ভারতের সংবিধান কবে রচিত হয়? এই প্রশ্নের সহজ উত্তর হল যে এটি ২৬ নভেম্বর, ১৯৪৯-এ ভারতের গণপরিষদ দ্বারা গৃহীত হয়েছিল। আর, ২৬ জানুয়ারি, ১৯৫০-এ কার্যকর হয়েছিল। তবে, ভারতীয় সংবিধানের ইতিহাস তার অনেক দশক আগেই পথচলা শুরু করেছিল। চলছিল, তার সংস্কারের প্রক্রিয়াও। পরবর্তীতে ভারত ভেঙে উপমহাদেশের তিনটি পৃথক দেশ তৈরি হওয়ায় তিনটি ভিন্ন সংবিধান তৈরি হয়েছিল। এই সব সংবিধানের প্রতিটি একে অপরের থেকে নানা বিষয়কে ধার করেছে। তবে, মূল মূল্যবোধের প্রতিফলন এবং পৃথক জাতিসত্ত্বা বজায় রাখার চেষ্টাও এই সব সংবিধানের বিশেষত্ব।
ভারতীয় সংবিধানের শিকড় নিহিত রয়েছে ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মধ্যে। পাশাপাশি, রাজ্যগুলোর দায়িত্বশীল এবং সাংবিধানিক সরকারগুলোর আন্দোলনের মধ্যে। ১৮৫৮ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ সরকার বেশ কয়েকটি সাংবিধানিক সংস্কার শুরু করেছিল। তখন রানি ভিক্টোরিয়াকে ভারতের সম্রাজ্ঞী ঘোষণা করা হয়েছিল। এই ঘোষণাকে ভারতীয়রা 'ম্যাগনা কার্টা' বলে উল্লেখ করেছিল। ভারতীয়দের অধিকার এবং সুযোগ-সুবিধার উল্লেখ করার সময় প্রায়শই 'ম্যাগনা কার্টা' শব্দটি উদ্ধৃতও করা হয়েছিল।
১৮৬১ সালের ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অ্যাক্ট, গভর্নর-জেনারেল কাউন্সিলকে পুনর্গঠিত করে। আইনসভাকে কার্যনির্বাহী থেকে আলাদা করে। এটি পরবর্তী ১৮৯১ থেকে ১৯০৯ সালের মধ্যে ধারাবাহিক সংস্কারের পথে হাঁটে। যার মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন পরিষদে ভারতীয়দের প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর চেষ্টা করেছিল।
আরও পড়ুন- BBC-র মালিক কে, কীভাবে বিবিসির কাজ চলে?
তারপরে ভারতীয়রা নিজেরাই সাংবিধানিক পরীক্ষা চালিয়েছিল। ইতিহাসবিদ রোহিত দে তাঁর 'সাংবিধানিক পূর্ববর্তী' বইয়ের 'দ্য অক্সফোর্ড হ্যান্ডবুক অফ দ্য ইন্ডিয়ান কনস্টিটিউশন'-এ লিখেছেন যে উদার সাংবিধানিকতার সবচেয়ে স্পষ্ট বক্তব্য ১৯ শতকের প্রথম দিকে কলকাতায় রাজা রামমোহন রায়ের কাছ থেকে পাওয়া গিয়েছিল। রোহিত দে তাঁর বক্তব্যের ব্যাখ্যায় জানিয়েছেন যে রামমোহন রায় গোড়াতেই সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায় সোচ্চার হন। তিনি জুরি থেকে ভারতীয়দের বাদ দেওয়ার বিরুদ্ধে তথা ভারতীয়দের নাগরিক অধিকার রক্ষায় সরব ছিলেন।
Read full story in English