দেশে এখনও করোনা প্রকোপ অব্যাহত। শিল্প, ব্যবসা, কৃষি-সহ একাধিক কর্মক্ষেত্র মুখ থুবড়ে পড়েছে তিন মাসের লকডাউনে। চাকরির ক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে ভাঁটা। তবে দেশের যুবসম্প্রদায়ের মনোবল বৃদ্ধি করতে 'আত্মনির্ভর ভারত' তৈরিতে উৎসাহ জুগিয়েছেন মোদী। এ বছরে কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া ইন্ডাস্ট্রি (সিআইআই)-র বার্ষিক বৈঠক থেকে মোদী জানান ভারতকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সরকারের সঙ্গে অংশীদার হওয়ার পরিকল্পনা থাকা খুব প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রীর এই ভাবনাকে স্বাগত জানিয়েছেন সিআইআই-এর প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট নৌশদ ফোর্বস। তিনি দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে লিখেছেন যে, "সরকার এবং শিল্প যদি একই লক্ষ্য এবং পারস্পরিক বিশ্বাসের মনোভাব নিয়ে কাজ করে তবে আমরা অনেক কিছু অর্জন করতে পারব।" তিনি বিশ্বাস করেন যে কর্মসংস্থান তেমনই একটি ক্ষেত্র। লেখক বলেন, “ কর্মক্ষেত্রকে উজ্জীবিত করতে আমাদের তিনটি সমস্যার সমাধান করতে হবে। শ্রমিক নিয়ন্ত্রণ, শহরে পরিযায়ী শ্রমিকদের জীবনযাত্রার পরিস্থিতি এবং আমাদের গ্রামীণ অর্থনীতির যে শক্তি রয়েছে সেটিকে”।
আরও পড়ুন, সরকারি চাকরিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া কীভাবে সহজ করবে কেন্দ্রের এই নয়া নীতি? জেনে নিন খুঁটিনাটি
নৌশদ ফোর্বস মনে করেন শ্রমিকরাই কর্মক্ষেত্রের ভিত। তাই তাঁদের সুরক্ষার দিকটি সবার আগে লক্ষ্য রাখা উচিত। তিনি বলেন, "শ্রমিকদের রক্ষা করতে আমাদের দেশে শ্রম আইন রয়েছে। কিন্তু সেখানে মোট কর্মসংস্থানের ১৫ শতাংশ অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। বাকি ৮৫ শতাংশ শ্রমিক ঠিকাদার ভিত্তিক নিয়োগ করা হয়। এদের সুরক্ষার আওতায় রাখা হয় না। এর ফলে কর্মসংস্থানের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। এটা ঠিক রাখা খুব দরকার।"
দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হল কর্মীদের জীবনযাপন। ভারতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কর্মীরা মূল শহরের বাইরে বাস করেন। গ্রামাঞ্চল এবং শহরাঞ্চল থেকে শহরে আসেন কাজ করতে। সিআইআই-এর প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের কথায়, যদি কাজের জায়গায় উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে হয় তবে উপযুক্ত কর্মীকে শহরে নিয়ে আসতে হবে এবং অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে সেই সংস্থান যেন সাশ্রয়ী মূল্যের, বসবাসযোগ্য আবাসন হয়।
আরও পড়ুন, কৃষির উন্নয়নে ১ লক্ষ কোটির তহবিল দিয়ে কতটা উন্নতি সম্ভব?
তৃতীয় বিষয় হল গ্রামে কর্মশক্তির আরও বিকাশ ঘটানো। যাকে অর্থনীতির ভাষায় 'রিভার্স মাইগ্রেসন' ও বলা হয়ে থাকে। অর্থাৎ পরিযায়ীরা তাঁদের নিজ গ্রামে বসেই অর্থ উপার্জনে সক্ষম হবেন। সেক্ষেত্রে স্বল্প উন্নত জেলাগুলিতে যদি সংস্থাগুলি বিনিয়োগ করে সেক্ষেত্রে চাকরির ক্ষেত্র উন্নয়নের পাশাপাশি সার্বিক উন্নয়নও করা সম্ভব। লেখক এও জানান, বর্তমান সরকারের লক্ষ্যই রয়েছে কৃষকের আয় দ্বিগুণ করা। আত্মনির্ভর ভারত তৈরির মাধ্যমেই সেই চেষ্টাকে বাস্তবায়িত করতে চাইছে মোদী সরকার।
Read the story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন