১৯৯৭ সালের ২৯ মার্চ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তৎকালীন চেয়ারপার্সন বিচারপতি এম এন ভেঙ্কটচালিয়া সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে একটি নোট দিয়ে বলেন, কেবলমাত্র দুটি পরিস্থিতিতে পুলিশ প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগ করতে পারে।
পুলিশের দাবি, ধর্ষণ ও হত্যা মামলার চার অভিযুক্ত তাদের উপর হামলা করার কারণে তাদের গুলি চালিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। সাইবারাবাদ পুলিশের কমিশনার ভিসি সজ্জনর সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে বলেছেন, "চার অভিযুক্ত পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মারা গিয়েছেন। পুলিশের উপর হামলা হলে পুলিশ কি দাঁড়িয়ে দেখবে?"
Advertisment
কোন পরিস্থিতিতে পুলিশ সন্দেহভাজনকে গুলি করে মারতে পারে?
১৯৯৭ সালের ২৯ মার্চ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তৎকালীন চেয়ারপার্সন বিচারপতি এম এন ভেঙ্কটচালিয়া সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে একটি নোট দিয়ে বলেন, কেবলমাত্র দুটি পরিস্থিতিতে পুলিশ প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগ করতে পারে।
বিচারপতি ভেঙ্কটচালাইয়া ১৯৯৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯৯৪ সালের ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের প্রধান বিচারপতি ছিলেন। নোটে তিনি লিখেছিলেন, "ভারতের ফৌজদারি আইন অনুসারে আত্মরক্ষার জন্য কাউকে হত্যা করা অপরাধ নয়।"
সাইবারাবাদ পুলিশের কমিশনারও পুলিশি অ্যাকশনের সপক্ষে এই যুক্তিই দিয়েছেন। সারা ভারতের অধিকাংশ এনকাউন্টার মামলাতেই এই লাইনেই কথা বলে পুলিশ।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সার্কুলারে যে দ্বিতীয় বিষয়টি রাখা হয়েছিল, তা হল, "ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৬ নং ধারানুযায়ী অন্য কোনও ব্যক্তিকে হত্যা বা জখম করার মত কারণ পুলিশ অফিসারের কাছে থাকতে হবে।"
ভেঙ্কটচালাইয়া লিখেছিলেন, "এই ধারার আওতায় কোনও ব্যক্তি যদি এমন অপরাধে অভিযুক্ত হয় যার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, সেক্ষেত্রে তাকে হেফাজতে নেবার জন্য পুলিশ এতটাই বলপ্রয়োগ করতে পারেয় যাতে অভিযুক্ত(দের) মৃত্যু হতে পারে।"
তিনি আরও লিখেছিলেন, "কোনও একটি বিশেষ মামলায় এনকাউন্টারে মৃত্যু ওই দুটি ব্যতিক্রমের মধ্যে যথার্থ ভাবে পড়ছে কিনা তা কেবলমাত্র যথাযথ তদন্তের মাধ্যমেই নিশ্চিত করে জানা যেতে পারে, অন্য কোনওভাবে নয়।"
১৯৭৩ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৬ নং ধারায় বলা হয়েছে:
"যদি কোনও ব্যক্তি গ্রেফতারিতে বাধা দেয় বা গ্রেফতারি এড়ানোর চেষ্টা করে, তাহলে ওই পুলিশ অফিসার বা দায়িত্বশীল ব্যক্তি উক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতারির সমস্ত রকম চেষ্টা করবে।"
এবং
"এই ধারানুসারে, অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি এমন কোনও অপরাধে যুক্ত না হয় যার শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ড, তাহলে অভিযুক্ত ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে এমন কোনও পদ্ধতি অবলম্বনের অধিকার পুলিস অফিসার বা সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল ব্যক্তির নেই।"