ভারত, চিন, জাপানের থেকে শ্রীলঙ্কার ঋণ পুনরুদ্ধারের আশ্বাস পেয়ে অবশেষে দ্বীপরাষ্ট্রকে ঋণ দেওয়ার চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করল আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভাণ্ডার কর্তৃপক্ষ। ছয় মাস আগে শ্রীলঙ্কা এই ঋণ পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছিল। কিন্তু, দ্বীপরাষ্ট্রের ২৯০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ ঝুলিয়ে রেখেছিল আইএমএফ। আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভাণ্ডার ঋণ দিতে রাজি হওয়ায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিংহে।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) সোশ্যাল মিডিয়ায় বিক্রমসিংহে লিখেছেন, 'শ্রীলঙ্কার স্বাধীনতার ৭৫ বছরের মধ্যে এত বড় আর্থিক সংকট আসেনি। আইএমএফের কার্যনির্বাহী পরিষদ আমাদের কর্মসূচিকে অনুমোদন করেছেন। এর ফলে শ্রীলঙ্কা আইএমএফ এবং আইএফআইএসের থেকে ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার পাবে। আমি আইএমএফ এবং আমাদের আন্তর্জাতিক সহযোগীদের সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানাই।'
এমনিতে শ্রীলঙ্কার যা আর্থিক পরিস্থিতি, তাতে আইএমএফের প্যাকেজ যথেষ্ট নয়। তবে, শ্রীলঙ্কা আইএমএফের অর্থ পাওয়ায় তারা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ঋণদাতাদের ৩ কোটি ৩০ লক্ষ মার্কিন ডলার দেনা শোধ করতে পারবে। এর ফলে ওই সব দেশগুলোর কাছে শ্রীলঙ্কার বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়বে। টুইটে এমনটাই উল্লেখ করেছেন দ্বীপরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, আইএমএফ তার সবুজ সংকেত এমন একটা সময়ে দিল, যখন শ্রীলঙ্কাবাসী বিক্রমসিংহের প্রতি বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন। বিশেষ করে বিরোধী দল, শ্রীলঙ্কার সুশীল সমাজ আর শ্রমিক সংগঠনগুলো বিক্রমসিংহকে তুলোধনা করতে শুরু করেছেন। এই বিরোধী দল, সুশীল সমাজ আর শ্রমিক সংগঠনগুলোই গতবছর 'আরাগালায়া' আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিল। যে আন্দোলনের জেরে শ্রীলঙ্কায় রাজাপক্ষেদের জমানার অবসান ঘটে। আর, রনিল বিক্রমসিংহে দ্বীপরাষ্ট্রে ক্ষমতার প্রাণকেন্দ্রে উঠে আসেন।
আরও পড়ুন- একজনকে ধরতে পারে না, ৮০ হাজার পুলিশ কী করছে? রাজ্যকে প্রশ্ন আদালতের
বর্তমানে রনিল বিক্রমসিংহের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বিক্ষোভ দমনের জন্য কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছেন। বহু বিক্ষোভকারীকে নির্বিচারে গ্রেফতার করিয়েছেন। তহবিলের অভাবের কারণ দেখিয়ে বিভিন্ন স্থানীয় সংস্থার নির্বাচনও বন্ধ করে দিয়েছেন। যদিও বিরোধী দলগুলোর ধারণা, বিক্রমসিংহে ইচ্ছে করেই ওই সব সংস্থায় নির্বাচন করাতে দেননি। কারণ, নির্বাচন হলে সেখানে রাজাপক্ষে এবং তাঁদের দল শ্রীলঙ্কা পোদুজানা পেরামুনা ক্ষমতাচ্যুত হতে পারত।