ঠিক দুই বছর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক প্রথমবার দেশে করোনা নির্দেশিকা জারি করেছিল। ২০০৫ সালের জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে রাজ্যগুলোর প্রতি বিশেষ নির্দেশ দিয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। দু'বছর পর দেশে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ২২ হাজার ৪২৭-এ নেমে এসেছে। ইতিমধ্যেই ১৮২.২৩ কোটি ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে।
বিপর্যয় মোকাবিলা আইনটা কী?
বিপর্যয় রুখতে সঠিক ব্যবস্থাপনার জন্য পার্লামেন্ট ২০০৫ সালে এই বিপর্যয় মোকাবিলা আইনটি তৈরি করেছিল। এই আইনে বিপর্যয়ের সময় পরিকল্পনা তৈরি, তা কার্যকরী করা এবং কার্যকর হচ্ছে কি না, তা নিরীক্ষণ করার ক্ষমতা সরকারকে দেওয়া হয়েছে। বিপর্যয় ঠেকানো এবং কমানো এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার লক্ষ্যে এই আইন তৈরি হয়েছে। ভূমিকম্প, রাসায়নিক বিপর্যয়, খরা, হাসপাতালের নিরাপত্তা, বন্যার মতো বিভিন্ন বিপর্যয়ের কথা মাথায় রেখে এই আইন তৈরি হয়েছে। ২০২০ সালে এই আইনেই করোনা রুখতে একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার।
বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের কোন ধারায় করোনা নির্দেশিকা জারি হয়েছে?
বিপর্যয় মোকাবিলা আইন অনুযায়ী, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের প্রধান প্রধানমন্ত্রী। এর জাতীয় কমিটিতে আছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব এবং বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকরা। তাঁরা জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষকে সাহায্য করেন। এই আইনের ১০ নম্বর ধারায় জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির ক্ষমতা এবং ভূমিকার কথা বলা আছে। এই ধারাতেই জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা করোনা নিয়ে নির্দেশিকা জারি করেছিলেন। কমিটির পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব নির্দেশিকাটি জারি করেছিলেন।
করোনা রোখার ব্যাপারে শেষ গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকাটি কী?
গত ডিসেম্বরে ওমিক্রন ব্যাপকহারে ছড়িয়েছিল। সেই কথা মাথায় রেখে প্রমাণের ভিত্তিতে কনটেনমেন্ট জোন তৈরির নির্দেশ দিয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। পাশাপাশি, সামাজিক দূরত্ববিধি যাতে মানা হয়, সেই নির্দেশও দিয়েছিল কমিটি। সেই নির্দেশ যাতে অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হয়, তা নিশ্চিত করার কড়া নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল জেলাশাসকদের।
সর্বশেষ নির্দেশ কী? তার তাত্পর্যই বা কী?
বুধবার, ২৩ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এক নির্দেশিকা জারি করেছে। সেই নির্দেশিকায় ৩১ মার্চের পর আর করোনা নির্দেশিকা মানার দরকার নেই বলেই জানিয়েছে। যার অর্থ, ১ এপ্রিল থেকে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে চলেছে জীবন। এর অর্থ, শপিংমল এবং সিনেমা হলগুলোর পুরোদস্তুর চলতে আর বাধা থাকবে না। মেলা, সমাবেশ থেকে শিক্ষাকেন্দ্রে অফলাইন ক্লাসেও আর বাধা রইল না। তবে, ফের করোনার প্রাদুর্ভাবের বৃদ্ধি রুখতে জনস্বাস্থ্যের যে নির্দেশিকা যেমন মাস্ক পরা বা অন্যান্য, সেগুলো বহাল থাকবে।
রাজ্যগুলো কি নতুন নির্দেশিকা মানবে, না-করোনাবিধি বহাল রাখবে?
স্বাস্থ্য মন্ত্রক রাজ্যগুলোকে নির্দেশিকায় জানিয়েছে, নতুন করোনা সংক্রমণের ব্যাপারে নিয়মিত নজরদারি চালাতে। জেলাস্তরে এজন্য লাগাতার করোনা পরীক্ষা চলবে। সেই মতো স্থানীয়স্তরে করোনাবিধি চালু থাকবে কি না, তা ঠিক হবে। পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে যাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়, তার প্রস্তুতিও রাখতে বলা হয়েছে রাজ্যগুলোকে।
Read story in English