অপরাধের জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তার অনুপস্থিতিতে বিচার করা যেতে পারে এবং দোষী সাব্যস্ত করা যেতে পারে। সেটা এমনভাবে যেন আসামি আদালতে উপস্থিত। আর, প্রস্তাবিত ভারতীয় নাগরিক বিধি, ২০২৩ মেনে তার বিচার চলছে। ১৯৭৩ সালের ফৌজদারি মামলাবিধির এভাবেই বদল চায় মোদী সরকার। একজন অভিযুক্তের সম্পূর্ণভাবে বিচারে অংশ নেওয়ার এবং আত্মপক্ষ সমর্থন করার অধিকার যথাযথ প্রক্রিয়ার অংশ। যদিও বর্তমানে ফৌজদারি কার্যবিধিতে অভিযুক্তের অনুপস্থিতিতে সাক্ষ্য রেকর্ড করার বিধান রয়েছে। তার অনুপস্থিতিতে বিচারের অনুমতি নেই। কোনও আসামি পলাতক হলে, বিচার শুরুর আগে তাকে খুঁজে বের করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব, এমনটাই বর্তমান বিধি।
নতুন বিলে বিধান করা হয়েছে যে অভিযুক্ত যদি উপস্থিত না-থাকে, তাহলে যে তারিখে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে, তার ৯০ দিন পরে আদালত তার বিচার করতে পারে। লখনউয়ের ন্যাশনাল ল ইউনিভার্সিটির ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক কুমার আস্কন্দ পাণ্ডে বলেছেন, 'এটি অভিযুক্তদের ন্যায্য সুযোগ দেবে না।'
ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার ৩৫৬ ধারা বলছে, 'যদি কোনও ব্যক্তি বিচার এড়িয়ে পালিয়ে বেড়ান, তাকে তাৎক্ষণিক গ্রেফতারের কোনও সম্ভাবনা না-থাকে, আদালত তখন ন্যায়বিচারের স্বার্থে ধরে নেবে যে ওই ব্যক্তি আদালতে উপস্থিত আছেন। তিনি তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে সুষ্ঠু বিচারের আবেদন জানিয়েছেন। সেইমতো আদালত তাঁর বিচার করবে। তবে, অভিযোগ গঠনের তারিখ থেকে ৯০ দিন না-পেরিয়ে যাওয়া পর্যন্ত এই বিচার শুরু করা যাবে না।'
আরও পড়ুন- তিনটি নতুন বিল নিয়ে তুঙ্গে জল্পনা, এগুলো ফৌজদারি আইনের খোলনলচে বদলে দেবে?
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, অভিযুক্তের অনুপস্থিতিতে একটি বিচার কঠোর সন্ত্রাসবিরোধী আইন। ঠিক যেমন বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইন (ইউএপিএ), একেবারে তেমনই। আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের ক্ষেত্রে একটি বিকল্প ফৌজদারি আইন কাঠামো প্রয়োজন। এই ধরনের ক্ষেত্রে আইনে প্রমাণের দায় রাষ্ট্রের ওপর থাকে না। বরং, অভিযুক্তকেই প্রমাণ করতে হয় যে সে দোষী নয়। আর, এই কারণে ইউপিএ আইনকে জনবিরোধী বলে অনেক আইন বিশেষজ্ঞরই মত। তাঁর এই আইন অপপ্রয়োগের অভিযোগ বারবার তুলেছেন।