপের চুক্তি বাবদ ৪৩৯ কোটি টাকাও দেয় এই সংস্থা। একসময় টাইটেল স্পনসর পেপসি যখন স্পট ফিক্সিং কান্ডে আইপিএল-এর নাম জড়ানোয় সরে আসে সেই সময়েই বাজার ধরতে ময়দানে নামে ভিভো। পেপসির সঙ্গে বোর্ডের চুক্তি ছিল পাঁচ বছরের জন্য ৩৯৬ কোটি টাকা। সেখানে ভিভোর সঙ্গে যে চুক্তি ছিল তা বহুগুণে বেশি।
কীভাবে এই অর্থতে লাভবান হত বিসিসিআই এবং ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো?
লাভের টাকা মূলত আসত ব্রডকাস্ট রেভিনিউ এবং স্পনসরশীপ রেভিনিউ থেকে। স্টার যেমন আইপিএল-এর মিডিয়া রাইটস ২০১৮ থেকে ২০২২ পর্যন্ত কিনেছে মোট ১৬ হাজার ৩৪৭ কোটি টাকা দিয়ে। অর্থাৎ বছরে দিতে হয় ৩ হাজার ২৭০ হাজার টাকা। ভিভো সেখানে বছরে দিত ৪৩৯ কোটি টাকা। এই মোট টাকা বিসিসিআই এবং ফ্র্যাঞ্চাইজিদের মধ্যে ভাগ হত ৬০:৪০ হিসেবে।
এবছর তাহলে কী হবে?
বিসিসিআই-এর এক আধিকারিক দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানায় যে ভিভো এই বছরের জন্য স্পনসরশীপ চুক্তিতে মোরাটোরিয়াম (আইনিভাবে স্থগিত) রাখছে। যাতে তাঁরা ২০২১ সালে আবার ফিরতে পারে। এ বছরের জন্য তাই শর্ট-টার্ম রিপ্লেসমেন্ট স্পনসর খুঁজছে বিসিসিআই। তবে এবছর কিছুটা চাপে রয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোও। টিকিট বিক্রি, গেট রিসিট এর কোনটাই লাভের খাতায় ঢুকবে না। এদিকে স্পনসরশীপ চলে যাওয়ায় ৪০ শতাংশের যে লাভ চোখে দেখা যেত তাও কমেছে। বাজারের অবস্থা দেখে ফ্র্যাঞ্চাইজির স্পনসররাও প্রায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বিনিয়োগ কমিয়েছে। এই অবস্থায় আইপিএল হলে আদপেই কী লাভ হবে কি না সে প্রশ্নই তুলছে ক্রিকেটমহল।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন